ডেঙ্গুতে আরও ২ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৩২৬
Published: 25th, June 2025 GMT
দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। ঢাকা ও রাজশাহীর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। তাঁরা দুজন যথাক্রমে মাদারীপুর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার বাসিন্দা। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৩৬ জনের মৃত্যু হলো।
আজ বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে। এতে বলা হয়, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল সকাল আটটা থেকে আজ সকাল আটটা পর্যন্ত) ৩২৬ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে বরিশাল বিভাগের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১১৮। এ বিভাগের জেলা বরগুনায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৬৫।
এবার রাজধানীর বাইরে, বিশেষ করে বরিশাল বিভাগে ডেঙ্গুর সংক্রমণ বেশি হচ্ছে। এ বিভাগের বরগুনা জেলায় দেশের সর্বোচ্চ সংক্রমণ হচ্ছে প্রায় প্রতিদিন।
দক্ষিণের জেলা বরগুনা পৌরসভার ৩১ শতাংশ বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। পৌর এলাকার চেয়ে গ্রামাঞ্চলের অবস্থা অনেক খারাপ। সদর উপজেলার গৌরিচন্না ইউনিয়নের ৭৬ শতাংশ বাড়িতে এডিসের লার্ভা পাওয়া গেছে। পৌর শহরের দুটি ওয়ার্ডে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে প্রতি ১০ বাড়ির মধ্যে ৮টিতে।
আরও পড়ুনটাকা নয়, ডেঙ্গুমৃত্যু পর্যালোচনা হচ্ছে না সদিচ্ছার অভাবে৯ ঘণ্টা আগেসরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণাপ্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) পরিচালিত এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিষ্ঠানটির গবেষক দল ১৭ থেকে ১৯ জুন জরিপটি করে। এরপর রোববার প্রতিষ্ঠানটি জরিপের প্রাথমিক প্রতিবেদন জমা দেয়।
বেশি হলে সে এলাকাকে ‘উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বরগুনা পৌর শহরের দুটি ওয়ার্ডে সংক্রমণে হার ৮০, যা ডব্লিউএইচও নির্ধারিত সীমার আট গুণ বেশি।
শুধু চলতি বছরই নয়, গত বছরও বরগুনায় ডেঙ্গুর উচ্চ সংক্রমণ ছিল। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের বাইরে, বরগুনা ছিল দেশের চতুর্থ বৃহৎ ডেঙ্গু সংক্রমণের এলাকা। এ জেলায় গত বছর ২ হাজার ৪৩৪ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। বরিশাল বিভাগে এটি ছিল সর্বোচ্চ সংক্রমণ।
আরও পড়ুনকার ‘গুনা’য় বরগুনা এখন ডেঙ্গুর ‘রাজধানী’৬ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
টাকা ছাপানো-বণ্টনে বছরে খরচ ২০ হাজার কোটি টাকা, বাড়াতে হবে ক্যাশলেস লেনদেন: গভর্নর
টাকা ছাপানো, সংরক্ষণ, সারা দেশে পরিবহন ও বণ্টনে প্রতিবছর প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা খরচ হয় বলে জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। তিনি মনে করেন, রাষ্ট্রের এ বিপুল খরচ বাঁচাতে হলে নগদ অর্থ ব্যবহারের প্রবণতা কমিয়ে আনতে হবে। ক্যাশলেস বা নগদ অর্থ ছাড়াই লেনদেন বাড়াতে হবে।
আজ রোববার সকালে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ৩৬৫ দিন’শীর্ষক সংলাপে গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এ কথা বলেন। এ সংলাপ আয়োজন করে বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
সংলাপে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, প্রতিবছর টাকা ছাপানো, পরিবহন ও বণ্টনে বিশাল অঙ্কের অর্থ খরচ হয়। এ খরচ কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংক ইতিমধ্যে কিউআর কোডভিত্তিক লেনদেন জনপ্রিয় করতে নীতিগত সহায়তা ও প্রযুক্তি অবকাঠামো তৈরির কাজ করছে।
আহসান এইচ মনসুর আরও বলেন, লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে কিউআর কোড ব্যবহার করতে হবে। এর ফলে ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে ভোক্তা—সবার জন্য লেনদেন হবে দ্রুত, নিরাপদ ও স্বচ্ছ। ক্যাশের ব্যবহার কমলে রাষ্ট্রীয় খরচও উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাবে।
সংলাপে ডিজিটাল আর্থিক অন্তর্ভুক্তির জন্য স্মার্টফোনের গুরুত্ব তুলে ধরেন আহসান এইচ মনসুর। বর্তমানে আর্থিক লেনদেন, বিল পরিশোধ বা ইন্টারনেটভিত্তিক যেকোনো সেবা নিতে স্মার্টফোনের ব্যবহার অপরিহার্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা স্মার্টফোনের দাম কমাতে কাজ করছেন। ৬ থেকে ৭ হাজার টাকার মধ্যে ভালো মানের স্মার্টফোন বাজারে আনতে পারলে শতভাগ মানুষকে স্মার্টফোনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।
গভর্নর আরও বলেন, এ লক্ষ্য অর্জনে ইন্টারনেটের দাম আরও কমাতে হবে এবং সেবার মান বাড়াতে হবে।
আলোচনায় নগরায়ণ ও আবাসন খাতের চ্যালেঞ্জ প্রসঙ্গে আহসান এইচ মনসুর বলেন, দেশে এখনো কয়েক মিলিয়ন নতুন আবাসনের প্রয়োজন রয়েছে। নগরকেন্দ্রিক উন্নয়ন অবশ্যম্ভাবী। কেননা, মানুষ গ্রামে ফেরত যাবে না। তাই সাশ্রয়ী আবাসন পরিকল্পনা নিয়ে ভাবতে হবে। ব্যাংকগুলোর হাতে থাকা জমি ডেভেলপারদের সঙ্গে অংশীদারত্বে ব্যবহারের বিষয়ে ভাবা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, এক বছরে অন্তর্বর্তী সরকার ব্যাংক খাতে সংস্কারসহ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। এসব উদ্যোগ রপ্তানি খাতকে ভালো অবস্থায় রেখেছে ও বড় ধরনের অর্থনৈতিক বিপর্যয় থেকে দেশকে রক্ষা করেছে। কিন্তু দেশে বিদেশি বিনিয়োগ আসছে না। কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হচ্ছে না। রাজস্ব আহরণ বাড়ছে না। এগুলো উদ্বেগের বিষয়।
সিপিডির সংলাপে আরও উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স প্রমুখ।