ক্যান্সারের কাছে হার মানলেন  বিখ্যাত মার্কিন গায়ক ও অভিনেতা ববি শারম্যান। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। গতকাল মঙ্গলবার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সত্তর দশকের জনপ্রিয় এই তারকা। গায়কের স্ত্রী ব্রিজিট পুয়েবলন শারম্যান ইনস্টাগ্রামে একটি আবেগঘন বার্তায় মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন। খবর মার্কিন সাময়িকী ভ্যারাইটির। 

ব্রিজিট লেখেন, ‘আমার জীবনের রাজপুত্র, আমার স্বামী ববি শারম্যান আজ আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। তার হাতে হাত রেখে তিনি আমাদের ভালোবাসার ২৯ বছরের সংসারকে সম্মান জানিয়ে বিদায় নিয়েছেন। এই কঠিন সময়েও তিনি আমার পাশে ছিলেন, যেমনটা তিনি সবসময় ছিলেন। তিনি ছিলেন সাহসী, কোমল আর আলোকিত মানুষ।’

তিন মাস আগেই জানা গিয়েছিল, ববি শারম্যান স্টেজ ৪ ক্যানসারে আক্রান্ত। সেই সময় থেকেই তার শারীরিক অবস্থার অবনতি শুরু হয়। শেষদিকে কিডনি থেকে ক্যানসার তার শরীরজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। শেষ সময়গুলোতে স্ত্রী তাকে ভক্তদের লেখা চিঠি পড়ে শোনাতেন। ব্রিজিট জানান, ‘সারা পৃথিবীর ভক্তদের ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা তাকে ছুঁয়ে গিয়েছিল। সেই চেনা চোখের ঝিলিক আবারও দেখা গিয়েছিল তার মধ্যে। মৃত্যুর কাছাকাছি এসেও তিনি তার হাস্যরস হারাননি।’

শুধু গায়ক ও অভিনেতা হিসেবেই নয়, পরবর্তী জীবনে ববি শারম্যান হয়ে ওঠেন এক নিঃস্বার্থ সেবক। গ্ল্যামার জগত ছেড়ে তিনি হয়ে ওঠেন একজন ইএমটি (ইমার্জেন্সি মেডিক্যাল টেকনিশিয়ান) এবং এলএপিডির (লস অ্যাঞ্জেলেস পুলিশ ডিপার্টমেন্ট) প্রশিক্ষক। বহু মানুষের জীবন রক্ষা করেছেন তিনি।
এই খবরে শোক প্রকাশ করেছেন তার বন্ধু ও সহ-অভিনেতা জন স্টামোস। ইনস্টাগ্রামে তিনি লেখেন, ‘এক প্রাক্তন টিন আইডল থেকে অনন্তলোকের উদ্দেশ্যে- চিরশান্তিতে ঘুমাও ববি শারম্যান।’

১৯৬৮ সালে ‘হিয়ার কাম দ্য ব্রাইডস’ টিভি সিরিজে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে জনপ্রিয়তা পান ববি। এরপর গানের জগতে প্রবেশ করে একের পর এক হিট গান উপহার দেন। ‘লিটল ওমেন’, ‘লা লা লা ইফ আই হ্যাড ইউ’, ‘ইজি কাম ইজি গো’ এবং ‘জুলি, ডু ইউ লাভ মি’ গানগুলো বিলবোর্ডের শীর্ষে জায়গা করে নেয় নন্দিত এই গায়কের। 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অভ ন ত

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে রাজনীতি নিষিদ্ধের ঘোষণা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। হলগুলোতে প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য কোনো ধরনের রাজনীতি করা যাবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন ঘোষণায় ছাত্রনেতারা মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন। ইতিমধ্যে এই নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনসহ শিক্ষার্থীদের নানা পর্যায়ে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে ছাত্ররাজনীতি থাকা না–থাকা নিয়ে আলোচনা চলছে।

গত শুক্রবার গভীর রাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আবাসিক হলে রাজনীতি বন্ধের ওই ঘোষণা দেয়। তবে গতকাল শনিবার দিনভর এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য আসেনি। এ বিষয়ে করণীয় ও রূপরেখা ঠিক করতে গতকাল দুপুর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত হল প্রভোস্টসহ বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বৈঠক করেছে বলে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ। তিনি বলেছেন, এ বিষয়ে আজ রোববার বিকেলে ছাত্রসংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবেন তাঁরা।

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল গত শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি আবাসিক হলের জন্য সংগঠনটির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে। এরপর ওই দিন মধ্যরাতে হলে রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। বিভিন্ন হল থেকে কয়েক শ ছাত্র–ছাত্রী বাইরে বেরিয়ে আসেন। রাত একটার দিকে শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন তাঁরা। শুক্রবার রাত দুইটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান ও প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ সেখানে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তাঁদের সঙ্গে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের প্রায় এক ঘণ্টা আলাপ-আলোচনা হয়। তখন উপাচার্য বলেন, ‘হল পর্যায়ে ছাত্ররাজনীতির বিষয়ে ২০২৪ সালের ১৭ জুলাই হল প্রভোস্টের নেওয়া সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।’ পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, ‘হল পর্যায়ে ছাত্ররাজনীতি নিয়ন্ত্রিত থাকবে।’ উপাচার্যের এ বক্তব্যে শিক্ষার্থীরা ‘না, না’ বলে আপত্তি জানান এবং হলগুলোতে সম্পূর্ণভাবে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি করেন। পরে রাত তিনটার দিকে বিক্ষোভের মুখে প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ হলগুলোতে ‘প্রকাশ্য ও গুপ্ত রাজনীতি’ নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দেন।

শিক্ষার্থীরা প্রক্টরের আশ্বাসে উল্লাস প্রকাশ করে হলে ফিরে যান। প্রক্টরের ওই ঘোষণার আধঘণ্টা পর স্যার এ এফ রহমান হলের প্রভোস্ট অফিস থেকে এক প্রজ্ঞাপন আসে। ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘বিভিন্ন রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনের কমিটিভুক্তরা পদত্যাগ ও মুচলেকা প্রদান সাপেক্ষে হলে অবস্থান করতে পারবেন। অন্যথায় তাদের হল থেকে বহিষ্কার করা হবে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছিল ছাত্রলীগ। ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দুই দিন পর ১৭ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো থেকে শিক্ষার্থীদের প্রতিরোধের মুখে বিতাড়িত হয় ছাত্রলীগ। সে সময় শিক্ষার্থীরা প্রতিটি হলের হল প্রাধ্যক্ষদের কাছ থেকে আবাসিক হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকবে—এমন বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর নেয়। মূলত সেই বিজ্ঞপ্তির আলোকে শিক্ষার্থীরা আবাসিক হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করায় ক্ষোভ জানায়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণার প্রতিবাদে শুক্রবার মধ্যরাতে রোকেয়া হলের ছাত্রীরা হলের তালা ভেঙে বেরিয়ে এসে রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ করেন

সম্পর্কিত নিবন্ধ