আবার শিমরন হেটমায়ার। আবার সিয়াটল ওরকাস। মেজর লিগ ক্রিকেটে (এমএলএস) টানা ১০ ম্যাচ হারের পর গতকাল এমআই নিউইয়র্কের বিপক্ষে শেষ বলে ছক্কা মেরে সিয়াটলকে প্রথম জয় এনে দেন হেটমায়ার।

আজও এক ছক্কায় সিয়াটলকে জিতিয়েছেন হেটমায়ার। তাঁর ২৬ বলে ৬৪ রানের অপরাজিত ইনিংসে লস অ্যাঞ্জেলেস নাইট রাইডার্সের দেওয়া ২০৩ রানের লক্ষ্য ১ বল ও ৫ উইকেট হাতে রেখে টপকে গেছে সিয়াটল।

ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়ামে গতকালের চেয়ে আজ হেটমায়ারের সামনে সহজ সমীকরণ ছিল। শ্যাডলি ফন শালকভিকের করা শেষ ওভারে রান লাগত ৫। কিন্তু শালকভিক প্রথম ৪ বলে দেন মাত্র ২ রান। তবে পঞ্চম বলে তাঁর মাথার ওপর দিয়ে ছক্কা মেরে দলকে জেতান হেটমায়ার। এই জয়ে ৭ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে সিয়াটল এখন চার নম্বরে। সমান ম্যাচে লস অ্যাঞ্জেলের ২ নিয়ে পয়েন্ট নিয়ে আছে তলানিতে।

আজ হেটমায়ারের জন্য মঞ্চ তৈরি করে দেন অ্যারন জোনস। জেসন হোল্ডারের করা প্রথম ওভারেই জশ ব্রাউন দুই বল খেলে শূন্য রানে আউট হলে শায়ান জাহাঙ্গীরকে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেট দুটিতে ১১.

১ ওভারে ১১৯ রান যোগ করেন জোনস। জাহাঙ্গীর ৩১ বলে করেন ৪৩ রান। জোনস মাত্র ৩৮ বলে ১৯২.১১ স্ট্রাইক রেটে করেন ৭৩।

তবে জয়ের জন্য হেটমায়ারের মতো একটা ঝোড়ো ইনিংসের প্রয়োজন ছিল। হেটমায়ার যখন ক্রিজে আসেন, তখন সিয়াটলের প্রয়োজন ছিল ৪৭ বলে ৭৭ রান। টি-টোয়েন্টিতে এই সমীকরণ খুব কঠিন না হলেও হাইনরিখ ক্লাসেন ও সিকান্দার রাজা দ্রুত আউট হয়ে যাওয়ায় চাপে পড়ে সিয়াটল। সেখান থেকে একাই ম্যাচ বের করেন হেটমায়ার। ১৮ বলে ফিফটি ছোঁয়ার পর ২৬ বলে ৬৪ রানে অপরাজিত থাকেন। তাঁর ইনিংসে ছিল ৬টি ছক্কা ও ৪ টি চার।

হেটমায়ার টানা দুই ম্যাচ সিয়াটলকে জিতিয়েছেন পায়ে ক্রাম্প নিয়ে। ম্যাচ শেষে তিনি বলেছেন, ‘ক্লান্ত। আমি খুবই, খুবই ক্লান্ত। তবে কৃতজ্ঞ যে আমরা জয়টা নিশ্চিত করতে পেরেছি। আশা করি আমরা এভাবেই চালিয়ে যেতে পারব। শুরুটা যদি ভালো হয়, তাহলে নিচের দিকের ব্যাটসম্যানদের কাজটা সহজ হয়ে যায়। যেভাবে খেলছি, তাতে আমি খুব খুশি। পা? হ্যাঁ, একটু সমস্যা আছে। কয়েকদিনের মধ্যেই সেটা পরীক্ষা করাব।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন হ টম য় র

এছাড়াও পড়ুন:

এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর

বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!

কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।

এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)

সম্পর্কিত নিবন্ধ