বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান বলেছেন, ‍“তারেক রহমানের কাছ থেকে আমরা পরিষ্কার বার্তা পেয়েছি। দলের ভেতরে কোনো ধরনের অনিয়ম, শৃঙ্খলাবিরোধী কাজ ও চাঁদাবাজি-দখলবাজির জায়গা নেই। যারা এটা করার চেষ্টা করবেন, তাদের দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। তাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হবে। দুর্নীতি মুক্ত ও সুশৃঙ্খল বাংলাদেশের জন্য তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।” 

শুক্রবার (২৭ জুন) দুপুরে টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলা মডেল মসজিদ হলরুমে ঈদ পরবর্তী দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার আগে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।

আহমেদ আযম খান বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল কোনো ধরণের হটকারী রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। কোনো ধরণের দখলবাজি-চাঁদাবাজির রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে বিশ্বাস করে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল উদার গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। এই দলটি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্যই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।”

আরো পড়ুন:

‘মতপার্থক্য দূর করে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া খুব কঠিন বিষয় না’

শর্তসাপেক্ষে প্রধানমন্ত্রী পদে সর্বোচ্চ ১০ বছরের বিষয়ে একমত বিএনপি

তিনি বলেন, “জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান একটি দীর্ঘ আন্দোলনের ফসল। গত সাড়ে ১৫ বছরে আমরা রাজপথে রক্ত ও জীবন দিয়েছি। আমরা রাজপথ ছাড়িনি। গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতা, প্রতিটি রাজনৈতিক দলের সক্রিয় অংশগ্রহণে আমরা সফলতা পেয়েছি। জুলাই-আগস্টকে আমরা চিরদিন স্মরণ রাখতে চাই। এ জন্যই আমরা জুলাই-আগস্ট পালন করার জন্য ৩৬ দিনের কর্মসূচি কেন্দ্র থেকে তারেক রহমানের নেতৃত্বে ঘোষিত হয়েছে। আমরা এই ৩৬ দিন পালন করব। আগমী নির্বাচন যাতে সফল-অবাধ ও নিরপেক্ষ হয় সেই জন্য আমরা কাজ করব।”

তিনি আরও বলেন, “ সংস্কার ধীর গতিতে হচ্ছে অথবা দ্রুত গতিতে হচ্ছে, সেই বিষয়টার চেয়েও বড় কথা হলো, এই সংস্কারকে আমাদের এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। উন্নত বাংলাদেশে অগ্রযাত্রায় যেতে হলে আমাদের অবশ্যই সংস্কার প্রয়োজন। এ জন্য আমরা বলেছি, আমাদের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় নির্বাচন, সংস্কার ও বিচার সব কিছু চলমান থাকবে। সংস্কার যেটুকু সম্ভব সরকার চালিয়ে নিচ্ছেন। আমরা সমগ্র জাতি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছি। নির্বাচন হবে, নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকার আসবে এই সংস্কার চলবে ও ফ্যাসিবাদের বিচার হবে।”

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আবুল কাশেম, উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুন আল জাহাঙ্গীর, সাধারণ সম্পাদক নূরনবী আবু হায়াত খান নবু, বাসাইল পৌর বিএনপির সভাপতি আক্তারুজ্জামান তুহিন, সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ পিন্টু, উপজেলা বিআরডিবির চেয়ারম্যান ইউসুফ আলী খান।

ঢাকা/কাওছার/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ জ ল ই আগস ট গণত ন ত র ক ব এনপ র র জন য আম দ র র জন ত

এছাড়াও পড়ুন:

এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর

বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!

কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।

এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)

সম্পর্কিত নিবন্ধ