অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের পুরোনো দুটি সংস্করণ থেকে ক্রোম ব্রাউজারের সমর্থন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে গুগল। নতুন এ সিদ্ধান্তের ফলে আগামী আগস্ট মাস থেকে অ্যান্ড্রয়েড ৮.০ (ওরিও) ও ৯.০ (পাই) সংস্করণে জন্য ক্রোম ব্রাউজারের নিরাপত্তা হালনাগাদ করা হবে না। ফলে অ্যান্ড্রয়েড ৮.০ (ওরিও) ও ৯.০ (পাই) সংস্করণে চলা স্মার্টফোনে ক্রোম ব্রাউজার ব্যবহার করলে সাইবার হামলাসহ বিভিন্ন কারিগরি ত্রুটির মুখোমুখি হতে হবে।

গুগলের সাপোর্ট ম্যানেজার এলেন টি জানিয়েছেন, আগামী ৫ আগস্ট বাজারে আসবে ক্রোম ব্রাউজারের ১৩৯তম সংস্করণ। এ সংস্করণ অ্যান্ড্রয়েড ৮ ও ৯ অপারেটিং সিস্টেম সমর্থন করবে না। এর ফলে শুধু অ্যান্ড্রয়েড ১০ থেকে পরবর্তী সংস্করণে চলা যন্ত্রে নতুন সংস্করণটি ব্যবহার করা যাবে। অর্থাৎ ‘ক্রোম ১৩৮’ হবে অ্যান্ড্রয়েড ৮ ও ৯ অপারেটিং সিস্টেমে ব্যবহারের উপযোগী সর্বশেষ সংস্করণ। শুধু তাই নয়, ৫ আগস্টের পর ৮ ও ৯ অপারেটিং সিস্টেমের জন্য প্লে স্টোরে ক্রোম ব্রাউজারের কোনো হালনাগাদও পাওয়া যাবে না। তবে যাঁরা অ্যান্ড্রয়েড ৮ বা ৯ ব্যবহার করেন, তাঁরা চাইলে বর্তমানের মতোই ক্রোম ১৩৮ সংস্করণ ব্যবহার করতে পারবেন। যদিও এতে ভবিষ্যতে আর কোনো নতুন সুবিধা বা নিরাপত্তা হালনাগাদ যুক্ত করা হবে না। ফলে যন্ত্র ঝুঁকিতে পড়তে পারে এবং ব্রাউজিংয়ের অভিজ্ঞতা ক্রমেই সীমিত হয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকবে।

২০১৭ সালে অ্যান্ড্রয়েড ৮.

০ ও ২০১৮ সালে ৯.০ পাই অপারেটিং সিস্টেম উন্মোচন করে গুগল। এরপর নতুন অনেক সংস্করণ বাজারে এলেও এই দুই সংস্করণ এখনো উল্লেখযোগ্যসংখ্যক যন্ত্রে ব্যবহৃত হচ্ছে। গুগলের প্রকাশিত সর্বশেষ প্ল্যাটফর্ম ডিস্ট্রিবিউশন তথ্যমতে, বিশ্বজুড়ে এখনো প্রায় ৪ শতাংশ অ্যান্ড্রয়েড যন্ত্রে ওরিও এবং ৫.৮ শতাংশ যন্ত্রে পাই সংস্করণ ব্যবহার করা হচ্ছে।

সূত্র: অ্যান্ড্রয়েড পুলিশ

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর স স করণ

এছাড়াও পড়ুন:

“লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ”: অর্থ ও ফজিলত

ইসলামে জিকির মুমিনের জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ, যা আল্লাহর সঙ্গে আধ্যাত্মিক সংযোগ দৃঢ় করে এবং মনকে শান্তি প্রদান করে। এর মধ্যে “লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ” একটি অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ জিকির, যা কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত।

এই জিকিরটি মানুষের দুর্বলতা ও আল্লাহর সর্বশক্তিমান ক্ষমতার প্রতি ঈমান প্রকাশ করে। এটি কঠিন পরিস্থিতিতে, দুশ্চিন্তায় বা কোনো কাজ শুরুর আগে পড়া হয়, যা মুমিনকে আল্লাহর উপর ভরসা করতে উৎসাহিত করে।

অর্থ

“লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ” এর অর্থ:“কোনো শক্তি বা ক্ষমতা নেই আল্লাহর শক্তি ও ক্ষমতা ছাড়া।”

অর্থাৎ, এটি মানুষের সীমাবদ্ধতা নির্দেশ করে যে, কোনো কিছুই মানুষের নিয়ন্ত্রণে নয়; সবকিছু আল্লাহর হাতে। এই কথার মাধ্যমে একজন মুমিন স্বীকার করে যে, সকল শক্তি ও সাফল্যের উৎস একমাত্র আল্লাহ।

এই জিকির মানুষকে আল্লাহর প্রতি নির্ভরশীল হতে শেখায় এবং তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করতে উৎসাহিত করে। (তাফসির মা’আরিফুল কুরআন, মুফতি শফি উসমানী, পৃষ্ঠা: ৮/২৪৫, মাকতাবাতুল আশরাফ, ২০১০)

আরও পড়ুনসর্বশ্রেষ্ঠ জিকির লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ফজিলত

হাদিসে এই জিকিরের গুরুত্ব ও পুরস্কার সম্পর্কে বর্ণনা পাওয়া যায়। আবু মুসা আল-আশআরি (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ পড়ে, তা জান্নাতের ধনসম্পদের মধ্যে একটি।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৪২০২)

এই জিকিরের ফজিলতের মধ্যে রয়েছে:

গুনাহ মাফ: এটি পড়ার মাধ্যমে গুনাহ মাফ হয় এবং আল্লাহর রহমত অর্জিত হয়।

মানসিক শান্তি: কঠিন পরিস্থিতিতে এই জিকির মনের উদ্বেগ দূর করে এবং আল্লাহর উপর ভরসা বাড়ায়।

জান্নাতের পথ: হাদিস অনুযায়ী, এটি জান্নাতে প্রবেশের একটি মাধ্যম।

সুরক্ষা: এটি শয়তানের ক্ষতি ও বদ নজর থেকে রক্ষা করে। (সুনান তিরমিজি, হাদিস: ৩৩৭১)

আরও পড়ুনতাওহিদ বলতে কী বোঝায়১২ জুলাই ২০২৫কখন পড়তে হবে?

এই জিকিরটি যেকোনো সময় পড়া যায়, তবে নির্দিষ্ট কিছু পরিস্থিতিতে এটি বিশেষভাবে উপকারী:

কঠিন পরিস্থিতিতে: দুশ্চিন্তা, ভয় বা চাপের সময় এটি পড়া মানসিক শক্তি প্রদান করে।

কাজ শুরুর আগে: যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজ শুরু করার আগে আল্লাহর সাহায্য কামনা করা।

সকাল-সন্ধ্যার জিকির: প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় নিয়মিত পড়া।

নামাজের পর: ফরজ নামাজের পর জিকিরের অংশ হিসেবে পড়া। (ফিকহুস সুন্নাহ, সাইয়্যিদ সাবিক, পৃষ্ঠা: ২০৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ২০১৮)

“লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ” একটি সংক্ষিপ্ত কিন্তু গভীর তাৎপর্যপূর্ণ জিকির, যা মানুষকে আল্লাহর উপর নির্ভরশীল হতে শেখায়। এর অর্থ—“কোনো শক্তি বা ক্ষমতা নেই আল্লাহর শক্তি ও ক্ষমতা ছাড়া”—মুমিনের ঈমানকে দৃঢ় করে এবং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনার গুরুত্ব তুলে ধরে। এই জিকির জান্নাতের ধনসম্পদ, গুনাহ মাফের কারণ এবং মানসিক শান্তির উৎস। আধুনিক জীবনে ব্যস্ততা, উদ্বেগ ও চাপের মাঝে এই জিকির নিয়মিত পড়ার মাধ্যমে আমরা আধ্যাত্মিক শক্তি অর্জন করতে পারি।

আরও পড়ুনধৈর্য গড়ে তুলতে কোরআনের ৬ শিক্ষা১৩ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ