শুধু ফুটবল নয়; প্রকৃতি, ভাগ্য আর আবেগ মিলিয়ে রীতিমতো সিনেমার চিত্রনাট্য হয়ে উঠেছিল চেলসি ও বেনফিকার মধ্যকার ক্লাব বিশ্বকাপের শেষ ষোলোর লড়াই। চার ঘণ্টার টানটান উত্তেজনার ম্যাচে অবশেষে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ইংলিশ ক্লাব চেলসি। যারা ৪-১ ব্যবধানে হারিয়ে দিয়েছে পর্তুগিজ ক্লাব বেনফিকাকে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শার্লটে যখন দুই দল মাঠে নামে, তখন কেউ ভাবেনি একসময় গ্যালারি খালি করে দিতে হবে। ৬৪ মিনিটে রিস জেমসের অসাধারণ ফ্রি-কিকে চেলসি এগিয়ে গেলে মনে হচ্ছিল ম্যাচের ভাগ্য লেখা হয়ে গেছে। কিন্তু খেলার ৮৬ মিনিটে হঠাৎ শুরু হয় তীব্র ঝড়-বৃষ্টি। খেলা বন্ধ করে দেওয়া হয় নিরাপত্তার কারণে। দর্শকদের সরিয়ে নেওয়া হয় স্ট্যান্ড থেকে। দীর্ঘ দুই ঘণ্টার বিরতি শেষে আবার শুরু হয় খেলা।

দীর্ঘ অপেক্ষার পর মাঠে ফিরে খেলা শুরু হতেই চেলসির জন্য আসে ধাক্কা। যোগ করা সময়ে মালো গুস্তোর হাতে বল লাগলে বেনফিকাকে পেনাল্টি দেন রেফারি। স্পটকিক থেকে গোল করেন আর্জেন্টিনার অভিজ্ঞ তারকা অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া। সমতায় ফেরে বেনফিকা।

আরো পড়ুন:

ব্রাজিলের দ্বৈরথে নাটকীয়তা শেষে পালমেইরাস কোয়ার্টার ফাইনালে

ক্লাব বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে কে কার প্রতিপক্ষ, দেখে নিন সময়সূচি

তবে অতিরিক্ত সময়েই বদলে যায় চিত্র। বেনফিকার খেলোয়াড় জিয়ানলুকা প্রেস্টিয়ান্নি দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন। তাতে দশজনের দলে পরিণত হয় বেনফিকা। এই সুযোগকে কাজে লাগাতে দেরি করেনি চেলসি। এনকুনকু, পেদ্রো নেতো ও কিয়েরনান ডিউসবারি-হল একে একে তিনটি গোল করে নিশ্চিত করেন ব্লুজদের জয়।

এই দাপুটে জয়ে কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করেছে চেলসি। তাদের প্রতিপক্ষ এবার ব্রাজিলের ক্লাব পালমেইরাস। যারা আগেই শেষ আটে উঠেছে। ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে ফিলাডেলফিয়ায়, স্থানীয় সময় শুক্রবার রাত ৮টায় (বাংলাদেশ সময় শনিবার রাত ১টা)।

তবে এই ম্যাচে চেলসির গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় ময়েসেস কাইসেদো হলুদ কার্ডজনিত নিষেধাজ্ঞার কারণে খেলতে পারবেন না।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল

এছাড়াও পড়ুন:

নড়াইলে একটি কেন্দ্রে ভুল সেটে পরীক্ষা গ্রহণ

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা শহরের লক্ষ্মীপাশা আদর্শ মহিলা কলেজ কেন্দ্রে এইচএসসি বাংলা দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষায় ৪র্থ সেটের পরিবর্তে ২য় সেটের প্রশ্নে পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। পরীক্ষা শেষে বিষয়টি জানাজানি হলে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে উৎকণ্ঠা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে শিক্ষক ও পরীক্ষার্থী কলেজ কেন্দ্রে এসে ভিড় জমায় এবং ক্ষোভ প্রকাশ করে। বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্র সচিব বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়েন।

এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার জন্য সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র সচিবসহ দুইজন কে দায়িত্ব হতে অব্যাহতি ও কারণ দর্শানোর চিঠি দিয়েছে যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষাবোর্ড। পাশাপাশি পরীক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে পরীক্ষা নেয়া প্রশ্নপত্রে খাতা মূল্যায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন যশোর বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের ঘোষণা অনুযায়ী রবিবার (২৯ জুন) সকাল ১০টা হতে বাংলা দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষায় ৫৬০ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। বাংলা দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষায় বোর্ডের নির্দেশনা ছিল ৪ নং সেটে পরীক্ষা গ্রহণের। কিন্তু ভুলবশতঃ লক্ষ্মীপাশা আদর্শ মহিলা কলেজ কেন্দ্রে ২ নং সেটে পরীক্ষা নেয়া হয়। পরীক্ষা শেষে পরীক্ষার্থীরা বাইরে এলে অন্য কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা হলে তারা প্রশ্ন মেলায়। তখন সেটের ভিন্নতার কারণে বিভ্রান্তিতে পড়ে। একপর্যায়ে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা যাচাই-বাছাই করে জানতে পারেন লক্ষ্মীপাশা আদর্শ মহিলা কলেজের প্রশ্নের সেট পবির্তন হয়েছে। এ ঘটনায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা কলেজে এসে এ বিষয়ে জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে বেকায়দায় পড়েন। এ সময় ক্ষোভে ফেটে পড়েন অভিভাবকরা।

আরো পড়ুন:

চাকসু নির্বাচনসহ ৭ দাবিতে চবিতে ছাত্রশিবিরের সংবাদ সম্মেলন

আন্দোলন নিয়ে ‘হতবাক’ শহীদ আবু সাঈদের পরিবার

লোহাগড়া সরকারি আদর্শ কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী হাসিবুল হাসান অভিযোগ করে বলেন, ‘‘ভুল সেটে পরীক্ষা নেয়ার ঘটনা পরীক্ষা শেষ হলে কিছুক্ষণ পর জানতে পারি। বিষয়টি নিয়ে আমরা চিন্তিত। আমাদের উত্তরপত্রের বিষয়ে কী হবে, তা নিয়েও আমরা চিন্তিত।’’

এ বিষয়ে কেন্দ্র সচিব ও লক্ষ্মীপাশা আদর্শ মহিলা ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কাজল কুমার বিশ্বাসের সঙ্গে কথা বলার জন্য মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। ফলে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু রিয়াদ জানান, লক্ষ্মীপাশা আদর্শ মহিলা কলেজের কেন্দ্র সচিবের দায়িত্বে ছিলেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কাজল কুমার বিশ্বাস এবং ট্যাগ অফিসারের দায়িত্বে ছিলেন লোহাগড়া উপজেলা সহকারী কৃষি অফিসার রফিকুল ইসলাম। তাদের দায়িত্বহীনতার বিষয়ে যশোর শিক্ষাবোর্ড কে জানানো হয়েছে।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষাবোর্ড যশোরের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ প্রফেসর আব্দুল মতিন বলেন, ‘‘পরীক্ষার্থীদের যাতে ক্ষতি না হয়, সে বিষয়টি বিবেচনা করে যে সেটে পরীক্ষা নেয়া হয়েছে, ওই সেটের প্রশ্ন দিয়ে খাতা মূল্যায়ন করা হবে। এছাড়া দায়িত্বে অবহেলার জন্য  সংশ্লিষ্ট পরীক্ষা কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিব কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কাজল কুমার বিশ্বাস ও ট্যাগ অফিসার লোহাগড়া উপজেলা সহকারী কৃষি অফিসার রফিকুল ইসলাম কে দায়িত্ব হতে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে। আগামীতে যাতে ভালোভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন করা যায়, সেই ব্যাপারে আরো সতর্কতা অবলম্বন করা হবে।’’
 

ঢাকা/শরিফুল/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ