ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নয়, ইইউতে প্রশ্ন স্পেনের
Published: 27th, June 2025 GMT
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়ন মস্কোর বিরুদ্ধে মোট ১৮টি নিষেধাজ্ঞামূলক প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। সেই একই নীতিতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কেন নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে না, ইইউতে এই প্রশ্ন তুলেছেন স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেড্রো স্যানচেজ। আয়ারল্যান্ড তাঁর এ বক্তব্য সমর্থন করেছে।
সম্প্রতি ইইউ নেতাদের হাতে একটি প্রতিবেদন এসেছে। সেটি প্রকাশ্যে আনা না হলেও ডিডব্লিউয়ের (ডয়েচে ভেলে) হাতে সেই প্রতিবেদন পৌঁছেছে। একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার তৈরি করা ওই প্রতিবেদনে গাজার পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে দেখানো হয়েছে, ইসরায়েলের আক্রমণের ফলে প্রায় ৫৫ হাজার ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে বহু সাধারণ মানুষ আছে। মৃত্যু হয়েছে গাজায় ত্রাণ নিয়ে যাওয়া মানবাধিকারকর্মীদের। ইসরায়েল খাবার ও ওষুধ ঢুকতে বাধা দিয়েছে, যার ফলে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই সবকিছুই মানবাধিকারবিরোধী কাজ বলে মন্তব্য করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।
ওই প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী সরব হয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, গাজায় ইসরায়েল যা করেছে, তা এককথায় ‘যুদ্ধাপরাধের বিপর্যয়কর পরিস্থিতি’ বলা যেতে পারে। এর জন্য ইসরায়েলের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি বাতিল করে নিষেধাজ্ঞা জারি করা উচিত বলে জানিয়েছেন তিনি। ইসরায়েল অবশ্য বারবার তাদের কৃতকর্ম যুদ্ধাপরাধ নয় বলে দাবি করেছে। তারা বলেছে, তাদের লড়াই শুধু হামাসের বিরুদ্ধে।
কিন্তু স্পেনের বক্তব্য, ইসরায়েল ইইউর সঙ্গে সই করা চুক্তির ২ নম্বর ধারা অমান্য করেছে। এর ভিত্তিতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করা উচিত বলে দাবি করেছে স্পেন। আয়ারল্যান্ড স্পেনকে সমর্থন করলেও অধিকাংশ দেশ স্যানচেজের বক্তব্যকে সমর্থন করেনি। নিয়ম হলো এমন নিষেধাজ্ঞা জারি করতে হলে ইইউর ২৭টি দেশকেই সহমত হতে হবে।
জার্মানি, হাঙ্গেরি, বুলগেরিয়া, অস্ট্রিয়া এখনো ইসরায়েলের বন্ধুদেশ। জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস বলেছেন, ‘স্পেনের এই দাবি জার্মানির সরকারের পক্ষে মেনে নেওয়া অসম্ভব।’
ইইউর ওপর ইসরায়েলের নির্ভরশীলতা
ইসরায়েলের কেনা এক-তৃতীয়াংশ জিনিস আসে ইউরোপীয় দেশগুলো থেকে। তাদের সঙ্গে বছরে ইইউর ৫০ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইইউ ইসরায়েলকে সাহায্য করে থাকে। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ইইউর ২৭টি দেশের মধ্যে ১৫টি দেশ যদি নিষেধাজ্ঞার পক্ষে কথা বলে, তাহলে আংশিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা সম্ভব। কিন্তু বাস্তবে তা-ও হবে না বলে তাঁরা মনে করছেন।
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ইইউতে এই বিতর্ক ইসরায়েলকে শাস্তি দেওয়ার জন্য হচ্ছে না। তাঁরা ইসরায়েলকে সতর্ক করে দিতে চাইছেন। এরপরও ইসরায়েল একই কাজ চালিয়ে গেলে ইইউ আরও কঠোর হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র ব
এছাড়াও পড়ুন:
মাদারীপুরে থানা চত্বর থেকে পালিয়ে যাওয়া মাদক মামলার আসামি গ্রেপ্তার
মাদারীপুরের রাজৈর থানা চত্বর থেকে মাদক মামলার আসামি অনিমেষ ওরফে গণি গাইন (৩২) পালিয়ে যাওয়ার ১০ ঘণ্টা পর ফের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গতকাল সোমবার রাত ১০টার দিকে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার উজানী ইউনিয়নের পাটকেলবাড়ী গ্রামের আত্মীয় অসিত রায়ের বাড়ি থেকে অনিমেষকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এর আগে গতকাল দুপুর ১২টার দিকে আসামি অনিমেষকে রাজৈর থানা চত্বর থেকে আদালতে হাজির করতে পুলিশের গাড়িতে ওঠানোর সময় পুলিশ সদস্যদের ধাক্কা দিয়ে তিনি পালিয়ে যান। তিনি উপজেলার কদমবাড়ি ইউনিয়নের মধ্যপাড়া এলাকার ক্ষিতিশ চন্দ্র গাইনের ছেলে
থানা-পুলিশ সূত্র জানায়, রোববার রাতে অভিযানে চালিয়ে অনিমেষ গাইনসহ মোট চারজনকে আটক করা হয়। এ সময় তাঁদের কাছে গাঁজা ও ইয়াবা পাওয়া যায়। তাঁদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলা করে রাজৈর থানা-পুলিশ। পরে গতকাল দুপুর ১২টার দিকে আসামিদের মাদারীপুর আদালতে নেওয়ার জন্য পুলিশের গাড়িতে তোলা হয়। এ সময় কৌশলে হাতকড়ার ভেতর থেকে হাত বের করে পুলিশ সদস্যদের ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায় অনিমেষ। এ ঘটনায় আহসান হাবিব ও সাদ্দাম হোসেন নামে রাজৈর থানার দুই পুলিশ সদস্যকে গতকাল সন্ধ্যায় প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাঁদের পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পুলিশকে ধাক্কা দিয়ে কৌশলে পালিয়ে যাওয়া আসামিকে অভিযান চালিয়ে গতকাল রাত ১০টার দিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসামি পালিয়ে গোপালগঞ্জ জেলায় তাঁর ভায়রার বাড়িতে আত্মগোপনে ছিল। আজ সকালে আসামি অনিমেষ গাইনকে আদালতে পাঠানো হয়। বিচারক তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।