ভারতের দক্ষিণী সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী রাশমিকা মান্দানা। অভিনয় ও শরীরি সৌন্দর্যে ভক্তদের মুগ্ধ করেছেন। সার্চ ইঞ্জিন গুগলে ‘ভারতের জাতীয় ক্রাশ ২০২০’ নির্বাচিত হয়েছিলেন এই অভিনেত্রী।

ভারতের দক্ষিণী সিনেমার দুই মেগাস্টার চিরঞ্জীবী ও নাগার্জুনা আক্কিনেনি। বরেণ্য এই দুই তারকা জানালেন— তাদের ক্রাশ রাশমিকা মান্দানা।

রাশমিকা অভিনীত ‘কুবেরা’ সিনেমা কয়েক দিন আগে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে। এতে তার সহশিল্পী হিসেবে রয়েছেন ধানুশ ও নাগার্জুনা আক্কিনেনি। মুক্তির পর বক্স অফিসে দারুণ সাড়া ফেলেছে। এ উপলক্ষে সাকসেস পার্টির আয়োজন করা হয়। সেখানে এমন মন্তব্য করেন নাগার্জুনা-চিরঞ্জীবী।
 
রাশমিকার অভিনয়ের প্রশংসা করে ৬৫ বছর বয়সি নাগার্জুন আক্কিনেনি বলেন, “রাশমিকাকে দেখে মনে হচ্ছিল, আমি শ্রীদেবীকে দেখছি। রাশমিকা কেবল ভারতের জাতীয় ক্রাশ নয়, সে আমারও ক্রাশ।” এ কথা শুনে উল্লাস করনে উপস্থিত অতিথিরা। এ সময় ২৯ বছরের রাশমিকাকে লাজুকভাবে হাসতে দেখা যায়। 

অনুভূতি প্রকাশ করে ৬৯ বছরের মেগাস্টার চিরঞ্জীবী বলেন, “নাগ, আমি যা বলতে চেয়েছিলাম তা তুমি আগেই বলেছ! রাশমিকা আমারও ক্রাশ।” চিরঞ্জীবীর কথা শুনে উপস্থিত সকলে হাসতে থাকেন। বরেণ্য দুই তারকার এমন মন্তব্যে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন রাশমিকা মান্দানা।

‘কুবেরা’ সিনেমার প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন— নাগার্জুনা আক্কিনেনি, ধানুশ, রাশমিকা মান্দানা। সামাজিক গল্পের সিনেমাটিতে আরো অভিনয় করেছেন— জিম, ভাগ্যরাজ, সুনয়না, জয়প্রকাশ প্রমুখ। সিনেমাটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৮০-১২০ কোটি রুপি।

মডেলিংয়ের মাধ্যমে ক্যারিয়ার শুরু করেন রাশমিকা মান্দানা। ২০১২ সালে ‘ক্লিন অ্যান্ড ক্লিয়ার ফ্রেস অব ইন্ডিয়া’ খেতাব জেতেন তিনি। ২০১৬ সালে কন্নড় ভাষার ‘কিরিক পার্টি’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে পা রাখেন। অভিষেক এ চলচ্চিত্রের জন্য সাউথ ইন্ডিয়ান ইন্টারন্যাশনাল মুভি অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন এই অভিনেত্রী।

এরপর ‘চালো’ সিনেমার মাধ্যমে তেলেগু সিনেমায় অভিষেক হয় রাশমিকার। অল্প সময়ের মধ্যে দর্শক হৃদয়ে জায়গা করে নেন তিনি। ‘গীতা গোবিন্দম’, ‘ডিয়ার কমরেড’, ‘সারিলেরু নীকেবারু’, ‘পুষ্পা’, ‘অ্যানিমেল’-এর মতো জনপ্রিয় সিনেমা উপহার দিয়েছেন এই অভিনেত্রী।  

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর

বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!

কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।

এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)

সম্পর্কিত নিবন্ধ