সংক্রমণ বাড়তে থাকায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে হাসপাতালে ‘করোনা ওয়ার্ড’ চালু করেছে। নগরের আলকরণ এলাকায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন জেনারেল হাসপাতালের (মেমন হাসপাতাল-২) তৃতীয় তলায় এই ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। এতে ১৫টি শয্যা রয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেন এই করোনা ওয়ার্ডের উদ্বোধন করেন। মেয়রের সঙ্গে সিটি করপোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। একই সঙ্গে তাৎক্ষণিক করোনা পরীক্ষার জন্য র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইমাম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এই করোনা ওয়ার্ডে মূলত আইসোলেশনে থাকতে হবে, এমন রোগীদের সেবা দেওয়া হবে। তাঁদের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য চিকিৎসক, নার্স ও ওয়ার্ড বয়সহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকবে। তবে করোনার কারণে কারও পরিস্থিতি খারাপ হলে তখন রোগীদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হবে।

সম্প্রতি চট্টগ্রামে করোনার সংক্রমণ বেড়েছে। গতকাল বুধবার পর্যন্ত করোনায় মৃত্যু হয়েছে ছয়জনের। করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৯৯ জন।

করোনার সংক্রমণ বাড়ায় ১১ জুন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেন স্বাস্থ্য বিভাগ-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি প্রস্তুতি সভা করেন। ওই সভায় চট্টগ্রাম নগরের দুটি হাসপাতালকে করোনা রোগীদের চিকিৎসাসেবার জন্য জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন পরিচালিত মেমন হাসপাতাল-২। এ ছাড়া চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা রোগীদের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে আলাদা ওয়ার্ড।

এ ছাড়া চারটি ল্যাবে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আরটি-পিসিআর ল্যাব থাকা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় এবং ফৌজদারহাটে অবস্থিত বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসে (বিআইটিআইডি) করোনা পরীক্ষা হবে। এ ছাড়া সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে একটি সার্ভিস সেন্টার চালু করা হবে। এই কেন্দ্র থেকে মানুষ করোনা রোগের বিষয়ে তথ্য জানতে পারবেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ক রমণ ব ড় র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

বড়াইগ্রামে পরীক্ষাকক্ষে ঢুকে ছবি তুলে ফেসবুকে দিলেন ছাত্রদল নেতা

নাটোরের বড়াইগ্রামে এইচএসসি পরীক্ষা চলাকালে কক্ষে ঢুকে ছবি তুলে ফেসবুকে দিয়েছেন ছাত্রদলের এক নেতা। এ ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। এ ছাড়া কেন্দ্রসচিবকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) ও চার কক্ষ পরিদর্শককে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার বনপাড়া কলেজ পরীক্ষাকেন্দ্রে বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষার সময় এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতার নাম রাকিব সরদার। তিনি বনপাড়া পৌর ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক এবং পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সরদার রফিকুল ইসলামের ছেলে।

পরীক্ষাকেন্দ্রের অন্তত পাঁচ পরীক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ সকাল ১০টায় পরীক্ষা শুরুর পরপরই ছাত্রদল নেতা রাকিব সরদার ২০৫ নম্বর কক্ষে ঢোকেন। তিনি কক্ষের ভেতরে দাঁড়িয়ে ছবি তোলেন। পরে তিনি অন্যান্য স্থানেও ঘুরে বেড়ান। কিছুক্ষণ পর তিনি তাঁর নিজের ফেসবুক পেজে ওই ছবি পোস্ট করেন। এরপর বিষয়টি সবার নজরে আসে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক তৌহিদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, পরীক্ষা আইন অনুসারে কেন্দ্রের ১৪৪ গজের মধ্যে যেখানে সর্বসাধারণকে ঢুকতে নিষেধ করে মাইকিং করা হয়, সেখানে একটি ছাত্রসংগঠনের নেতা কীভাবে পরীক্ষাকক্ষে ঢুকে ছবি তুলে ফেসবুকে দেন, বোধগম্য নয়। বিষয়টি তাঁরা প্রশাসনকে জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে আইনানুগ পদক্ষেপ আশা করছেন।

অভিযুক্ত রাকিব সরদার ঘটনার পর থেকে গা ঢাকা দিয়েছেন। মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলেও বন্ধ পাওয়া যায়। কেন্দ্রসচিব কোহিনুর খাতুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত। আমাদের দৃষ্টির বাইরে ঘটনাটি ঘটেছে। আমরা প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়েছি। সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাকে এ ব্যাপারে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। আমি ২০৫ নম্বর কক্ষের কক্ষ পরিদর্শক নার্গিস আলম, মতিউর রহমান, মোছাব্বের হোসেন ও তছলিম উদ্দিনকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছি।’

বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম সারওয়ার হোসেন বলেন, ইউএনও এ ব্যাপারে অভিযুক্ত রাকিব সরদারের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি কেন্দ্রসচিবের লিখিত অভিযোগ পাওয়ার অপেক্ষায় আছেন। অভিযোগ পেলে অভিযুক্তকে আইনের আওতায় নেওয়া হবে।

বড়াইগ্রামের ইউএনও লায়লা জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ‘আমি ৯টা ৪০ মিনিট থেকে ১০টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত বনপাড়া কলেজকেন্দ্রে ছিলাম। ওই সময় ঘটনাটি চোখে পড়েনি। তবে ছবি ভাইরাল হওয়ার পর বিষয়টি জেনেছি। পরে রাকিব সরদার আমার কাছে এসে ক্ষমা চেয়েছেন। তবে তাঁর বিরুদ্ধে ওসিকে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বলেছি। এ ছাড়া কেন্দ্রসচিবকে শোকজ করা হয়েছে। চার কক্ষ পরিদর্শককে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ