হ্যাকার চক্রের কাছে বেহাত হওয়া তথ্য পৌঁছালে ডিজিটাল তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়েছেন অনেকে। ইতোমধ্যে ৩০টি আলাদা ডেটা ক্রাশের সন্ধান মিলেছে
সারাবিশ্বে অ্যাপল ও গুগল অ্যাকাউন্টের রেকর্ড পরিমাণ তথ্য ফাঁস হওয়ায় নড়েচড়ে বসেছেন প্রযুক্তিবিদরা।
খবরে প্রকাশ, এটাই এযাবৎকালের প্রযুক্তি দুনিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিপর্যয়। ফলে যে কারও অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়া বা ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য এখন ঝুঁকির
মধ্যে রয়েছে।
হ্যান্ডসেটের লগইন ও ইন্টারনেটের সবখানে অ্যাপল ও গুগল আইডি ব্যবহৃত হয়। ফলে বেহাত হওয়া তথ্য হ্যাকারদের হাতে পৌঁছালে ডিজিটাল তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়েছেন অনেকে। প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানা গেছে, আগে থেকেই এমন তথ্যঝুঁকির আশঙ্কা ছিল। সন্দেহজনক ওই দলের ৩০টি আলাদা ডেটা ক্রাশের সন্ধান পেয়েছিলেন গবেষকরা। কয়েক কোটি থেকে সাড়ে তিনশ কোটি রেকর্ড রয়েছে ওই সব গুচ্ছ ডেটা সার্ভারে। দলটির নেতৃত্ব দিয়েছেন সাইবার সিকিউরিটি বিশেষজ্ঞ ভিলিয়াস পেটকউস্কাস। তিনিই প্রথম জানিয়েছিলেন, দেড় হাজার কোটির বেশি রেকর্ড ফাঁস হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
ফাঁস হলো যেভাবে
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঘটনার নেপথ্যে কাজ করেছে বিশেষ ম্যালওয়ার। বিগত কয়েক বছর ধরে এমন সফটওয়্যার ছড়ানো হয়েছে, যা ডিভাইস থেকে ইউজার নেম, পাসওয়ার্ড ছাড়াও অন্যান্য তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে।
তথ্য কেন ঝুঁকি এখন
চুরি যাওয়া তথ্যের মধ্যে বিশেষভাবে জায়গা পেয়েছে কয়েকটি সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের তথ্য, ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিএন) তথ্য, ডেভেলপার টুল, অ্যাপল ও গুগল আইডির তথ্য ছাড়াও কয়েকটি দেশের সরকারি পোর্টালের তথ্য।
বিশাল এ তথ্য চুরি থেকে বাঁচতে নতুন পাসওয়ার্ড দেওয়া, ঝুঁকি এড়াতে আগের চেয়ে শক্তিশালী পাসওয়ার্ড তৈরি ও মাল্টিফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন ব্যবহার আবশ্যক বলে পরামর্শ দিয়েছেন সাইবার বিশেষজ্ঞরা।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অ য ক উন ট
এছাড়াও পড়ুন:
এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর
বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!
কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।
চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।
এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)