এআই ব্যবহারে ভারসাম্য ও নৈতিকতা নিশ্চিত করতে হবে: জবি উপাচার্য
Published: 29th, June 2025 GMT
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেছেন, “কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) শিক্ষা ও গবেষণার জগতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। তবে এর কার্যকর ও ইতিবাচক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হলে ভারসাম্য ও নৈতিকতার চর্চা অত্যন্ত জরুরি।”
রবিবার (২৯ জুন) ‘ইফেক্টিভ ইউজ অফ এআই টুলস ইন টিচিং, লার্নিং অ্যান্ড রিচার্জ’ শীর্ষক দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সম্মেলন কক্ষে ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেলের (আইকিউএসি) উদ্যোগে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
উপাচার্য বলেন, “এআই প্রযুক্তি আমাদের শিক্ষাদান ও গবেষণাকে যেমন সহজ করছে, তেমনি এর অপব্যবহার বা নীতিহীন প্রয়োগ শিক্ষার মৌলিক কাঠামোকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। শুধু প্রযুক্তির ব্যবহার নয়, বরং এর নৈতিকতা, স্বীকৃতি ও কৃতিত্ব প্রদানের দিকেও সমান মনোযোগ দিতে হবে।”
আরো পড়ুন:
জকসু নির্বাচনসহ ৩ দাবিতে ছাত্র অধিকার পরিষদের কর্মসূচি
মহানবী (সা.
তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এ ধরনের প্রশিক্ষণ শিক্ষকসমাজকে এআই ব্যবহারে দক্ষ ও সচেতন করে তুলবে। নীতিমালা ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির সমন্বয়ের মাধ্যমেই এআই-এর সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে।”
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ট্রেজারার অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমীন বলেন, “এআই এখন ব্যক্তি, সমাজ ও শিক্ষাজীবনের প্রতিটি স্তরে প্রভাব ফেলছে। এই প্রশিক্ষণ কেবল দক্ষতা বাড়াবে না, এআই সম্পর্কে সচেতনতা তৈরিরও একটি কার্যকর পদক্ষেপ হবে। তবে এর ব্যবহার যেন সবসময় নৈতিক ও দায়িত্বশীল হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখা জরুরি।”
প্রশিক্ষণে প্রধান আলোচক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি এআই প্রযুক্তির বাস্তব প্রয়োগ, সম্ভাবনা, সীমাবদ্ধতা ও ব্যবহারজনিত সতর্কতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
আইকিউএসি পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আবু লায়েকের সভাপতিত্বে এতে স্বাগত বক্তব্য দেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান এবং আইকিউএসি’র অতিরিক্ত পরিচালক অধ্যাপক মেজবাহ-উল-আজম সওদাগর। প্রশিক্ষণ শেষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন আইকিউএসি’র অতিরিক্ত পরিচালক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জামির হোসেন।
প্রশিক্ষণে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষক অংশগ্রহণ করেন এবং এআই প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে মতবিনিময় করেন।
ঢাকা/লিমন/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক ত র ম ব দ ধ মত ত আইক উএস উপ চ র য ব যবহ র
এছাড়াও পড়ুন:
এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর
বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!
কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।
চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।
এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)