মাগুরা ও ফরিদপুরের সীমান্তবর্তী মধুমতী নদীতে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের জেরে নিখোঁজ এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনার প্রায় দুইদিন পর শুক্রবার (২৭ জুন)  দুপুরে মহম্মদপুর উপজেলার পাচুড়িয়া ঘাট এলাকায় ভাসমান অবস্থায় মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

নিহত শৌখিন খান (৪০) মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার পাল্লা চরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। 

গত বুধবার রাত দুইটার দিকে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার চণ্ডিবিলা মাঝিপাড়া ঘাট এলাকায় ওই সংঘর্ষ হয়। পরিবারের সদস্যরা জানান, শৌখিন খান চার সদস্যের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন। তার একটি প্রতিবন্ধী মেয়ে ও একটি ছেলে আছে। ছেলেটিও অসুস্থ। 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শৌখিন খান ও হুমায়ুন শেখ নামের একজন স্থানীয় ব্যক্তি চায়না জাল ফেলে মাছ ধরতে নদীতে যান। একই সময় ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার নওপাড়া গ্রামের জব্বার মোল্লা, রবিউল মোল্লা ও আরও একজন ব্যক্তি একই এলাকায় মাছ ধরছিলেন। রাত প্রায় আড়াইটার দিকে মাছ ধরা শেষে শৌখিন ও হুমায়ুন বাড়ি ফিরছিলেন। 

এ সময় শৌখিন খানের নৌকা জব্বার মোল্লার জালের ওপর দিয়ে গেলে উভয় পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে জব্বার মোল্লা বইঠা দিয়ে শৌখিনকে আঘাত করলে তিনি নদীতে পড়ে নিখোঁজ হন।

নিহত ব্যক্তির চাচাতো ভাই আলী আফজাল বলেন, ‘‘আমার ভাইকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। হঠাৎ ঝগড়া বাধিয়ে জব্বার ও রবিউল মোল্লা তাকে মেরে পানিতে ফেলে দিয়েছে। ভাইয়ের স্ত্রী দুই সন্তান নিয়ে দিশাহারা। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।’’

অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পলাতক থাকায় তাদের ভাষ্য পাওয়া যায়নি।

মহম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুর রহমান বলেন, ‘‘মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। যেহেতু ঘটনাটি ফরিদপুরের মধুখালী থানার আওতাধীন, সেহেতু মামলাটি সেখানেই হবে।’’

শাহীন//

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপজ ল র মরদ হ

এছাড়াও পড়ুন:

অসুস্থ ব্যক্তির জন্য দোয়া কীভাবে করব

ইসলামে অসুস্থতা একটি পরীক্ষা হিসেবে বিবেচিত হয়, যা মুমিনের ধৈর্য ও আল্লাহর উপর ভরসাকে শক্তিশালী করে। অসুস্থ ব্যক্তির জন্য দোয়া করা একটি ফজিলতপূর্ণ আমল, যা রোগীর জন্য শান্তি ও সুস্থতা নিয়ে আসে এবং দোয়াকারীর জন্য আল্লাহর রহমত অর্জনের মাধ্যম।

মহানবী (সা.) অসুস্থ ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ দোয়া ও আমল শিখিয়েছেন, যা হাদিসে বর্ণিত আছে।

রোগীকে দেখতে গিয়ে তার জন্য দোয়া করা এবং মনোবল বাড়ানো সুন্নাহ। রোগীকে ধৈর্য ধরতে এবং আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া আদায় করতে উৎসাহিত করা উচিত।অসুস্থ ব্যক্তির জন্য দোয়া

ইসলামে অসুস্থ ব্যক্তির জন্য দোয়া করার ব্যাপারে নবীজি (সা.) কয়েকটি নির্দিষ্ট দোয়া শিখিয়েছেন। এই দোয়াগুলো রোগী নিজে পড়তে পারেন বা অন্য কেউ রোগীর জন্য পড়তে পারেন। নিচে কয়েকটি প্রধান দোয়া উল্লেখ করা হলো:

১. নবীজি (সা.)-এর শেখানো দোয়া

আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) অসুস্থ ব্যক্তির জন্য এই দোয়া পড়তেন:

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা রাব্বান নাস, আযহিবিল বাস, ইশফি আনতাশ শাফি, লা শিফায়া ইল্লা শিফাউক, শিফাআন লা ইউগাদিরু সাকামা।

অর্থ: হে আল্লাহ! মানুষের প্রভু, রোগ দূর করো, সুস্থতা দাও, তুমিই সুস্থতা দানকারী। তোমার সুস্থতা ছাড়া কোনো সুস্থতা নেই, এমন সুস্থতা দাও যা কোনো রোগ রাখে না। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫৭৪৩)

পড়ার নিয়ম:

রোগীর ডান হাত দিয়ে তার কপাল বা শরীরের ব্যথার স্থানে হাত রেখে এই দোয়া পড়া।

তিনবার বা সাতবার পড়া উত্তম।

রোগী নিজে পড়তে পারেন বা অন্য কেউ রোগীর জন্য পড়তে পারেন।

আরও পড়ুননববিবাহিতদের জন্য তিনটি দোয়া২১ জুলাই ২০২৫

২. সুরা ফাতিহা পড়া

সুরা ফাতিহা রোগ নিরাময়ের জন্য অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। হাদিসে আছে, সুরা ফাতিহা শিফা বা নিরাময়ের জন্য পড়া যায়। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, একজন সাহাবি সুরা ফাতিহা পড়ে একজন রোগীকে সুস্থ করে দিয়েছিলেন, এবং নবীজি (সা.) এটি অনুমোদন করেছেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫৭৩৬)

যখন তুমি কোনো মুসলিম ভাইয়ের জন্য তার অনুপস্থিতিতে দোয়া করো, ফেরেশতারা বলে, ‘আমিন, তোমার জন্যও তা–ই হোক।সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২,৭৩২

পড়ার নিয়ম:

সুরা ফাতিহা সাতবার পড়ে রোগীর শরীরে ফুঁ দেওয়া।

রোগীর কপালে বা ব্যথার স্থানে হাত রেখে পড়া উত্তম।

৩. সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস

এই তিনটি সুরা (সুরা ইখলাস: ১১২, সুরা ফালাক: ১১৩, সুরা নাস: ১১৪) অসুস্থতা থেকে সুস্থতা ও সুরক্ষার জন্য পড়া হয়। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) অসুস্থ হলে এই তিনটি সুরা পড়তেন এবং শরীরে ফুঁ দিতেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস নং: ৫,০১৭)

তিনটি সুরা তিনবার করে পড়া।

পড়ার পর হাতে ফুঁ দিয়ে রোগীর শরীরে মুছে দেওয়া।

৪. সাধারণ দোয়া

অসুস্থ ব্যক্তির জন্য নিজের ভাষায়ও দোয়া করা যায়। উদাহরণ: ‘হে আল্লাহ! আমার/তার রোগ দূর করো, সুস্থতা দান করো, তুমি সব ক্ষমতার মালিক।’ নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘দোয়া ইবাদতের মূল।’ (সুনান তিরমিজি, হাদিস: ৩,৩৭১)

নিজের ভাষায় দোয়া করার সময় আন্তরিকতা ও আল্লাহর ওপর ভরসা রাখা জরুরি।

আরও পড়ুনসন্তানকে বদ দোয়া করবেন না২১ এপ্রিল ২০২৫অসুস্থ ব্যক্তির জন্য আমল

নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যায়, তার জন্য ফেরেশতারা দোয়া করেন: তুমি পবিত্র হও, তোমার পথ পবিত্র হোক এবং তুমি জান্নাতে প্রবেশ করো।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২,৫৬৮)

রোগীকে দেখতে গিয়ে তার জন্য দোয়া করা এবং মনোবল বাড়ানো সুন্নাহ। রোগীকে ধৈর্য ধরতে এবং আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া আদায় করতে উৎসাহিত করা উচিত। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যে মুমিন ধৈর্যের সঙ্গে অসুস্থতা সহ্য করে, আল্লাহ তার গুনাহ মাফ করেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫,৬৫২)

অসুস্থ ব্যক্তির জন্য দোয়া আল্লাহর কাছে কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, কারণ রোগী দুর্বল অবস্থায় থাকে এবং তার দোয়া আল্লাহর কাছে বিশেষ মর্যাদা পায়।

অসুস্থ ব্যক্তির জন্য দোয়া করার ফজিলত অপরিসীম। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যখন তুমি কোনো মুসলিম ভাইয়ের জন্য তার অনুপস্থিতিতে দোয়া করো, ফেরেশতারা বলে, ‘আমিন, তোমার জন্যও তা–ই হোক।’’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২,৭৩২)

এছাড়া, অসুস্থ ব্যক্তির জন্য দোয়া আল্লাহর কাছে কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, কারণ রোগী দুর্বল অবস্থায় থাকে এবং তার দোয়া আল্লাহর কাছে বিশেষ মর্যাদা পায়।

দোয়ার পাশাপাশি চিকিৎসা গ্রহণ করা, কারণ নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘প্রতিটি রোগের জন্য চিকিৎসা রয়েছে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫,৬৭৮)

দোয়া করার সময় শিরক বা অপ্রমাণিত পদ্ধতি এড়ানো দরকার। শুধু কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত দোয়া ব্যবহার করব আমরা।

আরও পড়ুনদোয়া কীভাবে করতে হয়২০ এপ্রিল ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • উপদেষ্টাদের বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ থাকে, তাহলে নিয়ে আসেন না কেন: দুদক চেয়ারম্যান
  • দাম্পত্য–জীবনে মতভেদ হলে ইসলামের নির্দেশনা
  • এনসিসি ব্যাংকের পরিচালকের শেয়ার গ্রহণের ঘোষণা
  • জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষায় বদলে যেতে পারে শিক্ষার্থীর জীবন
  • পুরো আসনের ফল বাতিল করতে পারবে ইসি, ফিরছে ‘না’ ভোট 
  • লালমনিরহাটে সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় একজন গ্রেপ্তার
  • মৌচাকে হাসপাতালের পার্কিংয়ে প্রাইভেটকারে ২ মরদেহ 
  • তুরস্কে ভূমিকম্পে একজন নিহত, ধসে পড়েছে ১৬টি ভবন
  • তুরস্কে শক্তিশালী ভূমিকম্পে একজনের মৃত্যু, আহত ২৯
  • অসুস্থ ব্যক্তির জন্য দোয়া কীভাবে করব