শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সিমেন্ট খাতের বহুজাতিক কোম্পানি লাফার্জহোলসিমের ৩০ লাখ শেয়ার বিক্রির ঘোষণা দিয়েছে কোম্পানিটির উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান সিনহা ফ্যাশনস। দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল রোববার এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

ঘোষণায় বলা হয়েছে, লাফার্জহোলসিমের করপোরেট উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান সিনহা ফ্যাশনসের হাতে কোম্পানিটির ২ কোটি ৩১ লাখের বেশি শেয়ার রয়েছে। ওই শেয়ার থেকে প্রতিষ্ঠানটি ৩০ লাখ শেয়ার আগামী ৩০ দিনের মধ্যে বাজারে বিক্রি করবে। ঢাকার বাজারে গতকাল লাফার্জহোলসিমের প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল ৪৭ টাকা ৬০ পয়সা। সেই হিসাবে ৩০ লাখ শেয়ারের বাজারমূল্য দাঁড়ায় ১৪ কোটি ২৮ লাখ টাকা।

এর আগে গত এপ্রিলেও সিনহা ফ্যাশনস তাদের হাতে থাকা লাফার্জহোলসিমের শেয়ারের মধ্য থেকে ২৬ লাখ ২৭ হাজার শেয়ার বিক্রি করে। চলতি বছর এ নিয়ে দুই দফায় প্রায় ৫৬ লাখ শেয়ার বিক্রির ঘোষণা দিয়েছে।

বিদেশি কোম্পানি লাফার্জহোলসিমের মালিকানার সঙ্গে বাংলাদেশি কয়েকটি প্রতিষ্ঠানও যুক্ত রয়েছে। এর মধ্যে একটি সিনহা ফ্যাশনস। কোম্পানিটির প্রায় ২ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা রয়েছে সিনহা ফ্যাশনসের হাতে। সিনহা ফ্যাশনস সিনহা গ্রুপেরই একটি প্রতিষ্ঠান।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ৩০ ল খ শ য় র ফ য শনস

এছাড়াও পড়ুন:

এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর

বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!

কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।

এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)

সম্পর্কিত নিবন্ধ