সদস্য কারখানার জন্য সব ধরনের সেবামূল্য কমিয়েছে তৈরি পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানিকারক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএমইএ। সংগঠনের নবনির্বাচিত কমিটির প্রথম বোর্ড সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গত ২৩ জুন রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ ভবনে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের নতুন সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু। 
সদস্য কারখানাগুলোর জন্য আমাদানি-রপ্তানিসংক্রান্ত বিভিন্ন ধরনের সেবা দিয়ে থাকে বিজিএমইএ। কাঁচামাল আমদানির অনুমতি ইউটিলাইজেশন ডিক্লারেশনের (ইউডি) মতো কিছু সেবা সরকারের পক্ষে বিজিএমইএ দিয়ে থাকে। সংগঠনের বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযাযী, সাধারণ ইউডি সনদের জন্য ফি কমিয়ে ৪৭৫ টাকা করা হয়েছে। আগে এটি ছিল ৬৩০ টাকা। জরুরি ইউডি সেবা ফি ৯৩০ টাকা থেকে কমিয়ে ৭০০ টাকা করা হয়েছে। সাধারণ রপ্তানি অনুমতি সনদ ফি ৩০০ টাকা থেকে কমিয়ে ২২৫ টাকা ও জরুরি ক্ষেত্রে ৫০০ টাকা থেকে ৩৭৫ টাকা করা হয়েছে। 
প্রণোদনা-সংক্রান্ত সেবার মধ্যে বিকল্প নগদ সহায়তার প্রাপ্তি-সংক্রান্ত সনদের ক্ষেত্রে সেবামূল্য ১ হাজার টাকার পরিবর্তে ৭৫০ টাকা করা হয়েছে। বিশেষ নগদ সহায়তার প্রাপ্তির ক্ষেত্রে ২৫ হাজার ডলার পর্যন্ত রপ্তানির বপরীতে ২০০ টাকা থেকে কমিয়ে ১৫০ টাকা করা হয়েছে। রপ্তানির পরিমাণ ৬ লাখ ডলারের বেশির হলে ১০ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে সাড়ে ৭ হাজার টাকা করা হয়েছে। নতুন বাজার সম্প্রসারণে নগদ সহায়তা প্রাপ্তির সনদের জন্য রপ্তানি মূল্য ২৫ হাজার ডলার থেকে ৫০ হাজার ডলার পর্যন্ত সেবামূল্য কমিয়ে দেড় হাজার টাকা করা হয়েছে, যা আগে ২ হাজার টাকা ছিল। ৫ লাখ ডলারের বেশি রপ্তানি মূল্যের ক্ষেত্রে এ সেবা মূল্য ১৫ হাজার টাকা করা হয়েছে, যা আগে ছিল ২০ হাজার টাকা। অন্যান্য সেবার ক্ষেত্রেও বিভিন্ন হারে ফি কমানো হয়েছে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব জ এমইএ ব জ এমইএ র জন য স গঠন

এছাড়াও পড়ুন:

এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর

বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!

কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।

এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)

সম্পর্কিত নিবন্ধ