পাবনার সুজানগর উপজেলায় এক কনটেন্ট ক্রিয়েটরের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করার অভিযোগ উঠেছে। তার দাবি, ভারত ও আওয়ামী লীগবিরোধী ফানি ভিডিও পোস্ট করায় ক্ষিপ্ত হয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী তার বাড়িতে হামলা চালিয়েছেন।

গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলার দুলাই ইউনিয়নের চর জোড়পুকুরিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। রোববার বিকেলে সুজানগর থানায় এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়।

কনটেন্ট ক্রিয়েটরের নাম সাইমুম সাজিদ। তাঁর বাবা শাহজাহান আলী বিএনপির সমর্থক। ২০২১ সালে এনটিভি রিয়েলিটি শো ‘অনন্য প্রতিভা’র মাধ্যমে সাজিদের যাত্রা শুরু। তিনি ফেসবুক পেজে বিনোদনমূলক ভিডিও দিয়ে থাকেন। পাশাপাশি নাটকেও অভিনয় করেছেন।

অভিযুক্তরা হলেন– একই গ্রামের আমিরুল ইসলাম, কামাল হোসেন, রফিকুল ইসলাম, জামাল উদ্দিন, রবিউল ইসলাম ও মুক্তার হোসেন। তারা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী বলে জানা গেছে।

অভিযোগ থেকে জানা গেছে, সাইমুম সাজিদ তাঁর নিজ পেজ থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ভিডিও পোস্ট করেন। ভারতবিরোধী ফানি ভিডিও পোস্ট করেন নিয়মিত। তাঁর বাবা আওয়ামী লীগের আমলের নির্যাতিত বিএনপির একজন সক্রিয় কর্মী। এর জের ধরে শনিবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা চায়নিজ কুড়াল, লোহার পাইপ, বাঁশের লাঠি নিয়ে সাজিদের বাড়িতে প্রবেশ করে। পরিবারের সদস্যদের গালাগাল, ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। একপর্যায়ে আলমারিতে থাকা ২ লক্ষাধিক টাকা ও সাড়ে ৩ ভরি স্বর্ণের গহনা লুট করে নিয়ে যায়।

এ সময় সাজিদ ফেসবুক লাইভে ও জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরের কল দিয়ে জানালে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এ ঘটনায় ৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয় বলে অভিযোগ করা হয়। ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্তরা পলাতক।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প বন আওয় ম ল গ আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

শেবাচিমে চিকিৎসককে মারধর, কর্মবিরতিতে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা

তিন ঘণ্টা পর বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পুলিশি পাহাড়ায় জরুরি চিকিৎসা সেবা চালু হয়েছে। চিকিৎসকদের উপর হামলা ও নিরাপত্তা না থাকায় দুপুর ২টা থেকে কর্মস্থল ত্যাগ করেন চিকিৎসকরা। ফলে টানা তিন ঘণ্টা চিকিৎসা বঞ্চিত হন রোগীরা। হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. একেএম মশিউল মুনীরের অনুরোধে পুলিশের কড়া নিরাপত্তায় বিকেল ৫টা থেকে জরুরি সেবা চালু করা হয়। তবে বিকেল ৩টার পর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতিতে যান ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।

শেবাচিম হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী রাব্বি আল মামুন ফয়সাল জানান, রবিবার বেলা ১২টার দিকে সদর রোড থেকে বেশ কিছু স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী মিছিল নিয়ে হাসপাতালের সামনে আসে। এ সময় তারা হাসপাতালের প্রতিটি গেটের সামনে স্কুল-কলেজের মার্কিং করে হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফদের গালিগালাজ করেন। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের হাতে ধারালো অস্ত্র ও লাঠি ছিল বলে জানান রাব্বি আল মামুন। 

তিনি বলেন, ‘‘দুপুর ২টার দিকে মেডিসিন বিভাগের মেডিকেল অফিসার দিলিপ রায় ডিউটি শেষে বের হওয়ামাত্র তাকে টেনেহিঁচড়ে বেদম মারধর করা হয়। পুলিশ তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে। এর কিছুক্ষণ পর হাসপাতালের দিকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে হামলাকারীরা। এতে বাহাউদ্দিন নামে এক কর্মচারী আহত হন।’’

চিকিৎসকের উপর হামলা ও কর্মস্থলে নিরাপত্তা না থাকায় বিকেল ৩টার পর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি ঘোষণা করেন ইর্ন্টান চিকিৎসকরা। এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তারা জানান, কর্মস্থলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে আমরা গত ১৪ আগস্ট কর্মবিরতিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু হাসপাতাল পরিচালক স্যারের অনুরোধ ও রোগীর দুর্ভোগের কথা বিবেচনায় কর্মবিরতি প্রত্যাহার করি। এ সময় পরিচালক মহোদয়কে ৪৮ ঘণ্টার সময় দেওয়া হয়। কিন্তু আজকে ১৭ আগস্ট আবার আন্দোলনের নামে কিছু দুষ্কৃতিকারী ডা. দিলীপ রায় স্যারের উপর অতর্কিত হামলা করেছে। হাসপাতাল ভবন লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’’

ঘটনায় জড়িতদের আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি ঘোষণা করেন। 

মিড লেভেল ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. শাখাওয়াত হোসেন সৈকত বলেন, ‘‘আজ মহিউদ্দিন রনির  নেতৃত্বে বরিশালে বেশ কিছু স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা হাসপাতালের প্রবেশপথে অবস্থান নিয়ে চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীদের হুমকি দেয়। ডা. দিলিপ রায়কে মারধর করেছে।  চিকিৎসকের উপর নির্যাতন ও হাসপাতালের সামনে তারা অবস্থান নেওয়ায় রোগীরা যেমন নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন, তেমনি চিকিৎসকরাও কর্মস্থলে নিরাপত্তা না থাকায় ঘটনার পর কর্মস্থল ত্যাগ করেন। তবে হাসপাতাল পরিচালক স্যারের বিশেষ অনুরোধে ও পুলিশের নিরাপত্তায় এবং মুমূর্ষু রোগীদের স্বার্থে আমরা মিড লেভেল চিকিৎসকরা শুধু জরুরি সেবা চালিয়ে যাচ্ছি।’’

এ দিকে তিন ঘণ্টা চিকিৎসাবঞ্চিত হওয়ায় রোগীর স্বজনরা দিশেহারা হয়ে পড়েন। তারা ছুটে যান পরিচালকের কাছে। হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. একেএম মশিউল মুনীর বলেন, ‘‘ঘটনার পরপরই হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফরা আমার কাছে বিচার চেয়েছেন। তাদের শান্ত হয়ে নিজ নিজ কর্মস্থলে দায়িত্ব পালনের অনুরোধ করেছি। কিন্তু নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তারা।’’

ঢাকা/পলাশ//

সম্পর্কিত নিবন্ধ