চট্টগ্রামে সংক্রমণ বাড়ছে, সিটি করপোরেশন জেনারেল হাসপাতালে করোনা ওয়ার্ড চালু
Published: 26th, June 2025 GMT
সংক্রমণ বাড়তে থাকায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে হাসপাতালে ‘করোনা ওয়ার্ড’ চালু করেছে। নগরের আলকরণ এলাকায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন জেনারেল হাসপাতালের (মেমন হাসপাতাল-২) তৃতীয় তলায় এই ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। এতে ১৫টি শয্যা রয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেন এই করোনা ওয়ার্ডের উদ্বোধন করেন। মেয়রের সঙ্গে সিটি করপোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। একই সঙ্গে তাৎক্ষণিক করোনা পরীক্ষার জন্য র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইমাম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এই করোনা ওয়ার্ডে মূলত আইসোলেশনে থাকতে হবে, এমন রোগীদের সেবা দেওয়া হবে। তাঁদের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য চিকিৎসক, নার্স ও ওয়ার্ড বয়সহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকবে। তবে করোনার কারণে কারও পরিস্থিতি খারাপ হলে তখন রোগীদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হবে।
সম্প্রতি চট্টগ্রামে করোনার সংক্রমণ বেড়েছে। গতকাল বুধবার পর্যন্ত করোনায় মৃত্যু হয়েছে ছয়জনের। করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৯৯ জন।
করোনার সংক্রমণ বাড়ায় ১১ জুন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেন স্বাস্থ্য বিভাগ-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি প্রস্তুতি সভা করেন। ওই সভায় চট্টগ্রাম নগরের দুটি হাসপাতালকে করোনা রোগীদের চিকিৎসাসেবার জন্য জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন পরিচালিত মেমন হাসপাতাল-২। এ ছাড়া চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা রোগীদের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে আলাদা ওয়ার্ড।
এ ছাড়া চারটি ল্যাবে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আরটি-পিসিআর ল্যাব থাকা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় এবং ফৌজদারহাটে অবস্থিত বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসে (বিআইটিআইডি) করোনা পরীক্ষা হবে। এ ছাড়া সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে একটি সার্ভিস সেন্টার চালু করা হবে। এই কেন্দ্র থেকে মানুষ করোনা রোগের বিষয়ে তথ্য জানতে পারবেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ক রমণ ব ড় র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
আমরা ফিলিস্তিন টাইম জোনে ঢুকেছি: শেষ জাহাজ আটকের আগে ভিডিও বার্তায় শহিদুল
ফিলিস্তিনের গাজা অভিমুখে যাত্রা করা ত্রাণবাহী নৌবহর ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’র কাছ থেকে আলাদা অবস্থানে আছেন বলে জানিয়েছেন দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও আলোকচিত্রী শহিদুল আলম। আজ শুক্রবার দুপুরে ফেসবুকে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় তিনি এ কথা বলেছেন।
তবে শহিদুল আলমের এই ভিডিওবার্তা ফেসবুকে দেওয়ার কিছুক্ষণ পর আজ সুমুদ ফ্লোটিলা’র সর্বশেষ জাহাজও আটক করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
জাহাজ আটক হওয়ার আগে গাজামুখী নৌযান থেকে দেওয়া ভিডিও বার্তায় শহিদুল আলম বলেন, ‘আজ ৩ অক্টোবর ২০২৫। দেখতেই পাচ্ছেন, ঝকঝকা রোদ। আজ আমরা ফিলিস্তিন টাইম জোনে এসেছি। সুমুদ ফ্লোটিলায় যারা গিয়েছিলেন, তাঁরা ভিন্নভাবে গিয়েছিলেন। আমরা আলাদাভাবে যাচ্ছি। এভাবেই আমাদের পরিকল্পনা ছিল যে, ওদের ওপর কিছু হলেও আমরা যেন এগিয়ে যেতে পারি। জানতে পেরেছি, ইসরায়েল তাদের (সুমুদ ফ্লোটিলা) সব জাহাজ আটক করেছে।’
অনেক বড় জাহাজ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন জানিয়ে শহিদুল আলম বলেন, ‘আমাদেরটা সবচেয়ে বড় জাহাজ। আমাদের সঙ্গে আরও আটটি ছোট নৌকা পাড়ি দিয়েছিল। তারা আমাদের একটু আগে পাড়ি দিয়েছিল। আমরাসহ এই মুহুর্তে এই নয়টি যানবাহন মুক্ত আছে। আমরা আজকে ফিলিস্তিনি টাইম জোনে এসেছি। এখনো দূরত্ব আছে। তবে আজ আমরা এই আটটি ছোট নৌকাকে পার হয়ে যাব। এরপর থেকে আমাদের এই জাহাজটিই সবচেয়ে আগে থাকবে। এতে বোঝাই যাচ্ছে, আক্রোশটা আমাদের ওপরই পড়বে। কিন্তু আমরা একেবারেই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, আমরা একেবারেই গাজা পর্যন্ত যাব এবং কোনো বাধাই গ্রহণ করব না।’
ত্রাণ নয়, অবরোধ ভাঙার উদ্দেশ্য নিয়ে গাজার দিকে যাচ্ছেন বলে উল্লেখ করেছেন শহিদুল আলম। তিনি বলেন, ‘এটা বলা প্রয়োজন, সুমুদ ফ্লোটিলায় যে নৌকাগুলো ছিল, তাদের কিন্তু দায়িত্ব ছিল ত্রাণ নিয়ে যাওয়ার। আমরা কিন্তু ত্রাণের জন্য যাচ্ছি না। আমরা একটা অবৈধ অবরোধকে ভাঙব, সেই উদ্দেশ্য নিয়ে যাচ্ছি।’
শহিদুল আলম বলেন, ‘এই নৌকাতে অনেক সাংবাদিক আছেন, চিকিৎসক আছেন। সঙ্গে অন্য কর্মীরাও আছেন। কিন্তু আমরা ত্রাণ দেওয়ার অজুহাতে যাচ্ছি তা না। আমরা লড়াই করতে যাচ্ছি, ফিলিস্তিনে আমাদের থাকার–যাওয়ার অধিকার আছে। ইসরায়েল যত মানুষ খুন করেছে এবং যত সাংবাদিক ও যত চিকিৎসক খুন করেছে, সেটার প্রতিবাদ আমরা জানাব।’
শহিদুল আলম আরও বলেন, ‘গত রাতেই মেডিসিন সান ফ্রন্টিয়ার্সের (এমএএফ) ১৪ জন চিকিৎসককে খুন করা হয়েছে। আমরা দেখব, ফ্রান্স সেটার ক্ষেত্রে কী করে। এ পর্যন্ত তারা তেমন কিছুই করেনি, মিষ্টি কথা বলা ছাড়া। এখন কথার সময় পেরিয়ে গেছে। এখন লড়াইয়ের সময়, এখন কাজ করার সময়। আমরা সেটাই করছি নাগরিক হিসেবে।’
বাংলাদেশি এই আলোকচিত্রী বলেন, ‘আমরা যেটা করতে পারি, যেহেতু এই দেশগুলোর নেতা–নেত্রীরা অনেক ক্ষেত্রেই বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। সে ক্ষেত্রে নাগরিক হিসেবে আমরা যেটা করতে পারি, সেটাই আমরা করতে চাইব। আপনাদের ভালোবাসাই আমাদের অনুপ্রেরণা।’
শহিদুল আলম বলেন, ‘যেমনটা দেখা যাচ্ছে, আজ সকালে সমুদ্র বেশ শান্ত। এটা অপ্রত্যাশিত, কারণ মুহূর্তের মধ্যেই এটা বদলে যেতে পারে। গতকাল খুব খারাপ অবস্থা ছিল। আমি একটু অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। তবে এখন পুরো চাঙা, লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত।’
‘আমরা জয়ী হব, ফিলিস্তিন মুক্ত হবে’ জানিয়ে ভিডিওর ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, তাঁদের জাহাজে ৯৬ জন মানুষ আছেন। এরঁ মধ্যে ৮২ জন গণমাধ্যম ও চিকিৎসা পেশাজীবী। এ ছাড়া আয়োজক, ফ্লোটিলা কো-অর্ডিনেশন কমিটির সদস্য ও জাহাজের ক্রুরা আছেন।
আরও পড়ুনফ্লোটিলা আটক আন্তর্জাতিক ‘জলদস্যুতা’, বিশ্বজুড়ে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ: দেখুন ছবিতে২ ঘণ্টা আগে