ব্রাজিলিয়ান চমক ফ্ল্যামেঙ্গোকে বিদায় করে শেষ আটে পিএসজিকে পেল বায়ার্ন
Published: 30th, June 2025 GMT
দুই দলের শক্তি-সামর্থ্যে পার্থক্য অনেক। সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সেও ইউরোপিয়ান পরাশক্তি বায়ার্ন মিউনিখের বিপরীতে ফ্ল্যামেঙ্গো খুব বড় কোনো নাম নয়। তবু ক্লাব বিশ্বকাপে শেষ ষোলোর ম্যাচের আগে ফ্ল্যামেঙ্গোকে সমীহ করেছেন অনেকে। গ্রুপপর্বে চেলসিকে হারিয়ে শীর্ষে থেকেই নকআউট পর্ব নিশ্চিত করেছিল ব্রাজিলের ক্লাবটি। বায়ার্নকেও তাই সতর্ক থাকতে হয়েছিল ফ্ল্যামেঙ্গোকে নিয়ে।
তবে শেষ পর্যন্ত ভালো খেলেও আর কোনো অঘটনের জন্ম দিতে পারেনি ফ্ল্যামেঙ্গো। ব্রাজিলিয়ান ক্লাবটিকে ৪-২ গোলে হারিয়েই কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট পেয়েছে জার্মান চ্যাম্পিয়নরা। শেষ আটে বায়ার্নের প্রতিপক্ষ পিএসজি। যারা একই দিনের অন্য ম্যাচে লিওনেল মেসির ইন্টার মায়ামিকে উড়িয়ে দিয়েছে ৪-০ গোলে। বায়ার্নের জয়ে জোড়া গোল করেছেন হ্যারি কেইন। আর একটি করে গোল এরিক পুলগার এবং লিওন গোরেৎজকার। ফ্ল্যামেঙ্গোর হয়ে গোল শোধ করেছেন গেরসন ও জর্জিনিও।
বায়ার্ন দুই গোলের ব্যবধানে জিতলেও ম্যাচের প্রকৃত চিত্র কিন্তু ভিন্ন ছিল। ম্যাচজুড়ে বল দখল, আক্রমণ এবং সুযোগ তৈরিতে বায়ার্নের চেয়ে এগিয়েই ছিল ফ্ল্যামেঙ্গো। ৫১ শতাংশ বলের দখল রেখে ফ্ল্যামেঙ্গো ১২ শট নিয়ে ৩টি লক্ষ্যে রাখে।
আরও পড়ুনমেসিদের অসহায় দর্শক বানিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে পিএসজি৯ ঘণ্টা আগেবিপরীতে ৪৯ শতাংশ বলের দখল রাখা বায়ার্ন ৮টি শট নিয়ে লক্ষ্যে রাখে ৪টি। মূলত ফাইনাল থার্ডে ভীতি ছড়ানো এবং ফিনিশিংয়েই বায়ার্নের চেয়ে পিছিয়ে ছিল ফ্ল্যামেঙ্গো। পাশাপাশি বায়ার্নের আক্রমণের মুখে বারবার খেই হারানো রক্ষণের ভুলও হয়েছে ফ্ল্যামেঙ্গোর হারের কারণ। যা শেষ পর্যন্ত প্রতিযোগিতা থেকে তাদের বিদায়ের কারণও হয়েছে।
আশা জাগিয়েও পারল না ফ্ল্যামেঙ্গো.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই ঘোষণাপত্র না আসায় ক্ষোভ, মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা আপ বাংলাদেশের
জুলাই ঘোষণাপত্র, প্ল্যাটফর্মের ভবিষ্যৎ কার্যক্রম এবং গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে রাজধানীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ (আপ বাংলাদেশ) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে আপ বাংলাদেশ সরকারকে কঠোর ভাষায় দায়ী করেছে এবং ঘোষণাপত্র না দেওয়ার ব্যর্থতার জন্য তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। একই সঙ্গে সংগঠনটি মাসব্যাপী ৩৬ দিনের কর্মসূচিও ঘোষণা করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আজকের সংবাদ সম্মেলন থেকে আমরা স্পষ্ট জানিয়ে দিতে চাই—জুলাইয়ের ঘোষণাপত্র কোনো প্রাইভেট ইনিশিয়েটিভ হতে পারে না, এটি একটি রাষ্ট্রীয় দলিল। ফলে এই ঘোষণাপত্র অবশ্যই সরকারকেই দিতে হবে। এর ব্যত্যয় হলে ছাত্র-জনতা প্রয়োজনে আবারও রাজপথে নেমে এসে সকল রাজনৈতিক দল, মত ও অংশীজনকে সঙ্গে নিয়ে সরকারের কাছ থেকেই জুলাই ঘোষণাপত্র আদায় করে নেবে ইনশাআল্লাহ।’
তিনি আরও বলেন, ‘‘সাড়ে পনেরো বছরের ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াই এবং লাখো ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে আমরা একটি ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ পেয়েছি। কিন্তু সরকার এখনও পর্যন্ত শহীদদের স্বীকৃতি, আহতদের পুনর্বাসন কিংবা ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রকাশে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি।”
গত ১০ মে সরকার এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশের ঘোষণা দিয়েছিল। সেই সময়সীমা ২৫ জুনে শেষ হলেও এখন পর্যন্ত সরকার কোনো বক্তব্য বা ব্যাখ্যা দেয়নি—এ নিয়ে গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে আপ বাংলাদেশ।
৩৬ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা:
আপ বাংলাদেশ জানায়, ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত দেশব্যাপী নানা কর্মসূচি পালিত হবে। ঘোষিত কর্মসূচিগুলোর মধ্যে রয়েছে:
১। ১ জুলাই–৩৬ জুলাই: দেশব্যাপী গণসংযোগ
২। ৪ জুলাই: বরিশাল বিভাগীয় গণসংযোগ
৩। ৫ জুলাই: রংপুর বিভাগীয় গণসংযোগ
৪। ১১ জুলাই: চট্টগ্রাম বিভাগীয় গণসংযোগ
৫। ১২ জুলাই: সিলেট বিভাগীয় গণসংযোগ
৬। ১৫ জুলাই: নারী শিক্ষার্থীদের প্রতিরোধ স্মরণ
৭। ১৬ জুলাই: দোয়া ও শহীদদের কবর জিয়ারত
৮। ১৮ জুলাই: বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিরোধ স্মরণ
৯। ১৮ জুলাই: খুলনা বিভাগীয় গণসংযোগ
১০। ১৯ জুলাই: রাজশাহী বিভাগীয় গণসংযোগ
১১। ১৯ জুলাই: মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের প্রতিরোধ স্মরণ
১২। ২০ জুলাই: মেহনতি মানুষের প্রতিরোধ স্মরণ
১৩। ২৫ জুলাই: ময়মনসিংহ বিভাগীয় গণসংযোগ
১৪। ২৬ জুলাই: ঢাকা বিভাগীয় গণসংযোগ
১৫। ১ আগস্ট: জুলাই ঘোষণাপত্রের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল
১৬। ৩ আগস্ট: হাসিনা পতনের এক দফা স্মরণ
১৭। ৫ আগস্ট: গণঅভ্যুত্থান ও নতুন বাংলাদেশ দিবস উদযাপন
এছাড়া, জুলাই ঘোষণাপত্রের দাবিতে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও সংলাপের আয়োজন করা হবে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। পাশাপাশি, সারাদেশে সাধারণ সমর্থক বৃদ্ধির কার্যক্রমও চলমান থাকবে।
সংবাদ সম্মেলনের সমাপ্তিতে বলা হয়, ‘‘জুলাই আমার, জুলাই আপনার, জুলাই বাংলাদেশের আপামর ছাত্র-জনতার। নতুন বাংলাদেশের পথরেখা হবে এই আত্মত্যাগ ও কুরবানির ভিত্তিতেই। সরকার যেন আর কালক্ষেপণ না করে, জনগণের স্পন্দন বুঝে দ্রুতই ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রকাশ করে।”
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আপ বাংলাদেশের সদস্য সচিব আরেফিন মোহাম্মদ হিজবুল্লাহ, প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা ইরা, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমাদ এবং অন্যান্য কেন্দ্রীয় সদস্য ও সংগঠকবৃন্দ।