মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলার সঙ্গে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানে পারমাণবিক বোমা ফেলার ঘটনার তুলনা করেছেন।

দ্য হেগে দেওয়া এক বক্তব্যে ট্রাম্প বলেন, ‘তারা (ইরান) এ কাজটা (পারমাণবিক সক্ষমতা অর্জন) করতে কোটি কোটি ডলার খরচ করেছে, কিন্তু সফল হয়নি। বর্তমানে তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক বেশ ভালোভাবেই চলছে।’

ট্রাম্প বলেন, ‘এ হামলাই যুদ্ধের অবসান ঘটিয়েছে। কিন্তু আমরা যদি এতে সফল না হতাম? আমি হিরোশিমার উদাহরণ টানতে চাই না, কিন্তু যেভাবে সেই হামলা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ থামিয়েছিল, এটাও তেমনই এক আঘাত ছিল। এই হামলা এবারের যুদ্ধের ইতি টেনেছে। যদি আমরা ওটা (ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা) ধ্বংস না করতাম, তারা (ইরান) এখনো লড়াই চালিয়ে যেত।’

ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুটের সঙ্গে দ্য হেগে এক বৈঠকের আগে সাংবাদিকদের মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘এ ব্যাপারে গোয়েন্দা তথ্য ছিল.

..খুবই বিভ্রান্তিকর।’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বলেছে, “আমরা জানি না, এটা খুব ভয়াবহও হতে পারত।” তাদের কথাটা হয়তো ঠিক। কিন্তু আমার মতে, “আমরা জানি না” বলার কিছু নেই। ঘটনাটা ছিল অত্যন্ত ভয়াবহ আর ধ্বংসাত্মক।’

ট্রাম্পের সঙ্গে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার সম্পর্ক খুব একটা বন্ধুত্বপূর্ণ না হলেও এই হামলার সাফল্য তাঁর জন্য রাজনৈতিকভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

ট্রাম্পের ডানপন্থী সমর্থকেরা আগেই বলেছিলেন, এমন সামরিক হস্তক্ষেপ ট্রাম্পের ‘মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন’ নীতি এবং বিদেশি যুদ্ধে না যাওয়ার প্রতিশ্রুতির সঙ্গে খাপ খায় না।

তবে ট্রাম্প জোর দিয়ে বলেছেন, ইরানকে কখনো পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করতে দেওয়া যাবে না এবং এই নির্ভুল ও সফল হামলা সেটা নিশ্চিত করবে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, মার্কিন হামলা ইসরায়েল–ইরান যুদ্ধের অবসান ঘটিয়েছে। তিনি একে ১৯৪৫ সালে বিশ্বযুদ্ধের শেষের দিকে জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা ফেলার সঙ্গে তুলনা করেন, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইতি টেনেছিল।

ট্রাম্প বলেন, ‘আমি হিরোশিমা কিংবা নাগাসাকির উদাহরণ দিতে চাই না, কিন্তু ঘটনাটি আসলে একই রকমের।’

ট্রাম্প আরও দাবি করেন, ‘এই হামলার মাধ্যমে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি অন্তত কয়েক দশক পিছিয়ে গেছে। আমার মনে হয়, তারা আর কখনো এমন কিছু করার সাহস পাবে না।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথের সঙ্গে ট্রাম্প

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ট র ম প বল ন

এছাড়াও পড়ুন:

না বুঝে ডাউনলোড অনুমতি ঝুঁকিপূর্ণ

সাইবার চক্রের নতুন হাতিয়ার এপিকে। সংক্ষেপে বললে অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশন প্যাকেজ বা এপিকে। নব্য ঘরানার সাইবার আক্রমণে বিশেষভাবে ফাইলটি শনাক্ত করেছেন গবেষকরা। কয়েকটি পন্থায় এপিকে ফাইল ডাউনলোডে বিভ্রান্তের প্রচেষ্টা চলে সব সময়।

ল্যাপটপ, স্মার্টফোন বা স্মার্ট ডিভাইসে এমন ফাইল ডাউনলোড করলেই হ্যাকাররা তাৎক্ষণিক উদ্দেশ্য পূরণ করে। হতে পারে তা আর্থিক বা একেবারে ব্যক্তিগত।

প্রথমেই স্মার্ট ডিভাইসটি চলে যাবে প্রতারক চক্রের নিজস্ব নিয়ন্ত্রণে। ঠিক তখন থেকেই শুরু ব্ল্যাকমেইল। অনেকে আবার সরাসরি অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়। নিয়ন্ত্রণ নিতে চাইবে ফটো বা ভিডিও গ্যালারিতে। অর্থাৎ যা কিছু সম্ভব, নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার প্রচেষ্টা করবে।

বিশেষ চক্রটি আগে কোনো ব্যাংক-বীমা বা অন্য কোনো পরিষেবা দাতার সার্ভিস নাম ভাঙিয়ে এসএমএস বা হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ ছড়াত। ওই সব লিঙ্কে নীরব ঘাতক হয়ে থাকত ম্যালিশিয়াস, যা ক্লিক করলেই বিপদ অনিবার্য।

ব্যাংক বা পরিষেবার সুনির্দিষ্ট লোগো, সিল ব্যবহার করে হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট খোলার অনেক ঘটনাই সামনে আসছে। কখনও আবার অন্যসব সোশ্যাল মিডিয়ায় নতুন ভুয়া অ্যাকাউন্ট তৈরি করে চলছে অবিরাম প্রচেষ্টা।

বিশেষ নিরাপত্তার প্রয়োজনে সাইবার বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন, নিজের ব্যবহৃত স্মার্ট ডিভাইসে অবশ্যই অনুমোদিত অ্যান্টিভাইরাস ও অ্যান্টিম্যালওয়্যার সচল রাখতে হবে। ফলে অনেকাংশে ক্ষতিকর এপিকে ফাইল ডাউনলোড করার আগে ডিভাইস থেকে ওয়ার্নিং মেসেজ দৃশ্যমান হবে, যা ক্ষতির ঝুঁকি এড়াতে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করে।

কিছুদিন ধরে বিশেষ উদ্দেশ্যে টার্গেটকে কখনও রিওয়ার্ড পয়েন্ট জিতবে, কখনও অ্যাকাউন্ট সুরক্ষিত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এপিকে ফাইল ছড়ানোর ঘটনা ঘটেছে। আক্রান্ত ওই ফাইল স্মার্ট গ্যাজেটে কোনোভাবে রান করাতে পারলেই ঝুঁকি বাড়বে। ডিভাইসে ঘটবে ক্ষতিকর অনুপ্রবেশ।

সাইবার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সহজলভ্য এপিকে ফাইল আকারে কম জায়গা নেয়, যার আকার অনেক সময় কিলোবাইট হয়।

আবার অনেক সময় মেগাবাইট হয়। ফলে একবার ওই ফাইলের ফাঁদে পড়ে ক্লিক করলে খুব দ্রুত তা ইনস্টল হয়ে যাবে নিজস্ব ডিভাইসে। আর ঝটপট তা আক্রান্ত ডিভাইসে সক্রিয় হবে কোনো না কোনো অ্যাপের মধ্যে। হঠাৎ ফোন অস্বাভাবিক আচরণ করলে তাৎক্ষণিক ফোনটি আগে বন্ধ করতে হবে। তাতে ওই ফাইলের কার্যক্রম মাঝপথে থেমে যাবে। 

ভুক্তভোগী অনেকের ধারণা, ফাইলটি কোনো ব্যাংকের দাপ্তরিক সাইট বা হোয়াটসঅ্যাপ বিজনেস অ্যাকাউন্ট থেকে পাঠানো হয়েছে। তাই ডিভাইসে ইনস্টল হলে সমস্যা হবে না। বিপত্তির শুরু ঠিক সেখানেই। তাই ব্যাংকিং নোটিফিকেশন গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ