বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে নগদ ৬ লাখ টাকা ও চাঁদা তোলার রসিদ বইসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে সেনাবাহিনী ও পুলিশ। পুলিশ বলছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-গণতান্ত্রিক দলের সদস্য।

পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার রাতে জেলা শহরের নীলাচল, ইসলামপুর, উজানীপাড়া ও বালাঘাটা এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ৬ লাখ ৩৩ হাজার ৪৮৮ টাকা, চাঁদা তোলার ২০টি রসিদ বই, একটি ছুরি ও কিছু সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। টাকার উৎস সম্পর্কে সন্তোষজনক জবাব দিতে না পারায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

আজ বুধবার তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলার তৈচাং চাকমার ছেলে প্রদীপ চাকমা (৩৯), দীঘিনালার ভারত চন্দ্রের ছেলে রিপন চাকমা (৪৪), বড় মেরুং এলাকার ধনঞ্জয় চাকমার ছেলে অনিয়ন চাকমা (৩১), রাঙামাটির বিলাইছড়ির সীতারাম ত্রিপুরার ছেলে বীরকুমার ত্রিপুরা (১৯), বান্দরবান শহরের বালাঘাটা আমবাগান এলাকার মংশৈ মারমার ছেলে ওয়াইসে মারমা (২৮) এবং টাইগারপাড়া এলাকার মৃত ধল কুমার তঞ্চঙ্গ্যার ছেলে সুখেন তঞ্চঙ্গ্যা (২৫)।

বান্দরবান সদর থানায় করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা ইউপিডিএফ-গণতান্ত্রিক পরিচয়ে জেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে যানবাহন ও ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রকাশ্যে চাঁদা তুলতেন।

আরও পড়ুনবান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে স্থলমাইন বিস্ফোরণে পা উড়ে গেছে কিশোরের২২ জুন ২০২৫

এ বিষয়ে ইউপিডিএফ-গণতান্ত্রিক দলের বান্দরবান জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক উবামং মারমা প্রথম আলোকে বলেন, ‘গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা বাইরে থেকে এসেছেন। তাঁরা দলের নাম ব্যবহার করে চাঁদা তুলতেন বলে শুনেছি। তবে জেলা কমিটির কেউ তাঁদের চেনেন না।’ তিনি জানান, জেলা কমিটির সভাপতি বর্তমানে খাগড়াছড়িতে অবস্থান করছেন এবং জেলা কমিটির কার্যক্রম আপাতত স্থগিত রয়েছে।

বান্দরবান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ পারভেজ বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা ইউপিডিএফ-গণতান্ত্রিক দলের সদস্য হিসেবে তাঁদের সংশ্লিষ্টতা স্বীকার করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা এই ধরনের কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গণত ন ত র ক ব ন দরব ন কম ট র

এছাড়াও পড়ুন:

জুম্ম ছাত্র-জনতার প্রতিনিধিত্ব করা ছয়জনই ইউপিডিএফের: পার্বত্য উপদেষ্টা

খাগড়াছড়িতে অবরোধের ডাক দেওয়া সংগঠন ‘জুম্ম ছাত্র-জনতা’-এর প্রতিনিধিত্ব করা ব্যক্তিরা পাহাড়ের আঞ্চলিক সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) সঙ্গে যুক্ত বলে দাবি করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা। গতকাল সোমবার রাতে রাঙামাটি শহরে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে মণ্ডপ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের কাছে এ দাবি করেন তিনি।

সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, ‘জুম্ম ছাত্র-জনতা নামে যে গ্রুপটা হয়েছে, তাদের সঙ্গে আমি আজ কথা বলেছি। ছয়জন এসেছিলেন তাঁরা, ছয়জনই ইউপিডিএফের। কারণ, খাগড়াছড়ি এলাকায় ইউপিডিএফ ছাড়া কোনো কিছু নাই। আমি একে একে তাঁদের জিজ্ঞাসা করেছি, তাঁরা বলেছেন, আমরা ছয়জনই ইউপিডিএফ।’

সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, ‘কোনো অপরাধ নয় এটা, মতাদর্শ থাকতেই পারে। আমি ওদের বলেছিলাম, দেখুন গত কয়েক দিনে আপনারা যা যা করলেন, আমার মনে হয় না এটি ম্যাচিউরড ওয়েতে হয়েছে, ম্যাচিউরিটির কমতি এখানে আছে।’

আরও পড়ুনখাগড়াছড়িতে আজও অবরোধ চলছে, স্থবির জনজীবন২ ঘণ্টা আগে

পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা আরও বলেন, ‘তাঁরা (পাহাড়িরা) সব সময় স্লোগান দেন, সেনা হটাও। এই দুনিয়াতে কিছু বাস্তবতা আছে। যে বাস্তবতার বাইরে আমরা এত সহজে যেতে পারব না। এমনও দিন আসবে, আমরা তাঁদের জোর করে ধরে রাখলেও রাখতে পারব না।’

পূজামণ্ডপ পরিদর্শনের সময় পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক উপদেষ্টার সঙ্গে রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ, জেলা পুলিশ সুপার এস এম ফরহাদ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

জুম্ম ছাত্র-জনতার হয়ে গতকাল পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমার সঙ্গে দেখা করতে যাওয়া ছয়জন হলেন—কৃপায়ন ত্রিপুরা, ছদক চাকমা, পিন্টু চাকমা, তোষিতা চাকমা, মানিক চাকমা ও বাগীশ চাকমা।

জানতে চাইলে জুম্ম ছাত্র-জনতার মুখপাত্র কৃপায়ন ত্রিপুরা বলেন, তাঁদের ছয়জনকে ইউপিডিএফ ট্যাগ লাগানো উদ্দেশ্যমূলক, অপমানজনক ও ভিত্তিহীন। উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা এই বক্তব্য প্রত্যাহার না করলে জুম্ম ছাত্র-জনতা আর কোনো আলোচনায় অংশ নেবে না। জনগণের ন্যায্য দাবি আদায়ে আন্দোলন অব্যাহত রাখা হবে। ইউপিডিএফের অন্যতম সংগঠক অংগ্য মারমা প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই ছয়জন আমাদের সদস্য বা কর্মী নয়।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাছ ধরতে গিয়ে ৫ জেলায় বজ্রপাতে ছয়জনের মৃত্যু, বসতবাড়িতে আগুন
  • জুম্ম ছাত্র-জনতার প্রতিনিধিত্ব করা ছয়জনই ইউপিডিএফের: পার্বত্য উপদেষ্টা