আবারও ছক্কা মেরে দলকে জেতালেন হেটমায়ার, করলেন ১৮ বলে ফিফটি
Published: 29th, June 2025 GMT
আবার শিমরন হেটমায়ার। আবার সিয়াটল ওরকাস। মেজর লিগ ক্রিকেটে (এমএলএস) টানা ১০ ম্যাচ হারের পর গতকাল এমআই নিউইয়র্কের বিপক্ষে শেষ বলে ছক্কা মেরে সিয়াটলকে প্রথম জয় এনে দেন হেটমায়ার।
আজও এক ছক্কায় সিয়াটলকে জিতিয়েছেন হেটমায়ার। তাঁর ২৬ বলে ৬৪ রানের অপরাজিত ইনিংসে লস অ্যাঞ্জেলেস নাইট রাইডার্সের দেওয়া ২০৩ রানের লক্ষ্য ১ বল ও ৫ উইকেট হাতে রেখে টপকে গেছে সিয়াটল।
ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়ামে গতকালের চেয়ে আজ হেটমায়ারের সামনে সহজ সমীকরণ ছিল। শ্যাডলি ফন শালকভিকের করা শেষ ওভারে রান লাগত ৫। কিন্তু শালকভিক প্রথম ৪ বলে দেন মাত্র ২ রান। তবে পঞ্চম বলে তাঁর মাথার ওপর দিয়ে ছক্কা মেরে দলকে জেতান হেটমায়ার। এই জয়ে ৭ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে সিয়াটল এখন চার নম্বরে। সমান ম্যাচে লস অ্যাঞ্জেলের ২ নিয়ে পয়েন্ট নিয়ে আছে তলানিতে।
আজ হেটমায়ারের জন্য মঞ্চ তৈরি করে দেন অ্যারন জোনস। জেসন হোল্ডারের করা প্রথম ওভারেই জশ ব্রাউন দুই বল খেলে শূন্য রানে আউট হলে শায়ান জাহাঙ্গীরকে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেট দুটিতে ১১.
তবে জয়ের জন্য হেটমায়ারের মতো একটা ঝোড়ো ইনিংসের প্রয়োজন ছিল। হেটমায়ার যখন ক্রিজে আসেন, তখন সিয়াটলের প্রয়োজন ছিল ৪৭ বলে ৭৭ রান। টি-টোয়েন্টিতে এই সমীকরণ খুব কঠিন না হলেও হাইনরিখ ক্লাসেন ও সিকান্দার রাজা দ্রুত আউট হয়ে যাওয়ায় চাপে পড়ে সিয়াটল। সেখান থেকে একাই ম্যাচ বের করেন হেটমায়ার। ১৮ বলে ফিফটি ছোঁয়ার পর ২৬ বলে ৬৪ রানে অপরাজিত থাকেন। তাঁর ইনিংসে ছিল ৬টি ছক্কা ও ৪ টি চার।
হেটমায়ার টানা দুই ম্যাচ সিয়াটলকে জিতিয়েছেন পায়ে ক্রাম্প নিয়ে। ম্যাচ শেষে তিনি বলেছেন, ‘ক্লান্ত। আমি খুবই, খুবই ক্লান্ত। তবে কৃতজ্ঞ যে আমরা জয়টা নিশ্চিত করতে পেরেছি। আশা করি আমরা এভাবেই চালিয়ে যেতে পারব। শুরুটা যদি ভালো হয়, তাহলে নিচের দিকের ব্যাটসম্যানদের কাজটা সহজ হয়ে যায়। যেভাবে খেলছি, তাতে আমি খুব খুশি। পা? হ্যাঁ, একটু সমস্যা আছে। কয়েকদিনের মধ্যেই সেটা পরীক্ষা করাব।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন হ টম য় র
এছাড়াও পড়ুন:
এনবিআর চাকরিকে ‘অত্যাবশ্যকীয়’ সেবা ঘোষণার সিদ্ধান্ত সরকারের
রাজস্ব বোর্ডের সংস্কার রোধ ও চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিতে আন্দোলনের মধ্যে এনবিআর সেবাকে ‘অত্যাবশ্যকীয়’ ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। আজ রোববার বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রেস উইংয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, অতি জরুরি আমদানি-রপ্তানি ও বৈদেশিক বাণিজ্যের কার্যক্রম চলমান রাখার জাতীয় স্বার্থে সরকার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আওতাধীন সব কাস্টমস হাউস, আইসিডি, বন্ড কমিশনারেট এবং শুল্ক স্টেশনসমূহের সব শ্রেণির চাকরিকে অত্যাবশ্যকীয় সার্ভিস ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গতকাল শনিবার থেকে দেশের সব কর, ভ্যাট ও কাস্টমস দপ্তর বন্ধ রেখে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ও ‘মার্চ টু এনবিআর কর্মসূচি’ পালন করছেন। আজও চলছে এই কর্মসূচি। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে আন্দোলনকারীরা আজ সকাল থেকে আগারগাঁওয়ের প্রধান কার্যালয়ের বাইরে অবস্থান নেন। এতে দেশের আমদানি ও রপ্তানি কার্যক্রমে ‘স্থবিররা’ দেখা দেয়।
এদিকে আজ দুপুরে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, এদিন এনবিআরের আন্দোলনকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে কোনো বৈঠক হচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘কর্মকর্তারা শাটডাউন কর্মসূচি পালন করতে চাইলে করুক।’
এর পরপরই সরকারের সিদ্ধান্তের কথা জানানো হলো।
বিবৃতিতে বলা হয়, দেশের বাজেট ব্যবস্থাপনায় উন্নয়নমুখী কার্যক্রম পরিচালনার সবচেয়ে বড় সীমাবদ্ধতা হলো দুর্বল রাজস্ব সংগ্রহ ব্যবস্থা। রাষ্ট্রের প্রয়োজনের তুলনায় আমাদের রাজস্ব সংগ্রহ অনেক কম। এর মূল কারণ হলো- আমাদের রাজস্ব আহরণ ব্যবস্থাপনার নানা দুর্বলতা, অনিয়ম ও দুর্নীতি। এর পরিপ্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তী সরকার সব অংশীজনের পরামর্শ অনুযায়ী জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রেস উইংয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সরকার গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছে যে, রাজস্ব সংস্কারের কাজকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নজিরবিহীনভাবে গত ২ মাস ধরে আন্দোলন করছে। এর মাধ্যমে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য, আমদানি-রপ্তানি এবং রাজস্ব আদায় কার্যক্রম অন্যায় ও অনৈতিকভাবে ব্যাহত করছে। আন্দোলনের নামে তারা চরম দুর্ভোগ তৈরি করেছে, সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য। সংস্কারের বিরোধিতা ছাড়াও অর্থবছরের শেষ ২ মাসে তারা রাজস্ব আদায় কার্যক্রম মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত করেছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এই তথাকথিত আন্দোলন পরিকল্পিত ও দুরভিসন্ধিমূলক, যা জাতীয় স্বার্থ এবং নাগরিক অধিকারের চরম পরিপন্থি। সরকারের পক্ষ থেকে রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের দাবি বিবেচনায় নেওয়ার সুস্পষ্ট ঘোষণা দেওয়া হয় এবং আলোচনায় আসার আহ্বান জানালেও তারা তা অগ্রাহ্য করে। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার গ্রহণযোগ্য সমাধান না করে তারা আন্দোলনের নামে অনমনীয় অবস্থান নিয়ে ক্রমাগত দেশের অর্থনীতির ক্ষতি করে চলেছে। এ পরিস্থিতিতে, অতি জরুরি আমদানি-রপ্তানি ও বৈদেশিক বাণিজ্যের কার্যক্রম চলমান রাখার জাতীয় স্বার্থে সরকার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আওতাধীন সব কাস্টমস হাউস, আইসিডি, বন্ড কমিশনারেট এবং শুল্ক স্টেশনসমূহের সব শ্রেণির চাকরিকে অত্যাবশ্যকীয় সার্ভিস ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, আমরা আশা করি, অনতিবিলম্বে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মস্থলে ফিরে যাবেন এবং আইনবিরোধী ও জাতীয় স্বার্থবিধ্বংসী কর্মকাণ্ড থেকে সরে আসবেন। অন্যথায় দেশের জনগণ ও অর্থনীতির সুরক্ষায় সরকার কঠোর হতে বাধ্য হবে।
গত ১২ মে এনবিআর বিলুপ্ত করে রাজস্বনীতি ও ব্যবস্থাপনা বিভাগে বিভক্ত করে অধ্যাদেশ জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়। এর পর থেকে এনবিআর বিলুপ্তি রোধসহ কয়েকটি দাবিতে সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে আন্দোলন করছেন। গত ২৫ মে অর্থ মন্ত্রণালয় ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে অধ্যাদেশটি সংশোধন করার আশ্বাস দিলে আন্দোলন প্রত্যাহার করা হয়। এর পর ২২ জুন থেকে চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় পূর্বঘোষণা অনুযায়ী গতকাল সারাদেশে এনবিআরের কর, মূসক ও শুল্ক দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কমপ্লিট শাটডাউন এবং মার্চ টু এনবিআর কর্মসূচি পালন করেন। আজও চলছে এই কর্মসূচি।