স্তন ক্যান্সারের চিকিৎসা চলাকালে করণীয়
Published: 29th, June 2025 GMT
ক্যান্সার এমন একটি রোগ যা কেবল শারীরিক সমস্যা তৈরি করে না, এই রোগের চিকিৎসা চলাকালে নানা রকম মানসিক সমস্যাও দেখা দেয়। শারীরিক কার্যকলাপ বিভিন্ন অনুভূতি মোকাবিলা করার একটি কার্যকর উপায় হতে পারে। আবেগ নিয়ে কথা বলা আপনাকে ভালো বোধ করতে সাহায্য করতে পারে। এ ছাড়া বন্ধুর সাথে কিছুদূর হাঁটা, বনের মধ্য দিয়ে হাঁটা, অথবা পানিতে সাঁতার কাটা ক্যান্সার মোকাবিলার অন্যতম উপায় হতে পারে। ২০২৩ সালের একটি ছোট গবেষণায় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে, যোগব্যায়াম স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।
গবেষণায় দেখা গেছে যে, মানসিক সুবিধার পাশাপাশি, শক্তি প্রশিক্ষণ এবং অ্যারোবিক ব্যায়ামের মতো শারীরিক কার্যকলাপ ক্যান্সার চিকিৎসার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো কাটিয়ে ওঠার শক্তি প্রদান করে।
আবেগ সম্পর্কে কথা বলুন
ক্যান্সারের চিকিৎসা চলাকালে আপনার অনুভূতি সম্পর্কে একজন ভালো বন্ধু বা পরিবারের সদস্যের সাথে কথা বলার চেষ্টা করুন। আগে ক্যান্সার আক্রান্ত হয়েছিল কিন্তু সেরে উঠেছে এমন মানুষের সঙ্গে কথা বলতে পারেন। এতে তার কথাগুলো থেরাপির মতো কাজ করতে পারে।
আরো পড়ুন:
স্ক্রিন টাইম কমানোর জন্য এই অ্যাপগুলো ব্যবহার করতে পারেন
আপনার সামনে কেউ ধীরে হাঁটলেই রাগ হয়?
কান্না করুন
কান্না এলে কাঁদুন। কান্না আপনার স্বাস্থ্যের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। বিজ্ঞান এর সমর্থন করে। গবেষকরা কান্নার পর শরীরের পরিবর্তনগুলো দেখেছেন। ২০২০ সালের একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, কান্না শ্বাস-প্রশ্বাস এবং হৃদস্পন্দন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে।
লিখুন
আপনার চিন্তাভাবনা এবং অনুভূতি লিখে রাখতে পারেন। এতে আপনার মাথায় কী ঘটছে বুঝতে পারবেন। চিঠির আকারে কারও উদ্দেশ্যে এসব কথা লিখতে পারেন। নিজের কাছে, ক্যান্সারের কাছে, অথবা অন্য কারো কাছে।
কিছু শিল্প তৈরি করুন
যদি লেখা আপনার ভালো না লাগে তাহলে সৃজনশীল অন্য কিছু করার কথা বিবেচনা করতে পারেন। রঙিন পেন্সিল, রঙ, কাগজ বা মডেলিং ক্লে তৈরি করতে পারেন। জের উপর কোনও বাড়তি প্রত্যাশা চাপিয়ে রাখবেন না। সৃজনশীল প্রক্রিয়ায় আনন্দ খুঁজে নিন।
২০১৬ সালের একটি গবেষণায় আরও দেখা গেছে যে, শিল্পকর্ম তৈরি করলে কর্টিসল নামক স্ট্রেস হরমোনের মাত্রা কমে যেতে পারে।
সূত্র: হেলথলাইন
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ব স থ যকর জ বন র একট আপন র
এছাড়াও পড়ুন:
এনবিআর চাকরিকে ‘অত্যাবশ্যকীয়’ সেবা ঘোষণার সিদ্ধান্ত, কাজে না ফিরলে কঠোর ব্যবস্থা
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সব শ্রেণির চাকরিকে ‘অত্যাবশ্যকীয়’ সেবা ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। আজ রোববার বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রেস উইংয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অতি জরুরি আমদানি-রপ্তানি ও বৈদেশিক বাণিজ্যের কার্যক্রম চলমান রাখার জাতীয় স্বার্থে সরকার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আওতাধীন সব কাস্টমস হাউস, আইসিডি, বন্ড কমিশনারেট এবং শুল্ক স্টেশনসমূহের সব শ্রেণির চাকরিকে অত্যাবশ্যকীয় সার্ভিস ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গতকাল শনিবার থেকে দেশের সব কর, ভ্যাট ও কাস্টমস দপ্তর বন্ধ রেখে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ও ‘মার্চ টু এনবিআর কর্মসূচি’ পালন করছেন। আজও চলছে এই কর্মসূচি। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে আন্দোলনকারীরা আজ সকাল থেকে আগারগাঁওয়ের প্রধান কার্যালয়ের বাইরে অবস্থান নেন। এতে দেশের আমদানি ও রপ্তানি কার্যক্রমে ‘স্থবিররা’ দেখা দেয়।
এদিকে আজ দুপুরে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, এদিন এনবিআরের আন্দোলনকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে কোনো বৈঠক হচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘কর্মকর্তারা শাটডাউন কর্মসূচি পালন করতে চাইলে করুক।’
এর পরপরই সরকারের সিদ্ধান্তের কথা জানানো হলো।
বিবৃতিতে বলা হয়, দেশের বাজেট ব্যবস্থাপনায় উন্নয়নমুখী কার্যক্রম পরিচালনার সবচেয়ে বড় সীমাবদ্ধতা হলো দুর্বল রাজস্ব সংগ্রহ ব্যবস্থা। রাষ্ট্রের প্রয়োজনের তুলনায় আমাদের রাজস্ব সংগ্রহ অনেক কম। এর মূল কারণ হলো- আমাদের রাজস্ব আহরণ ব্যবস্থাপনার নানা দুর্বলতা, অনিয়ম ও দুর্নীতি। এর পরিপ্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তী সরকার সব অংশীজনের পরামর্শ অনুযায়ী জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রেস উইংয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সরকার গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছে যে, রাজস্ব সংস্কারের কাজকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নজিরবিহীনভাবে গত ২ মাস ধরে আন্দোলন করছে। এর মাধ্যমে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য, আমদানি-রপ্তানি এবং রাজস্ব আদায় কার্যক্রম অন্যায় ও অনৈতিকভাবে ব্যাহত করছে। আন্দোলনের নামে তারা চরম দুর্ভোগ তৈরি করেছে, সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য। সংস্কারের বিরোধিতা ছাড়াও অর্থবছরের শেষ ২ মাসে তারা রাজস্ব আদায় কার্যক্রম মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত করেছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এই তথাকথিত আন্দোলন পরিকল্পিত ও দুরভিসন্ধিমূলক, যা জাতীয় স্বার্থ এবং নাগরিক অধিকারের চরম পরিপন্থি। সরকারের পক্ষ থেকে রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের দাবি বিবেচনায় নেওয়ার সুস্পষ্ট ঘোষণা দেওয়া হয় এবং আলোচনায় আসার আহ্বান জানালেও তারা তা অগ্রাহ্য করে। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার গ্রহণযোগ্য সমাধান না করে তারা আন্দোলনের নামে অনমনীয় অবস্থান নিয়ে ক্রমাগত দেশের অর্থনীতির ক্ষতি করে চলেছে। এ পরিস্থিতিতে, অতি জরুরি আমদানি-রপ্তানি ও বৈদেশিক বাণিজ্যের কার্যক্রম চলমান রাখার জাতীয় স্বার্থে সরকার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আওতাধীন সব কাস্টমস হাউস, আইসিডি, বন্ড কমিশনারেট এবং শুল্ক স্টেশনসমূহের সব শ্রেণির চাকরিকে অত্যাবশ্যকীয় সার্ভিস ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, আমরা আশা করি, অনতিবিলম্বে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মস্থলে ফিরে যাবেন এবং আইনবিরোধী ও জাতীয় স্বার্থবিধ্বংসী কর্মকাণ্ড থেকে সরে আসবেন। অন্যথায় দেশের জনগণ ও অর্থনীতির সুরক্ষায় সরকার কঠোর হতে বাধ্য হবে।
গত ১২ মে এনবিআর বিলুপ্ত করে রাজস্বনীতি ও ব্যবস্থাপনা বিভাগে বিভক্ত করে অধ্যাদেশ জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়। এর পর থেকে এনবিআর বিলুপ্তি রোধসহ কয়েকটি দাবিতে সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে আন্দোলন করছেন। গত ২৫ মে অর্থ মন্ত্রণালয় ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে অধ্যাদেশটি সংশোধন করার আশ্বাস দিলে আন্দোলন প্রত্যাহার করা হয়। এর পর ২২ জুন থেকে চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় পূর্বঘোষণা অনুযায়ী গতকাল সারাদেশে এনবিআরের কর, মূসক ও শুল্ক দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কমপ্লিট শাটডাউন এবং মার্চ টু এনবিআর কর্মসূচি পালন করেন। আজও চলছে এই কর্মসূচি।