কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়া উপজেলার ধূরুং হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ স্টেডিয়ামের পূর্ব পাশে পরিত্যক্ত অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে একটি ঝুঁকিপূর্ণ দোতলাবিশিষ্ট কমিউনিটি সেন্টার। এই ভবন নির্মাণ করা হয় ষাটের দশকে। ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ের পর ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে।
তিন দশকের বেশি সময় ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকা এই ভবনের চারপাশে নেই কোনো দরজা ও জানালা। ধ্বংসস্তূপ ভাঙা জানালার ওপর জন্মেছে বিভিন্ন ধরনের গাছ। প্রতিনিয়ত দেয়ালের রড, সিমেন্ট ও ইটগুলো খসে পড়ছে। যেকোনো মুহূর্তে ভবনটি মাটিতে লুটিয়ে পড়ার আশঙ্কা আছে।
কখনো কখনো এখানে মদ-গাঁজা ও ইয়াবা সেবন করতে দেখা যায় বখাটেদের। অবৈধ ও অশ্লীল কাজ করার জন্য এটি একটি নিরাপদ স্থান হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া এখানে স্থানীয় বাসিন্দারা মৃত পশু-পাখি ও ময়লা-আবর্জনা ফেলে ডাস্টবিন হিসেবে ব্যবহার করার কারণে প্রতিনিয়ত দুর্গন্ধ ছড়ায়। এই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের পাশ দিয়ে নিয়মিত চলাফেরা করতে হয় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও স্থানীয় পথচারীদের।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আহ্বান থাকবে ভবনটি ভেঙে ফেলুন। এতে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও স্থানীয় পথচারীরা নিরাপদে যাতায়াত করতে পারবে এই পথ দিয়ে। অন্যদিকে রক্ষা পাবে পরিবেশের ভারসাম্যও।
আবদুল্লাহ নাজিম আল মামুন
কুতুবদিয়া, কক্সবাজার
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সবুজে ঘেরা প্রত্যন্ত গ্রামে বিশাল পুরোনো বাড়ি, মালিক কে
বরগুনার আমতলীর সবুজে ঘেরা প্রত্যন্ত গ্রাম ঘোপখালী। সেই গ্রামে ঢুকলে হঠাৎ চোখে পড়ে বিশাল এক পুরোনো বাড়ি। গাছপালা আর নীরবতার আবরণে ঘেরা, যেন প্রকৃতির সঙ্গে লুকোচুরি খেলে দাঁড়িয়ে আছে বাড়িটি।
একসময় এটি ছিল তিনতলা বাড়ি। তৃতীয় তলার বড় অংশ ধসে পড়ায় এখন কেবল দুইতলা দৃশ্যমান। ধ্বংসপ্রাপ্ত কাঠামোর মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা লাল-ধূসর ইটের এই ভবন যেন নিঃশব্দে উচ্চারণ করে চলেছে হারিয়ে যাওয়া কোনো ইতিহাসের ভাষ্য।
ভেতরে গিয়ে দেখা গেল, বাড়ির আশপাশে সাত-আটটি পৃথক বাড়ি। সেখানে বসবাস করছেন এই বাড়ি নির্মাতার বংশধরেরা। বাড়িটির স্থাপত্যে ব্রিটিশ আমলের প্রভাব সুস্পষ্ট। খিলানযুক্ত বারান্দা, কারুকার্যপূর্ণ থাম ও অলংকৃত জানালাগুলো যেন সময়কে আটকে রেখেছে। বাড়িটির নিচতলার খিলান, মাঝের গম্বুজধর্মী কাঠামো এবং ওপরের জানালায় ব্যবহৃত কলামগুলো থেকে অনুমান করা যায়, এটি ব্রিটিশ আমলের।
বাড়ির ভেতরে ঢুকলে দেখা যায়, কাঠের দরজা-জানালাগুলো ভেঙে গেছে। ছাদ থেকে ঝরে পড়ছে মাটি ও ধুলা। ভবনটির ভেতরে প্রবেশ প্রায় অসম্ভব। একসময় যে কাঠের ছাদ শোভাবর্ধন করত, তা আজ ধসে পড়ার মতো অবস্থায়। জানালার রঙিন কাচ ভেঙে গেছে, খোদাই করা দরজাগুলো চূর্ণ–বিচূর্ণ।
ইট-চুন-সুরকি দিয়ে নির্মিত ভবনটির দেয়ালগুলো ২৪ ফুট চওড়া। ভবনটির প্রতিটি তলায় সুষমভাবে গঠিত খিলান ও জানালা আছে। নিচতলায় আছে ৭টি খিলান (অর্ধবৃত্তাকার), যা একটি দীর্ঘ বারান্দা তৈরি করেছে। এই খিলানগুলো রোমান-গথিক ধাঁচের, যা ব্রিটিশ আমলে প্রচলিত ছিল। প্রতিটি খিলানের ওপর রুফ-কার্নিশে ছোট ছোট অলংকরণ আছে।
ধ্বংসপ্রাপ্ত কাঠামোর মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা এই ভবন যেন নিঃশব্দে উচ্চারণ করে চলেছে হারিয়ে যাওয়া কোনো ইতিহাসের ভাষ্য