Samakal:
2025-11-17@11:03:23 GMT

দাদার বাড়ির ঈদের স্মৃতি

Published: 27th, June 2025 GMT

দাদার বাড়ির ঈদের স্মৃতি

নীলফামারীর সরকারপাড়ায় আমার দাদার বাড়ি। এই ঈদে আমি আমার বড় কাজিন ইথেন ভাইয়ার সাথে বাবা-মাকে ছাড়া আগেই নীলফামারী যাই। আমার ভাইসহ বাবা-মা পড়ে আসেন। এবার ঈদে দাদার বাড়িতে অনেক মজা করেছি। যখন কিছু করার ছিলো না তখন আমি টিনটিন কমিকস পড়েছি। ঈদের আগে বাবা আমাকে ১৩টি টিনটিন কমিকস কিনে দিয়েছেন। এবার আমি অনেক কাঁচা-পাকা আম এবং কাঁঠাল খেয়েছি। বাবার মতো কাঁঠাল আমার অনেক প্রিয় ফল। এই প্রথম নিজের চোখের সামনে গাছ থেকে পাকা আম পড়তে দেখেছি। সমস্যা হলো, পাকা আম গাছ থেকে পড়লে ফেটে নষ্ট হয়ে যায়; তাই ঠিকমতো খাওয়া যায় না। দাদাবাড়ি থেকে একটু দূরে নদী দেখতে গিয়েছিলাম। আমি, ছোট ভাই আফসানসহ প্রথমবার নদী পার হয়ে ওপাড়ে গিয়েছিলাম। রোদের কারণে নদীতীরের বালু অনেক গরম ছিলো। এবার গরমের কারণে বাবা আমাকে গরুর হাটে যেতে দেননি। আমার বড় আম্মু আমাকে তাঁর হাতের তৈরি দই খাইয়েছেন। বড় আব্বু বাজার থেকে গুলগুলা কিনে এনে খাইয়েছেন। ফুটবল খেলেছি আরাফ ভাইয়া, সোপান ভাইয়া এবং আফসানদের সঙ্গে। আমি গোলকিপার ছিলাম এবং ৩-৪টা গোল সেভ করেছি। আমার আপিরা রাতের বেলা অনেক ভূতের গল্প বলেছে। এক দাদু বিডিআর ছিলেন। তিনি যুদ্ধের গল্প শুনিয়েছেন আমাদের। 
ঈদের নামাজ পড়তে বড়দের সঙ্গে ঈদগাহে যাই। নামাজ শেষে কোলাকুলি করি, দাদার কবরে দোয়া করি এবং ফিরে এসে গরু কোরবানি দেখি। আমি আবার দাদাবাড়ি যেতে চাই। আমার দাদাবাড়ি ভালোবাসি। তোমরাও নিশ্চয়ই গ্রামের বাড়ি পছন্দ করো!
বয়স : ১+৩+৪ বছর; দ্বিতীয় শ্রেণি, গবর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুল, ঢাকা 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর

বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!

কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।

এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)

সম্পর্কিত নিবন্ধ