ক্যান্সার এমন একটি রোগ যা কেবল শারীরিক সমস্যা তৈরি করে না, এই রোগের চিকিৎসা চলাকালে নানা রকম মানসিক সমস্যাও দেখা দেয়। শারীরিক কার্যকলাপ বিভিন্ন অনুভূতি মোকাবিলা করার একটি কার্যকর উপায় হতে পারে। আবেগ নিয়ে কথা বলা আপনাকে ভালো বোধ করতে সাহায্য করতে পারে। এ ছাড়া বন্ধুর সাথে কিছুদূর হাঁটা, বনের মধ্য দিয়ে হাঁটা, অথবা পানিতে সাঁতার কাটা ক্যান্সার মোকাবিলার অন্যতম উপায় হতে পারে। ২০২৩ সালের একটি ছোট গবেষণায় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে, যোগব্যায়াম স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।

গবেষণায় দেখা গেছে যে, মানসিক সুবিধার পাশাপাশি, শক্তি প্রশিক্ষণ এবং অ্যারোবিক ব্যায়ামের মতো শারীরিক কার্যকলাপ ক্যান্সার চিকিৎসার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো কাটিয়ে ওঠার শক্তি প্রদান করে।

আবেগ সম্পর্কে কথা বলুন
ক্যান্সারের চিকিৎসা চলাকালে আপনার অনুভূতি সম্পর্কে একজন ভালো বন্ধু বা পরিবারের সদস্যের সাথে কথা বলার চেষ্টা করুন।  আগে ক্যান্সার আক্রান্ত হয়েছিল কিন্তু সেরে উঠেছে এমন মানুষের সঙ্গে কথা বলতে পারেন। এতে তার কথাগুলো থেরাপির মতো কাজ করতে পারে।

আরো পড়ুন:

স্ক্রিন টাইম কমানোর জন্য এই অ্যাপগুলো ব্যবহার করতে পারেন

আপনার সামনে কেউ ধীরে হাঁটলেই রাগ হয়?

কান্না করুন
কান্না এলে কাঁদুন। কান্না আপনার স্বাস্থ্যের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।  বিজ্ঞান এর সমর্থন করে। গবেষকরা কান্নার পর শরীরের পরিবর্তনগুলো দেখেছেন। ২০২০ সালের একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, কান্না শ্বাস-প্রশ্বাস এবং হৃদস্পন্দন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। 

লিখুন
আপনার চিন্তাভাবনা এবং অনুভূতি লিখে রাখতে পারেন। এতে আপনার মাথায় কী ঘটছে বুঝতে পারবেন। চিঠির আকারে কারও উদ্দেশ্যে এসব কথা লিখতে পারেন। নিজের কাছে, ক্যান্সারের কাছে, অথবা অন্য কারো কাছে।

কিছু শিল্প তৈরি করুন
যদি লেখা আপনার ভালো না লাগে তাহলে সৃজনশীল অন্য কিছু করার কথা বিবেচনা করতে পারেন। রঙিন পেন্সিল, রঙ, কাগজ বা মডেলিং ক্লে তৈরি করতে পারেন।  জের উপর কোনও বাড়তি প্রত্যাশা চাপিয়ে রাখবেন না। সৃজনশীল প্রক্রিয়ায় আনন্দ খুঁজে নিন।

২০১৬ সালের একটি গবেষণায় আরও দেখা গেছে যে, শিল্পকর্ম তৈরি করলে কর্টিসল নামক স্ট্রেস হরমোনের মাত্রা কমে যেতে পারে।

সূত্র: হেলথলাইন

ঢাকা/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ব স থ যকর জ বন র একট আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর

বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!

কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।

এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)

সম্পর্কিত নিবন্ধ