রাজশাহীতে হোটেল ঘিরে আওয়ামী লীগ নেতাকে বের করে পুলিশে সোপর্দ
Published: 28th, June 2025 GMT
রাজশাহী নগরের একটি হোটেল ঘিরে আওয়ামী লীগ নেতাকে বের করে পুলিশে সোপর্দ করেছেন একদল লোক। ওই নেতা হলেন তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাইনুল ইসলাম (স্বপন)। গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে নগরের সাহেববাজার জিরো পয়েন্ট এলাকার একটি হোটেলে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাত ১০টার দিকে বিএনপির নেতা–কর্মী পরিচয়ে একদল লোক সাহেববাজার বড় মসজিদের পাশে হোটেলটির সামনে অবস্থান নেন। তাঁরা দাবি করেন, হোটেলের ভেতরে মাইনুল ইসলাম অবস্থান করছেন। হোটেল কর্তৃপক্ষ তা অস্বীকার করলেও পরে সেখানে ভিড় বাড়তে থাকে। খবর পেয়ে মাইনুলের মেয়ে ঘটনাস্থলে যান। রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা তাঁকে হোটেল থেকে বের করে আনেন এবং পুলিশ তাঁকে নিয়ে যায়।
রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা এরশাদ আলী বলেন, ‘শুনেছি রাতে একটি হোটেলে আওয়ামী লীগের লোকজন গোপনে মিটিং করছিলেন। পরে জনতা ঘিরে রাখে। সেখানে বিএনপির নেতা-কর্মীরা থাকতে পারেন। তবে সেখানে কোনো মব হয়নি। পুলিশ তাঁকে আটক করে নিয়ে গেছে। নেতা-কর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, কোনো ধরনের মব তৈরি করা যাবে না। আর রাজশাহীতে কোনো মবও হয়নি।’
বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাক আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, হোটেলের সামনে লোকজন জমায়েত হওয়ার খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়। পরে তাঁকে আটক করে থানায় আনা হয়। কেউ তাঁকে মারধর করেনি। আজ শনিবার তাঁকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় করা একটি মামলায় আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গাজা নগরীর পথে ইসরায়েলি ট্যাংক, পালাচ্ছেন বাসিন্দারা
ফিলিস্তিনের গাজায় অভিযানের পরিসর আরও বাড়িয়েছে ইসরায়েল। এবার গাজা নগরী দখলে নিতে স্থল অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে এই নগরীর ১০ লাখ বাসিন্দার জীবন ঝুঁকিতে পড়েছে। ইতিমধ্যে গাজা নগরীর পূর্বাঞ্চল থেকে বাসিন্দারা বাড়িঘর ছাড়তে শুরু করেছেন। বিমান হামলার শব্দ শোনা যাচ্ছে, তাল আল-হাওয়ার দক্ষিণাঞ্চল দিয়ে এগিয়ে আসছে ট্যাংক।
এদিকে ইসরায়েলের হামলায় ২৪ ঘণ্টায় আরও ১২৩ জন নিহত হয়েছেন বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বুধবার জানিয়েছে। তাঁদের মধ্যে ত্রাণ নিতে যাওয়া ২১ ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিও রয়েছেন।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বুধবার বলেছে, তারা গাজা উপত্যকায় নতুন অভিযানের রূপরেখা অনুমোদন দিয়েছে। গাজার সবচেয়ে বড় নগরী দখলে নিতে ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার আহ্বান জানানোর কয়েক দিন পর সামরিক বাহিনী নতুন এ অভিযান অনুমোদন করল।
সামরিক বাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর আভিযানিক পরিকল্পনার মূল রূপরেখা অনুমোদন দিয়েছেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আইয়াল জামির।
কবে নাগাদ ইসরায়েলি সেনারা গাজা নগরীতে প্রবেশ করবেন, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা জানায়নি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন সরকার। তবে গাজার গণমাধ্যম দপ্তরের মহাপরিচালক ইসমাইল আল-ছাওয়াবতা বুধবার বলেন, গাজা নগরীতে আগ্রাসী অনুপ্রবেশ অব্যাহত রেখেছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী।
২২ মাস ধরে গাজায় আগ্রাসন চালিয়ে আসছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে সেখানকার বেশির ভাগ এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। গাজার ২২ লাখ বাসিন্দার বেশির ভাগই দফায় দফায় বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। প্রায় অর্ধেক বাসিন্দা আশ্রয় নিয়েছেন গাজা নগরীতে।
স্থল অভিযানের বিষয়ে গাজার গণমাধ্যম দপ্তরের মহাপরিচালক আরও বলেন, এসব হামলা পোড়া মাটি নীতি এবং বেসামরিক স্থাপনা পুরোপুরি ধ্বংসের মাধ্যমে নতুন পরিস্থিতি তৈরির মারাত্মক উসকানিরই অংশ।
গাজা নগরীর তাল আল-হাওয়া এলাকার বাসিন্দা সাবাহ ফাতোম (৫১) ওই এলাকায় ব্যাপক বিস্ফোরণ শুনতে পাওয়ার কথা টেলিফোনে বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান। এই নারী বলেন, অনেক বিমান হামলার শব্দ শোনা যাচ্ছে। তাল আল-হাওয়ার দক্ষিণাঞ্চল দিয়ে ট্যাংক এগিয়ে আসছে। আকাশে ড্রোন উড়ছে। বহু মানুষ বাড়িঘর ও তাঁবু ছেড়ে শহরের পশ্চিম দিকে ছুটছেন।
এদিকে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ২৪ ঘণ্টায় আরও ১২৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে বুধবার জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ত্রাণ নিতে যাওয়া ২১ ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিও রয়েছেন। এ ছাড়া ২৪ ঘণ্টায় আহত হয়েছেন ৪৩৭ জন।
ইসরায়েলি অবরোধের কারণে খাবার না পেয়ে একই সময়ে অনাহারে মারা গেছেন আট ফিলিস্তিনি, তাঁদের মধ্যে তিনজন শিশু। এ নিয়ে অনাহারে ২৩৫ ফিলিস্তিনি মারা গেলেন, যাঁদের মধ্যে ১০৬টি শিশু। এ ছাড়া ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় ৬১ হাজার ৭২২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন দেড় লাখের বেশি।
আরও পড়ুনইসরায়েলি সেনাপ্রধানই কি নেতানিয়াহুর লাগাম টেনে ধরবেন৭ ঘণ্টা আগে