বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় বিএনপির নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। শনিবার নগরীর অশ্বিনী কুমার হলে পুরো বিভাগের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন ফরম বিতরণ ও সদস্য নবায়ন কর্মসূচির কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ভাইস চেয়ারম্যান ও বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক টিম প্রধান আব্দুল আউয়াল মিন্টু।

মিন্টু বক্তৃতায় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘গত ২০ বছরে নতুন ভোটাররা ভোট দিতে পারেননি। জীবনের প্রথম ভোটটি দেয়ার জন্য তারা মুখিয়ে আছেন। নতুন ভোটারদের দলের সদস্য করা না হলে তারা অন্য দলে ভিড়ে যাবেন। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে এ সুযোগে আওয়ামী সন্ত্রাসী, দুর্নীতিবাজ, দাগি আসামিরা বিএনপিতে ঢুকে পড়তে না পারেন।’

তিনি বলেন, ‘নতুন সদস্য বাড়ানো না হলে বিএনপি দেশের সবচেয়ে বড় দলের আধিপত্য থাকবে না। যারা ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাবের প্রতি আস্থাশীলরা তারাই বিএনপির সদস্য হতে পারবেন। সদস্য সংগ্রহে যারা দায়িত্ব নিয়েছেন এবং পেয়েছেন, ২ মাস পড়ে দেখবো জেলায় জেলায় কতটা সদস্য বাড়ল।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ভেতর নেতৃত্বের প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকতে পারে, দ্বন্দ নয়। অন্য দলে প্রার্থী খুঁজতে হয়। আর বিএনপিতে অনেক প্রার্থীর ভিড়ে বাছাই করতে হয়। আগামী নির্বাচনে দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। যাতে আমাদের দল ক্ষমতায় যেতে পারে।’

কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল হক নান্নুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চেয়ারপার্সনের উপদেস্টা মজিবর রহমান সরোয়ার, ড.

জিয়াউদ্দিন হায়দার, যুগ্ন মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ, তারিকুল আলম তেনজিং প্রমুখ।

উৎসবমুখর এ অনুষ্ঠানে ছয় জেলার দায়িত্বশীলরা উপস্থিত ছিলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন বরিশাল মহানগর আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বর শ ল ব এনপ সদস য স বর শ ল ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর

বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!

কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।

এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)

সম্পর্কিত নিবন্ধ