ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল বলেছেন, অনুকূল পরিবেশে বাংলাদেশের সঙ্গে সব বিষয়ে আলোচনা করতে আগ্রহী তাঁর দেশ। তিনি বলেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সব দিক সামাল দেওয়ার জন্য ঢাকা ও নয়াদিল্লির মধ্যে প্রতিষ্ঠিত কাঠামো রয়েছে। গতকাল শনিবার সাংবাদিকদের এ কথাগুলো বলেন জয়সোয়াল।

ভারতের পররাষ্ট্রবিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনার জন্য সাবেক কূটনীতিক ও বিশেষজ্ঞরা যখন প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তখন এ মন্তব্য করলেন জয়সোয়াল।

বিভিন্ন সূত্র দ্য হিন্দুকে জানিয়েছে, সংসদীয় কমিটির বৈঠকে আলোচনায় অংশ নেবেন সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিব শংকর মেনন, অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল আতা হাসনাইন, ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের সাবেক হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলি দাস এবং জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) অধ্যাপক অমিতাভ মাত্তু।

১৯৯৬ সালের গঙ্গা পানিবণ্টন চুক্তি নবায়ন–সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে জয়সোয়াল বলেন, ‘অনুকূল পরিবেশে আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট সংলাপে সব বিষয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত।’

১৯ জুন চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে এক ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ সম্পর্কে আরেক প্রশ্নের জবাবে জয়সোয়াল বলেন, ‘আমাদের প্রতিবেশী দেশে যেসব পারিপার্শ্বিক ঘটনা ভারতের স্বার্থ ও নিরাপত্তার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে, সেসব ঘটনা আমরা অব্যাহতভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। প্রতিটি দেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক স্বাধীনভাবে গড়ে উঠলেও পারিপার্শ্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় তা মূল্যায়ন করা হয়।’

প্রাথমিক প্রস্তুতির তথ্য অনুযায়ী, বৈঠকে অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, ধর্মীয় মৌলবাদের উত্থান, বাংলাদেশে অস্থিরতার কারণে ভারতে নিরাপত্তা ঝুঁকি এবং ২০২৪ সালের আগস্টে শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর বাংলাদেশ-চীনের ‘কৌশলগত সম্পর্ক’ নিয়ে উদ্বেগ–সংক্রান্ত নানা প্রশ্নের জবাব দেবেন বিশেষজ্ঞরা।

ভারত সম্পর্কে বাংলাদেশের জনমনে যে ধারণা, তা নিয়েও বিশেষজ্ঞরা সংসদীয় কমিটিকে পরামর্শ দেবেন। বিশেষ করে, নয়াদিল্লি বাংলাদেশের জনগণ নয়, বরং পতিত শেখ হাসিনা সরকারের পক্ষ নিয়েছিল—মানুষের এই ধারণা প্রসঙ্গে বিশেষভাবে আলোচনা করবেন তাঁরা।

কমিটি সংসদ সদস্যদের এমন পরামর্শও দিতে পারে যে বাংলাদেশে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে সমন্বয় করা প্রয়োজন।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ আরো ১ মাস বাড়ল

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ আরো এক মাস বাড়িয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।

কমিশনের মেয়াদ ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়ে সোমবার (১১ আগস্ট) রাতে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

গত ১২ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে সাত সদস্যের জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হয়। এই কমিশনের সহ-সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয় সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজকে।
১৫ অগাস্ট ঐকমত্য কমিশনের প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সময় নির্ধারিত ছিল। তার আগেই আরো এক মাস সময় বাড়ানো হলো।

কমিশনে সদস্য হিসেবে রয়েছেন- জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের আইয়ুব মিয়া, পুলিশ সংস্কার কমিশন প্রধান সফর রাজ হোসেন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন প্রধান বদিউল আলম মজুমদার, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন বিচারপতি এমদাদুল হক ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশন প্রধান ইফতেখারুজ্জামান।

কমিশন গত শুক্রবার জানিয়েছে, সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের পদ্ধতি নির্ধারণ এবং জুলাই সনদ মানার বাধ্যবাধকতা নিশ্চিতে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আগামী সপ্তাহে তৃতীয় দফায় বসবে ঐকমত্য কমিশন।

ঢাকা/এএএম/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ