কুয়াকাটায় মৎস্যজীবী দলের সদস্য জেলেকে পিটিয়ে হত্যা
Published: 27th, June 2025 GMT
পটুয়াখালীর কুয়াকাটা–সংলগ্ন পশ্চিম খাজুরা গ্রামে শহিদুল ফকির (৪০) নামের এক জেলেকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে।
নিহত ব্যক্তির পরিবারের অভিযোগ, এ ঘটনায় সোহেল ফকির নামের এক ব্যক্তি জড়িত। নিহত শহিদুল ফকির পশ্চিম খাজুরা গ্রামের মৃত আলী ফকিরের ছেলে। তিনি স্থানীয় একটি মাছ ধরার ট্রলারের মাঝি হিসেবে কাজ করতেন।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অভিযুক্ত সোহেল ফকির নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের লতাচাপলী ইউনিয়ন শাখার সাবেক সভাপতি নজরুল ফকিরের ছোট ভাই। আর শহিদুল ফকির জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দলের লতাচাপলী ইউনিয়নের পশ্চিম খাজুরা ওয়ার্ড শাখার সদস্য ছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শহিদুল যে ট্রলারে কাজ করতেন, সেখানে তাঁর সহকর্মী আরেক জেলের কাছে সোহেল ফকির ২ হাজার ৪০০ টাকা পাওনা ছিলেন। সোহেল ফকির সে টাকা চাইতে গেলে শহিদুল ফকিরের সঙ্গে এ নিয়ে বাগ্বিতণ্ডা হয়। এরপর অনেক মানুষের উপস্থিতিতে শহিদুলকে বেধড়ক মারধর করেন সোহেল ফকির। একপর্যায়ে একটি কাঠের টুকরা দিয়ে শহিদুলের মাথায় আঘাত করা হয়। এতে শহিদুল লুটিয়ে মাটিতে পড়েন। স্থানীয় লোকজন রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে কুয়াকাটা ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
হাসপাতালের কমিউনিটি মেডিকেল কর্মকর্তা রিয়াজ হোসেন বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই শহিদুল মারা গেছেন।
শহিদুল ফকিরের ছেলে সজল ফকির বলেন, ‘ওই জেলের কাছ থেকে সোহেল ফকিরের পাওনা টাকা আমি মধ্যস্থতা করে আগেই দিয়ে দিয়েছি। তারপরও আমার বাবাকে গালিগালাজ করেছে, এরপর মারধর করেছে। হঠাৎ কাঠের টুকরা দিয়ে মাথায় আঘাত করলে বাবার মৃত্যু হয়।’
লতাচাপলী ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান হাওলাদার বলেন, ‘শহিদুল ফকিরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং জড়িতকে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।’
মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম বলেন, শহিদুলের মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত সোহেল ফকির থানার তালিকাভুক্ত এবং একাধিক মামলার আসামি। তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চাঁদা না দেওয়ায় চেয়ারম্যানের হাত-পা ভাঙ্গলো সন্ত্রাসীরা
চাঁদা না দেওয়ায় যশোরের চৌগাছার ফুলসারা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান ঢালিকে (৪৭) পিটিয়ে হাত পা ভেঙ্গে দিয়েছে দুবৃর্ত্তরা।
ইউনিয়নের মান্দারতলা এলাকায় বুধবার (২৫ জুন) দুপুরে দুবৃর্ত্তরা তাকে পিটিয়ে হাত পা ভেঙ্গে দেয়। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।
জিয়াউর রহমান ঢালি সদ্য কার্যক্রম স্থগিত হওয়া সংগঠন আওয়ামী লীগের ফুলসারা ইউনিয়নের সভাপতি।
চেয়ারম্যানের স্বজনের অভিযোগ, ফুলসারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী মাসুদ চৌধুরী। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর তিনি আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় গত ২৮ এপ্রিল গ্রেপ্তার হন। এরপর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগনেতা জিয়াউর রহমান ঢালি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান।
দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী ও একাধিক মামলার আসামি সন্ত্রাসী লিটনের নেতৃত্বে পাঁচ-ছয়জনের একটি দল জিয়াউর রহমানের কাছে চাঁদা দাবি করে আসছিল। চাঁদা না দেওয়ায় ক্ষুদ্ধ হন লিটন। বুধবার দুপুরে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি ফেরার পথে লিটন ও তাদের সহযোগীরা পথরোধ করে। এরপর অস্ত্র ঠেকিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। পরে হকিস্টিক দিয়ে দিই পা ও হাত ভেঙে দেয়।
ভুক্তভোগী জিয়াউর রহমান ঢালি বলেন, “চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে একটি পক্ষ আমাকে মেনে নিতে পারে না। আমাকে হত্যার চেষ্টা শুরু করে। স্থানীয় সন্ত্রাসী লিটন আমার কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিল। সেই টাকা না দেওয়ায় আমার উপর হামলা চালিয়েছে। মারধরের এক পর্যায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করার চেষ্টা করে। তবে স্থানীয় লোকজন চলে আসায় তারা পালিয়ে যায়।”
যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. হাসিবুর রহমান বলেন, ‘‘আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে হাসপাতালে আনা হয়। তবে বর্তমানে তিনি শঙ্কা মুক্ত।”
যশোর চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ঘটনাটি নিয়ে পুলিশের একটি টিম কাজ শুরু করেছে। তদন্ত চলছে, এখনো কেউ অভিযোগ দেয়নি। তবে জড়িতদের আটকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’’
ঢাকা/রিটন/এস