উপদেষ্টা আসিফের যোগসাজশে নগর ভবনে হামলা: ইশরাক হোসেন
Published: 25th, June 2025 GMT
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবনে শ্রমিক দল নেতাদের একাংশের ওপর স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার ঘনিষ্ঠরা হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন। তিনি বলেন, এতে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার সম্পৃক্ততা আছে কি না সেটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত সাপেক্ষে বলতে পারবেন। কারণ প্রমাণিত ছাড়া আমরা কাউকে অভিযুক্ত করতে পারি না। তবে যার নেতৃত্ব হামলা হয়েছে তার সঙ্গে উপদেষ্টার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।
আজ বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে ঢাকাবাসীর চলমান আন্দোলন, সেবা কার্যক্রম ব্যাহত করতে পরিকল্পিত হামলা এবং ঢাকাবাসীর আন্দোলন নিয়ে সম্প্রতি গণমাধ্যমে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের অবমাননাকর দাবি ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্যের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা ইশরাকের পাশে সাবেক মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসের সেরা কাউন্সিলর পদক পাওয়া ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর বাদল সরকার উপস্থিত ছিলেন।
সোমবার দুপুর ১২টার দিকে নগর ভবনে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক ইউনিয়নের একাংশের সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান প্রিন্স ও একাংশের সভাপতি আরিফ চৌধুরীর পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ দিন ঢাকা মেডিকেল কলেজে আহতদের দেখতে গিয়ে ইশরাক হোসেন হামলার জন্য প্রিন্স ও ডিএসসিসির নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া রুবেলকে দায়ী করে তাদের ফ্যাসিবাদের দোসর অ্যাখ্যা দেন। তাদেরকে আওয়ামী আমলের সুবিধাভোগী ও উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের ঘনিষ্ঠ দাবি করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে ইশরাক হোসেন বলেন, ‘সোমবারের হামলা হয়েছে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের প্ররোচনায়। তাদের মূল হোতা ডিএসসিসির নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া রুবেল। রুবেল একদিনও আন্দোলনে ছিলেন না। তিনি এনসিপিতে যোগদান করবেন কিংবা করেছেন। তারাই আন্দোলনের একপর্যায়ে গোলযোগ সৃষ্টি করেন। এই ষড়যন্ত্র না থামালে পুনরায় আন্দোলন শুরু হলে সেটা নগর ভবনের গণ্ডি পেরিয়ে রাজপথে বের হবে।’
হামলাকারী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া রুবেল ও আরিফুজ্জামান প্রিন্স বিএনপি সমর্থিত সংগঠনের পদধারী নেতা হয়েও কিভাবে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোনর ও উপদেষ্টার ঘনিষ্ঠ হিসেবে কাজ করছেন সাংবাদিকদের এ প্রশ্নে ইশরাক বলেন, ‘ডিএসসিসিতে আরিফ চৌধুরী ও বেলায়েত বাবু শ্রমিক দলের নেতৃত্বে আছেন। এর বাইরে কেউ যদি নিজেদের জাতীয়তাবাদী আদর্শের দাবি করেন, তবে তাদেরকে কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে প্রমাণ করতে হবে। তারা বর্তমান উপদেষ্টার প্ররোচনায় আমাদের আন্দোলনে সবচেয়ে পরিচিত মুখদের ওপর নির্মম হামলা করেছেন। তাদের আচরণই বলে দেয় তারা দোসর, না আমাদের সমর্থক।’
সংবাদ সম্মেলনে বাদল সরকারকে তার পাশে বসানোর বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি কোনো উত্তর দেননি।
সংবাদ সম্মেলনে ইশরাক হোসেন বলেন, ‘একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে আসিফ মাহমুদ বলেছেন, বিএনপির এক নেতার প্ররোচনায় নগর ভবনের আন্দোলন হয়েছে। এই কথায় নগরবাসীকে হেয় করা হয়েছে। আসিফ আরও বলেছেন, ইশরাককে কেউ মিসগাইড করেছে। এই বক্তব্যে তিনি আমাকে চরম অবমাননা করেছেন। এই বক্তব্যের জন্য তাকে অবশ্যই ক্ষমা চাইতে হবে।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ ড এসস স ইশর ক হ স ন সরক র উপদ ষ ট ইশর ক হ স ন উপদ ষ ট র নগর ভবন ড এসস স কর ছ ন র ঘন ষ ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া
রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বর-সংলগ্ন মিরপুর সড়কে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
আজ সোমবার বিকেলে সাড়ে তিনটার দিকে এই চিত্র দেখা যায়। এই ঘটনায় উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
দুপুরের দিকে দুটি এক্সকাভেটর নিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভাঙতে গিয়েছিলেন বিক্ষোভকারীরা। পরে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় সেনাবাহিনী ও পুলিশ। এরপর বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে দফায় দফায় ৩২ নম্বর সড়কে যাওয়ার চেষ্টা করে আসছেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর সদস্যসংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি ঘটনাস্থলে আছেন র্যাব ও বিজিবির সদস্যরা। তাঁরা শক্ত অবস্থানে আছেন।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আজ দুপুরের দিকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের সামনের মিরপুর সড়কে দুটি এক্সকাভেটর দেখা যায়।
পরে বিক্ষোভকারীরা ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে এক্সকাভেটর ঢোকানোর চেষ্টা করেন। তাঁদের বাধা দেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী লাঠিপেটা করে।
কিছুটা ছত্রভঙ্গ হয়ে বিক্ষোভকারীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ করে ইটপাটকেল ছোড়ে। এ সময় পুলিশের অন্তত এক সদস্য আহত হন।
আরও পড়ুনএক্সকাভেটর নিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে যাওয়া বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ৪ ঘণ্টা আগেপরে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড মেরে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গের চেষ্টা করে। এ সময় দফায় দফায় সাউন্ড গ্রেনেডের বিকট শব্দ শোনা যায়। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
বেলা পৌনে ২টার দিকে দুই ভাগে ভাগ হয়ে বিক্ষোভকারীরা আবার ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে তাঁদের আবার ছত্রভঙ্গ করে দেয় সেনাবাহিনী ও পুলিশ।
বিক্ষোভকারীদের ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে যাওয়ার জন্য দফায় দফায় চেষ্টা এবং তাঁদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুরো এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। নিউমার্কেট থেকে মিরপুরমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
আরও পড়ুনরায়কে কেন্দ্র করে ঢাকায় নিরাপত্তা জোরদার, ১৫ হাজার পুলিশ মোতায়েন৫ ঘণ্টা আগেবিক্ষোভকারীরা পুরোপুরি সরে না যাওয়ায়, বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে দফায় দফায় ৩২ নম্বর সড়কে আসার চেষ্টা করায় এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসংখ্যা বাড়ানো হয়। এখন এলাকায় সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন রয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ধানমন্ডি অঞ্চলের অতিরিক্ত উপকমিশনার জিসানুল হক দুপুরে প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘আমরা কোনোমতে কাউকে আইন হাতে তুলে নিতে দেব না।’
গত ফেব্রুয়ারিতে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িটির অর্ধেকের বেশি অংশ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ৩২ নম্বরের বাড়িটি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুনআড়াই ঘণ্টা ধরে পড়া হলো রায়, এরপর এল মৃত্যুদণ্ডের আদেশ২ ঘণ্টা আগে