কুমিল্লায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের রূপকার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলামের স্মরণে নির্মিত ম্যুরাল ভেঙে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। 

নগরীর রাজবাড়ি এলাকার কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাশে অবস্থিত ওই ম্যুরালটি ভাঙচুরের ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধা মহলসহ সচেতন নাগরিকদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

বুধবার (২৫ জুন) সকাল থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ম্যুরাল ভাঙার ছবি ছড়িয়ে পড়লে দ্রুতই তা ভাইরাল হয়ে পড়ে। দেশজুড়ে শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। কুমিল্লার মুক্তিযোদ্ধা, সাংস্কৃতিক কর্মী ও শিক্ষার্থীরা ঘটনাটিকে ‘ইতিহাস ও আত্মমর্যাদার উপর হামলা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

কুমিল্লা জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শফিউল আহমেদ বাবুল বলেন, “বাংলা ভাষাকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবে স্বীকৃতি আদায়ে রফিকুল ইসলামের অবদান জাতি চিরকাল স্মরণে রাখবে। তার স্মরণে স্থাপিত একটি ম্যুরাল ভেঙে ফেলা কোনো অবস্থাতেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং দ্রুত ম্যুরালটি পুনঃস্থাপনের দাবি জানাচ্ছি।”

জেলা প্রশাসন জানায়, ২০১৪ সালে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাশে শহীদ মিনার ও রফিকুল ইসলামের ম্যুরালটি নির্মাণ করা হয়। পাশেই ছিল তার পৈত্রিক বাড়ি। প্রতি বছর শিক্ষার্থীরা সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদন করে আসছিলেন।

ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে কলেজটির শিক্ষকরা মুখ খুলতে নারাজ থাকলেও জেলা প্রশাসক মো.

আমিরুল কায়ছার বলেন, “বিষয়টি আমার জানা ছিল না। তবে আমরা রফিকুল ইসলামের স্মৃতিকে সম্মান জানাতে ম্যুরালটি পুনঃস্থাপনসহ প্রয়োজনীয় সব উদ্যোগ নেব।”

উল্লেখ্য, ১৯৯৮ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি রফিকুল ইসলাম জাতিসংঘের তৎকালীন মহাসচিব কফি আনানকে চিঠি লিখে ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তাব দেন। তার এ উদ্যোগ ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কোর অনুমোদন পায় এবং ২০০০ সাল থেকে দিবসটি বিশ্বজুড়ে পালিত হয়ে আসছে।
এই অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০০২ সালে তার সংগঠন একুশে পদকে ভূষিত হয়।

রফিকুল ইসলাম ২০১৩ সালের ২১ নভেম্বর কানাডার ভ্যাঙ্কুভারে মৃত্যুবরণ করেন। ইতিহাসের এই মহান সৈনিকের স্মৃতিতে নির্মিত ম্যুরাল ভেঙে ফেলার ঘটনায় কুমিল্লার সাধারণ মানুষও ক্ষোভ প্রকাশ করে দ্রুত জড়িতদের চিহ্নিত করে শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

ঢাকা/রুবেল/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

সবুজবাগে ব্যবসায়ীকে লক্ষ্য করে দুর্বৃত্তের ছোড়া গুলিতে পথচারী আহত

রাজধানীর সবুজবাগের বাইগদিয়া নুনের টেক এলাকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে মনির হোসেন (৪৬) নামে এক নিরাপত্তাকর্মী আহত হয়েছেন। রোববার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ বলছে, ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে গুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে একজন পথচারী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

পুলিশ সূত্র জানায়, আহত মনির হোসেন খিলগাঁওয়ের দক্ষিণ গোড়ান এলাকায় থাকেন। পেশায় তিনি একজন নিরাপত্তাকর্মী।

মনিরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন একই এলাকার বাসিন্দা সাইদুল ইসলাম। তিনি জানান, বিকেলে কয়েকজন মিলে গোসল করার জন্য বাইগদিয়া এলাকায় যান মনির। সেখান থেকে হেঁটে ফেরার পথে মোটরসাইকেলে করে আসা অজ্ঞাতনামা কয়েকজন গুলি ছোড়ে। এতে তাঁর কোমরে গুলি লাগে।

সাইদুল আরও জানান, ঘটনাস্থলের পাশেই তখন গন্ডগোল চলছিল। গুরুতর আহত অবস্থায় মনিরকে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে এবং পরে মুগদা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ডেমরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, জাহাঙ্গীর নামের একজন ড্রেজার ব্যবসায়ীকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। প্রাণ বাঁচাতে তিনি পানিতে লাফ দেন। তখন গুলি এসে নিরাপত্তারক্ষী মনিরের গায়ে লাগে। ওসি বলেন, এ ঘটনায় ছয়জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ