কুষ্টিয়ার খোকসায় প্রতিবেশীর মেয়েকে শাসন করাকে কেন্দ্র করে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় প্রতিপক্ষের হামলা থেকে ছেলেকে রক্ষা করতে গিয়ে গুরুতর আহত হন মহম্মদ আলী (৭৫) নামে এক ব্যক্তি। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ মঙ্গলবার তার মৃত্যু হয়।  

খোকসা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহত মহম্মদ আলীর মৃত্যুর সংবাদ নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মঙ্গলবার ভোরে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মহম্মদ আলী মারা যান। নিহতের বাবার নাম আকমত আলী প্রামাণিক। 

নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সোমবার দুপুরে উপজেলার সাতপাখিয়া গ্রামের মহম্মদ আলীর ছেলে তারিকুল ইসলাম তারিক প্রতিবেশীর এক মেয়েকে রাস্তায় শাসন করেন। এ ঘটনাটি মেয়ের পরিবার জানার পর সন্ধ্যায় তারিকুলের ওপর হামলা চালায়। তখন মহম্মদ আলী ছেলেকে রক্ষা করতে এগিয়ে গেলে প্রতিপক্ষ তার ওপর হামলা চালায়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা আহত বাবা-ছেলেকে উদ্ধার করে প্রথমে খোকসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। রাতে মহম্মদ আলীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। মঙ্গলবার ভোর ৪টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। 

এ দিকে প্রতিবেশী সোনাই শেখ পরিবারসহ পলাতক। গোপগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ ও থানা পুলিশের একটি দলকে সোনাই শেখের বাড়ি পাহারা দিতে দেখা যায়। 

প্রতিপক্ষের কাউকে পাওয়া না যাওয়ায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে স্থানীয় ইউপি সদস্যের স্ত্রী ফেরদৌসি খাতুন বলেন, ‘সোনাই সেখের মেয়েকে খারাপ কথা বলায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। সোমবার বিকেলে সোনাই সেখ ও তারা লোকজন প্রথমে মহম্মদ আলীর বাড়িতে হামলা করে। পরে দ্বিতীয় দফায় তারা হামলা চালায়।’ 

তারিকুল ইসলাম তারিক বলেন, ‘সোনাই শেখের স্ত্রীর নির্দেশেই তার মেয়েকে শাসন করেছিলাম। এ নিয়ে বিকেলে ও রাতে দুই দফায় আমার বাড়িতে হামলা চালানো হয়। বাবা আমাকে রক্ষায় এগিয়ে এলে তিনিও হামলার শিকার হন। বাবার হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করব।’ 

থানার ওসি বলেন, এলাকার পরিস্থিতি শান্ত আছে। নিহতের পরিবার আসছে, রাতেই মামলা হবে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টাও চলছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: হত য পর ব র অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

নরসিংদীতে ডেঙ্গু পরিস্থিতি উদ্বেগজনক

নরসিংদীতে ডেঙ্গুর প্রকোপ ‍উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। ফলে হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ বেড়েছে, দেখা দিচ্ছে শয্যা সংকট। পরিস্থিতি মোকাবিলায় দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। তার মশা নিধনে ড্রেনগুলো দ্রুত পরিষ্কারের জন্য পৌরসভার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত সেপ্টেম্বর মাসেই প্রায় ১০০ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। অক্টোবর মাসের প্রথম তিনদিনে ভর্তি হয়েছেন ১৭ জন। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে প্রতিদিনই জ্বর, শরীর ব্যথা ও অন্যান্য উপসর্গ নিয়ে আসছেন রোগীরা। যাদের অবস্থা গুরুতর, তাদেরকেই ভর্তি করা হচ্ছে।

আরো পড়ুন:

নার্সদের অমর্যাদাকর অবস্থানে রাখা হয়েছে: ফরহাদ মজহার

বাঁশবাগানে পাওয়া সেই নবজাতক মারা গেছে

রোগীর স্বজন নাসরিন আক্তার বলেন, “আমার ভাই পাঁচদিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি। প্রথমে বুঝতেই পারিনি তার ডেঙ্গু হয়েছে। এখন প্লাটিলেট কমে গেছে। চিকিৎসকেরা বলছেন, অবস্থা গুরুতর। খুব দুশ্চিন্তায় আছি। হাসপাতালের চিকিৎসকরা যথাসাধ্য করছেন, শয্যার সংকট আর ওষুধের জোগান সবসময় মেলে না।”

আরেক রোগীর বাবা মো. সাহেব আলী বলেন, “আমার ছোট ছেলের বয়স ১০ বছর। জ্বর নিয়ে ভর্তি করাতে হয়েছিল তাকে। ওর ডেঙ্গু ধরা পড়েছে। হাসপাতালে জায়গা পাওয়া কঠিন হয়ে গেছে। আমরা গরিব মানুষ, ছেলেকে প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর সমর্থ্য নেই।”

হাসপাতালের সামনে অপেক্ষমাণ এক রোগীর চাচা মাহবুব হোসেন বলেন, “হাসপাতালে জায়গা হচ্ছে না। ডেঙ্গু যে এত ভয়াবহ হবে বুঝতে পারিনি। প্রশাসন যদি আগে ব্যবস্থা নিত, তাহলে এমন অবস্থা হতো না।”

স্থানীয় কলেজছাত্র জুবায়ের হোসেন বলেন, “জুলাইয়ের শেষ দিক থেকেই ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে, অথচ পৌরসভা থেকে মশা নিধনের কার্যকর কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। ড্রেনগুলো পরিষ্কার করা হয়নি অনেকদিন। আমরা খুব চিন্তায় আছি। শুধু ওষুধ আর হাসপাতাল দিয়ে এই রোগ ঠেকানো যাবে না। প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।”

বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) নরসিংদী জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মিজানুর রহমান বলেন, “বিভিন্ন কারণে এডিস মশার প্রজনন বাড়ছে। প্রতিদিন প্রচুর রোগী আসছেন জ্বর নিয়ে। অনেকেরই অবস্থা গুরুতর। সীমিত সামর্থ্যে আমরা চেষ্টা করছি সাধ্যমতো সেবা দিতে। রোগীর চাপ ক্রমেই বাড়ছে।”

ঢাকা/হৃদয়/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ