দ্রুত চাকসু নির্বাচনের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
Published: 25th, June 2025 GMT
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) দ্রুত নির্বাচনের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (২৫ জুন) দুপুর ১টায় ‘চাকসু আদায় আন্দোলন’ এর ব্যানারে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা ‘জেগেছে রে জেগেছে, চবিয়ানরা জেগেছে’, ‘উই ওয়ান্ট চাকসু, চাকসু চাকসু’, ‘চাকসু আামার অধিকার, রুখে দেওয়ার সাধ্য কার’, ‘ম্যাঙ্গোবার না চাকসু, চাকসু চাকসু’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
আরো পড়ুন:
দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডে এইচএসসি পরীক্ষার্থী ১০ হাজার কমেছে
শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে উদ্যোক্তা সাজ্জাদের সফলতা
বিক্ষোভ সমাবেশে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী তাহসান হাবিব বলেন, ‘১৯৯০ সালের পর দীর্ঘ ৩৬ বছর পেরিয়ে গেলেও চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। এটি শুধু প্রশাসনের দৃষ্টান্তমূলক ব্যর্থতা নয়, বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ২৮ হাজার শিক্ষার্থীর রাজনৈতিক অধিকার এবং গণতান্ত্রিক চর্চার পরিপন্থী।”
তিনি বলেন, “প্রশাসনকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, বিপ্লব পরবর্তী সময়ে দীর্ঘ আন্দোলন ও সংগ্রামের মাধ্যমেই আপনাদের দায়িত্বের আসনে বসানো হয়েছে। এরপরও কেনো আমাদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের জন্য বারবার রাজপথে নামতে হয়? এবার দ্রুত চাকসু নির্বাচন দিন এবং বৈধ ছাত্র প্রতিনিধি নির্ধারণের ব্যবস্থা করুন।”
ক্রিমিনোলোজি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আবির বিন জাবেদ বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সক্রিয় ছাত্র সংগঠনগুলো প্রশাসনের কাছে চাকসু নির্বাচনের দাবিতে লিখিত আবেদন দিয়েছে এবং আন্দোলন করেছে। যদি এরপরেও চাকসু নির্বাচন না হয়, তাহলে আমরা মনে করব, কোনো ছাত্র রাজনীতির জন্য নয়; প্রশাসন নিজের একক ক্ষমতা উপভোগ করার জন্যই চাকসু নির্বাচন দিচ্ছে না।”
তিনি বলেন, “আমরা এই সমাবেশ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে স্পষ্ট বার্তা দিতে চাই, আপনারা অতি দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করুন। একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চাকসু নির্বাচন নিশ্চিত করুন।”
ঢাকা/মিজান/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পটুয়াখালীতে আদালতের এজলাসে আইনজীবীদের মধ্যে হাতাহাতি, আসামিদের মারধর
পটুয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এজলাসে বিচারিক কার্যক্রম চলাকালে আইনজীবীদের দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় আসামিদেরও মারধর করা হয়। আজ বুধবার দুপুরে আদালতের এজলাসে হওয়া ঘটনা আদালত চত্বরে ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজনা তৈরি হয়।
এ ঘটনার প্রতিবাদে আদালত চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের একটি অংশ। এ ছাড়া ঘটনার পর আইনজীবী সমিতি জরুরি সভা ডেকে কয়েকজন আইনজীবীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পেশকার মো. আনিসুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, আজ এজলাসের ভেতরে শুধু আইনজীবী ও আসামিদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডার ঘটনা ঘটেছে। এরপর যা হয়েছে, তা এজলাসের বাইরে।
জেলা যুবদলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক ও আসামিপক্ষের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল নোমান জানান, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলামসহ বিএনপির ২১ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে শাহীন নামের এক ব্যক্তি একটি মামলা করেছেন। আজ দুপুরে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটির জামিন শুনানি চলছিল। এ সময় বিচারক বাদী ও আসামিপক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য শুনে আসামিদের জামিন মঞ্জুর করেন। তাঁর ভাষ্যমতে, জামিন মঞ্জুর হওয়ার পর বাদীপক্ষের আইনজীবী ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শরীফ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন এজলাসের ভেতরে আইনজীবী শাহিন সেরনিয়াবাতকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। প্রতিবাদ করলে তাঁকেও মারধর করা হয়। একপর্যায়ে শরীফ সালাহউদ্দিন ও তাঁর ঘনিষ্ঠ আইনজীবীরা জামিন পাওয়া আসামিদের মারধর করেন।
মামলার আসামি স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আমিনুল ইসলাম বলেন, একটি রাজনৈতিক মামলায় তাঁকেসহ কলাপাড়া উপজেলার ২১ জন নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়। ওই মামলায় হাজিরা দিতে তাঁরা আজ আদালতে আসেন। বিচারক জামিন মঞ্জুর করেন। এতে বাদীপক্ষের আইনজীবী শরীফ মোহাম্মদ সালাহউদ্দিনসহ তাঁর ঘনিষ্ঠ আইনজীবীরা ক্ষুব্ধ হয়ে এজলাসের ভেতর বাগ্বিতণ্ডায় লিপ্ত হয়ে তাঁদের মারধর করেন। পরে আদালতের করিডরে অবস্থানকালে তাঁরা তাঁদের (আসামি) অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শরীফ মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, এজলাসে একটি মামলার শুনানি চলছিল। শুনানিতে আসামিপক্ষের আইনজীবী হিসেবে আবদুল্লাহ আল নোমানসহ কয়েকজন আইনজীবী অংশ নেন এবং বাদীপক্ষে তিনিসহ কয়েকজন অংশ নেন। বিচারক শুনানি শেষে আসামিদের জামিন মঞ্জুর করেন। এতে বাদী ও আসামিপক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। তিনি আরও বলেন, আইনজীবী আবদুল্লাহ আল নোমান মামলার বাদী শাহিন মৃধাকে আওয়ামী লীগ তকমা দিয়ে আদালত চত্বরে স্লোগান দিয়ে বহিরাগত ব্যক্তিদের ডেকে উত্তেজনা ছড়ান। এরপর তাঁর লোকজন আইনজীবী সমিতির প্রধান ফটকে গিয়ে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন, যা জেলা আইনজীবী সমিতির সম্মানহানির শামিল। এ জন্য জেলা আইনজীবী সমিতি বিকেলে জরুরি সভা ডেকে আইনজীবী নোমানসহ জড়িত ব্যক্তিদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
পটুয়াখালী আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. কামাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, আজ আদালতের বিচার কার্যক্রম চলাকালে আইনজীবীদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা শুনেছেন। পরে বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে তিনি পুলিশ সুপারকে জানিয়েছেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) মো. সাজেদুল ইসলাম বলেন, দুপুরে আদালতে আইনজীবীদের মধ্যে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার তথ্য পেয়েছেন। তবে এ বিষয়ে কোনো পক্ষ পুলিশের কাছে কোনো অভিযোগ করেনি।