বান্দরবানে ৬ লাখ টাকা ও চাঁদার রসিদসহ ছয়জন গ্রেপ্তার
Published: 25th, June 2025 GMT
বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে নগদ ৬ লাখ টাকা ও চাঁদা তোলার রসিদ বইসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে সেনাবাহিনী ও পুলিশ। পুলিশ বলছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-গণতান্ত্রিক দলের সদস্য।
পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার রাতে জেলা শহরের নীলাচল, ইসলামপুর, উজানীপাড়া ও বালাঘাটা এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ৬ লাখ ৩৩ হাজার ৪৮৮ টাকা, চাঁদা তোলার ২০টি রসিদ বই, একটি ছুরি ও কিছু সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। টাকার উৎস সম্পর্কে সন্তোষজনক জবাব দিতে না পারায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ বুধবার তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলার তৈচাং চাকমার ছেলে প্রদীপ চাকমা (৩৯), দীঘিনালার ভারত চন্দ্রের ছেলে রিপন চাকমা (৪৪), বড় মেরুং এলাকার ধনঞ্জয় চাকমার ছেলে অনিয়ন চাকমা (৩১), রাঙামাটির বিলাইছড়ির সীতারাম ত্রিপুরার ছেলে বীরকুমার ত্রিপুরা (১৯), বান্দরবান শহরের বালাঘাটা আমবাগান এলাকার মংশৈ মারমার ছেলে ওয়াইসে মারমা (২৮) এবং টাইগারপাড়া এলাকার মৃত ধল কুমার তঞ্চঙ্গ্যার ছেলে সুখেন তঞ্চঙ্গ্যা (২৫)।
বান্দরবান সদর থানায় করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা ইউপিডিএফ-গণতান্ত্রিক পরিচয়ে জেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে যানবাহন ও ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রকাশ্যে চাঁদা তুলতেন।
আরও পড়ুনবান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে স্থলমাইন বিস্ফোরণে পা উড়ে গেছে কিশোরের২২ জুন ২০২৫এ বিষয়ে ইউপিডিএফ-গণতান্ত্রিক দলের বান্দরবান জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক উবামং মারমা প্রথম আলোকে বলেন, ‘গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা বাইরে থেকে এসেছেন। তাঁরা দলের নাম ব্যবহার করে চাঁদা তুলতেন বলে শুনেছি। তবে জেলা কমিটির কেউ তাঁদের চেনেন না।’ তিনি জানান, জেলা কমিটির সভাপতি বর্তমানে খাগড়াছড়িতে অবস্থান করছেন এবং জেলা কমিটির কার্যক্রম আপাতত স্থগিত রয়েছে।
বান্দরবান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ পারভেজ বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা ইউপিডিএফ-গণতান্ত্রিক দলের সদস্য হিসেবে তাঁদের সংশ্লিষ্টতা স্বীকার করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা এই ধরনের কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গণত ন ত র ক ব ন দরব ন কম ট র
এছাড়াও পড়ুন:
এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর
বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!
কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।
চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।
এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)