এফবিসিসিআই’র সঙ্গে বিশ্ব ব্যাংক মিশনের সভা
Published: 24th, June 2025 GMT
দেশের শিল্প ও বাণিজ্যের টেকসই উন্নয়ন, প্রতিযোগিতাসক্ষমতা বৃদ্ধি এবং বাণিজ্য প্রক্রিয়া সহজীকরণের জন্য ব্যবসা-বাণিজ্য সংক্রান্ত সব সেবা একটি মাত্র কর্তৃপক্ষের অধীনে নিয়ে আসার পরামর্শ দিয়েছেন ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা।
মঙ্গলবার দুপুরে গুলশান কার্যালয়ে এফবিসিসিআই এবং বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন অ্যাগ্রিমেন্ট (টিএফএ) ট্র্যাকিং টুলস মিশনের মধ্যে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অংশ নিয়ে দেশে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিতকরণে বেশ কিছু পরামর্শ তুলে ধরেন ব্যবসায়ীরা।
সভায় সভাপতিত্ব করেন এফবিসিসিআই-এর প্রশাসক মো.
উল্লেখ্য, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন অ্যাগ্রিমেন্ট (টিএফএ) ট্র্যাকিং টুলস হলো এমন একটি ব্যবস্থা যা সদস্য দেশগুলোকে টিএফএ-এর অধীনে তাদের বাণিজ্য প্রক্রিয়া সহজীকরণ এবং লক্ষ্যসমূহ বাস্তবায়নে সহায়তা করে। দেশগুলো যাতে নিজ নিজ বাণিজ্য প্রক্রিয়া সহজ করতে এবং টিএফএ-এর সুবিধাগুলো কাজে লাগাতে পারে, সে বিষয়ে বিশ্ব ব্যাংক তাদের সাহায্য করে।
দেশে ব্যবসা পরিচালনার ব্যয় হ্রাস এবং উৎপাদনশীলতা ও প্রতিযোগিতাসক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে কারিগরি ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধি, দক্ষতা উন্নয়ন, অবকাঠামো, লজিস্টিকস এবং ল্যাব সক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেন ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ এবং তাঁদের প্রতিনিধিরা।
এ সময়, বাণিজ্য সহজীকরণ বিষয়ে ব্যবসায়ীদের বক্তব্য গুরুত্বের সঙ্গে শোনেন বিশ্ব ব্যাংক মিশনের সদস্যরা। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সদস্য দেশগুলোতে ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন অ্যাগ্রিমেন্ট (টিএফএ) বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বেসরকারি খাতের মতামতকে বিবেচনায় নেওয়ার আহ্বান জানান এফবিসিসিআই-এর প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই-এর সাবেক পরিচালক মো. আব্দুল হক, এফবিসিসিআই-এর মহাসচিব মো. আলমগীর, এফবিসিসিআই-এর ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স উইং-এর প্রধান মো. জাফর ইকবাল এনডিসি, বাংলাদেশ প্লাস্টিক গুডস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট কে. এম. ইকবাল হোসেন, বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার্স অ্যাসোসিয়েশনের জয়েন্ট এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি ফারুক আহম্মেদ, বারভিডার জয়েন্ট সেক্রেটারি জেনারেল সৈয়দ জগলুল হোসেন, মেঘনা গ্রুপের এফএফসিজি বিভাগের সিনিয়র ম্যানেজার (এক্সপোর্ট) মিথুন কুমার গায়েন প্রমুখ।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কোটিপতি হলেও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করেন তিনি
পর্যাপ্ত অর্থ সঞ্চয় করতে পারলেই আমাদের অনেকে কায়িক পরিশ্রম ছেড়ে দেন। আরাম-আয়েশে জীবন কাটান। কিন্তু সবাই তা করেন না। এমন একজন জাপানের কোইচি মাতসুবারা। ৫৬ বছর বয়সী এই জাপানি নাগরিকের বার্ষিক আয় প্রায় ৩ কোটি ইয়েন (প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা) হওয়া সত্ত্বেও তিনি এখনো নিয়মিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করেন।
মাতসুবারা সপ্তাহে তিন দিন, প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে কাজ করেন। তিনি সরকারি পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। এ কাজের অংশ হিসেবে তাঁকে ছোটখাটো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করতে হয়।
এ কাজ থেকে মাতসুবারা মাসে ১ লাখ ইয়েন (প্রায় ৮২ হাজার ৬৪ টাকা) আয় করেন, যা টোকিওর গড় বেতনের তুলনায় অনেক কম। তারপরও তিনি এ কাজ করেন। কারণ, তিনি এটাকে শারীরিক সক্রিয়তা ও মানসিক প্রশান্তির উপায় হিসেবে দেখেন।
মাতসুবারা ছোটবেলা থেকেই সঞ্চয়ী ছিলেন। মাধ্যমিকের পর তিনি একটি কারখানায় মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন (প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা) বেতনে কাজ শুরু করেন। খরচ বাঁচিয়ে কয়েক বছরে প্রায় ৩০ লাখ ইয়েন (২৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা) সঞ্চয় করে তিনি প্রথম স্টুডিও ফ্ল্যাট কিনেছিলেন।
পরে বাড়ি কেনার ঋণ আগেভাগে পরিশোধ করে ধীরে ধীরে আরও ফ্ল্যাট কেনেন এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেন মাতসুবারা। এখন টোকিও ও এর শহরতলিতে তাঁর সাতটি ফ্ল্যাট রয়েছে, যার সবই ভাড়া দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেছেন।
ধনবান হলেও মাতসুবারা সাদাসিধে জীবন যাপন করেন। এখনো তিনি সস্তা ফ্ল্যাটে থাকেন, নিজের খাবার নিজে বানান, নতুন জামাকাপড় কেনেন না, সাধারণ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন এবং প্রধানত সাইকেলে চলাচল করেন। তাঁর জীবনদর্শন—‘প্রতিদিন কিছু না কিছু করার আশা করি, সুস্থ থাকতে চাই এবং নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে চাই।’
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে মাতসুবারাকে ‘অদৃশ্য কোটিপতি’ বলে উল্লেখ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর গল্প ছড়িয়ে পড়েছে। জাপানে ধনীদের এমন সাধারণ জীবনধারা অস্বাভাবিক নয়। দেশটিতে সাদাসিধে জীবনযাপন অনেকের মধ্যে দেখা যায়।