স্মৃতি মান্ধানার সেঞ্চুরি আজকাল আর বড় কোনো খবর নয়। ভারতীয় ব্যাটার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কম সেঞ্চুরি তো আর করেননি। ভারতের জার্সিতে তাঁর সেঞ্চুরি এখন ১৪টি। তবে ১৪তম সেঞ্চুরিটি নিয়ে আলোচনা কম হচ্ছে না। এটি যে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে মান্ধানার প্রথম সেঞ্চুরি। রোববার ট্রেন্ট ব্রিজে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরিটি বড় এক কীর্তিতেই নাম উঠিয়েছে তাঁর।

প্রথম ভারতীয় নারী ক্রিকেটার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের তিন সংস্করণেই সেঞ্চুরি পেলেন ২৮ বছর বয়সী ওপেনার। সব দেশ মিলিয়ে মান্ধানার আগে এই কীর্তি ছিল মোটে চার নারী ক্রিকেটারের। তাঁদের দুজন ইংল্যান্ডের—হিদার নাইট ও ট্যামি বোমন্ট। দক্ষিণ আফ্রিকার লরা ভলভার্ট ও অস্ট্রেলিয়ার বেথ মুনিও আছেন সংক্ষিপ্ত এই তালিকায়।

মেয়েদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিন সংস্করণেই সেঞ্চুরির এই ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা হিদার নাইট। ইংলিশ তারকা ২০২০ সালে ২৬ ফেব্রুয়ারি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে থাইল্যান্ডের বিপক্ষে অপরাজিত ১০৮ রানের ইনিংস খেলে প্রথম নারী হিসেবে তিন সংস্করণেই সেঞ্চুরির কীর্তি গড়েন।

মেয়েদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিন সংস্করণেই সেঞ্চুরি পাওয়ার প্রথম খেলোয়াড় ইংল্যান্ড হিদার নাইট (ডানে).

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ত ন স স করণ ই স ঞ চ র প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর

বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!

কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।

এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)

সম্পর্কিত নিবন্ধ