দেশের বাজারে ৪৫ হাজার টাকার নিচে দেড় টনের নতুন শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বা এসি পাওয়া যায় না। এসির দামও প্রতিবছর একটু একটু করে বাড়ছে। তাই বর্তমান বাজারে এসি কেনা মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য কিছুটা কঠিন হয়ে পড়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পুরোনো এসি পাওয়া গেলেও বারিধারা এলাকার জে–ব্লকের ২০ নম্বর রোডের পাশে ১২ থেকে ১৫টি পুরোনো এসির দোকান রয়েছে। এসব দোকানে ব্যবহৃত একেকটি এসি পাওয়া যাবে ১৫ থেকে ৬০ হাজার টাকায়।

ব্যবসায়ীরা জানান, অর্ধেক কিংবা তার চেয়ে কম দামে এসি মিলবে বারিধারার এই বাজারে। বারিধারার এসব এসির দোকানে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ও ধরনের এসি একসঙ্গে পাওয়া যায় বলে এই মার্কেটে ক্রেতাদের চাহিদা বেশি। ব্যবসায়ীরা জানান, গরমে প্রতিদিন এই বাজার থেকে গড়ে ৩০ থেকে ৪০টির বেশি পুরোনো এসি বিক্রি হয়।

সম্প্রতি মদিনা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের মাসে গড়ে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকার এসি বিক্রি হয়। গরমের সময় এসি বেশি বিক্রি হওয়ায় মাসে গড়ে এক থেকে দুই লাখ টাকা মুনাফা হয়।’

যাত্রাবাড়ীর ব্যবসায়ী সাইফুল হাসানের সঙ্গে এই বাজারে কথা হয় প্রথম আলোর। নিজ এলাকায় চশমার ব্যবসা করেন। দোকানের জন্য এসি কিনতে আসা। নতুন এক টনের ইনভার্টার এসি কিনতে খরচ হয় ৫০ হাজার টাকার বেশি। তাই পুরোনো এসির মার্কেটে এসেছেন এসি কিনতে। তিনি প্রথম আলোকে জানান, ‘এখান থেকে একটি এক টনের এসি কিনেছি ৩০ হাজার টাকায়। কম্প্রেসরের জন্য দুই মাসের ওয়ারেন্টি দিয়েছে। তাই কিছুটা ভরসা করেই কিনেছি।’

এসির দাম কত

এসির এই পুরোনো বাজারে আমেরিকান এয়ার, জেনারেল, এলজি, মিডিয়া, সিঙ্গার, গ্রি, প্যানাসনিক, মিতসুবিশি, ট্রান্সটেক, শার্পসহ প্রায় ২০ থেকে ৩০ ব্র্যান্ডের বিভিন্ন ধরনের এসি পাওয়া যায়। এক টনের একটি এসির দাম ১৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা, দেড় টনের এসি ২০ থেকে ৩৫ হাজার ও ২ টনের এসি ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকার মধ্যে। তবে মান ও প্রকারভেদে এসির দাম কম বা বেশি হতে পারে।

পুরোনো এসির দোকান মায়ের দোয়া এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপক জয়নাল আবদিন বলেন, ‘আমাদের দোকানে বিভিন্ন দেশের দূতাবাস থেকে আমেরিকান এয়ার ও জেনারেল ব্র্যান্ডের এসি কেনা হয়। বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও বাসা থেকেও এসি সংগ্রহ করি। একটি দেড় টন জেনারেল ব্র্যান্ডের নতুন এসির দাম ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। আমরা ৩৫ হাজার টাকা দামে বিক্রি করছি। এর কন্ডিশন ভালো হলে ৫০ হাজার টাকাও বিক্রি করি। গরমের সময়ে দিনে গড়ে চার থেকে পাঁচটা এসি বিক্রি হয়। এ বাজারের বেশির ভাগ দোকানে বিক্রি হওয়া এসির কম্প্রেসরে এক মাসের জন্য ওয়ারেন্টি দেওয়া হয়।’

কুমিল্লা শহরের রাজগঞ্জ এলাকায় থাকেন শাহরিয়ার হাসান। পেশায় তিনি একজন ব্যবসায়ী। বাড্ডা এলাকায় বেড়াতে এসেছিলেন এক আত্মীয়ের বাসায়। সেখানে এসে জানতে পারেন, পাশের বারিধারার জে–ব্লকে পুরোনো এসির বাজার রয়েছে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘সিঙ্গার ব্র্যান্ডের দুটি ইনভার্টার এসি পছন্দ হয়েছে। দাম চেয়েছিল ৩৫ হাজার টাকা। পরে দুটি একই ব্র্যান্ডের এসি কিনেছি ৩০ হাজার টাকা করে ৬০ হাজার টাকায়।’

রাজধানীর বারিধারা এলাকার জে ব্লকের ২০ নম্বর রোডের পুরাতন এসির দোকানে ১৫ থেকে ৫০ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে ১ থেকে ২ টনের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের এসি। পুরোনো এসির দোকানে বিক্রেতারা বসে আছেন ক্রেতার অপেক্ষায়.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ৫০ হ জ র ট ক এস র দ ক ন প রথম আল এস র দ ম ব যবস য় ন র এস র জন য এল ক য়

এছাড়াও পড়ুন:

সোহাগ পাটোয়ারী নামে আরও ১ প্রতারককে গ্রেপ্তার করল দুদক

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তাদের নাম ভাঙিয়ে প্রতারণার অভিযোগে আরও এক প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে দুদক। ফেসবুকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহর অভিযোগের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় এ নিয়ে মোট পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হলো।

সর্বশেষ গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম সোহাগ পাটোয়ারী (৪০)। তার গ্রামের বাড়ি লক্ষীপুরের রামগঞ্জ থানার দাশপাড়া গ্রামে। তিনি রাজধানীর মুগদায় দক্ষিণ মান্ডা এলাকায় একটি বাসায় ভাড়া থাকেন।

দুদক জানায়, গ্রেপ্তারের সময় সোহাগ পাটোয়ারীর কাছ থেকে বিভিন্ন গণমাধ্যমের ভুয়া পরিচয়পত্র, ক্যামেরা, বুম, সেলফি স্টিক, পাসপোর্ট, ভিজিটিং কার্ড, ব্যাংকের চেক বই, মোবাইল ফোন, সিমকার্ড জব্দ করা হয়।

সোমবার দুদকের উপ-পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম জানান, গত ২৪ জুন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহর একটি পোস্ট দুর্নীতি দমন কমিশনের দৃষ্টি গোচর হয়। দুদক ওই পোস্ট আমলে নিয়ে ঘটনাটি অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়। পরে পুলিশ সুপার পদ মর্যাদায় কর্মরত দুদকের একজন পরিচালকের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়।

অনুসন্ধান কমিটি পুলিশ, র‌্যাব ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় শনিবার ও রোববার প্রতারক চক্রের মূল হোতা সেলিমসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে।

প্রতারকরা হচ্ছে— মো. সেলিম (৪০), তরিকুল ইসলাম তারেক (৪০), আব্দুল হাই সোহাগ (৩৫) মো. আতিক (৩৮) ও সোহাগ পাটোয়ারী (৪০) ।

প্রতারক চক্রটি দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, মহাপরিচালক বা কর্মকর্তা পরিচয়ে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা বলে প্রতারণা করছিল। এই চক্রের বিরুদ্ধে এরই মধ্যে মামলা করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ