দেশে তৈরি জাপানের মিতসুবিশি ব্র্যান্ডের ‘এক্সপ্যান্ডার’ মডেলের নতুন গাড়ি বাজারে এনেছে র‌্যানকন মোটরস। প্রথমবারের মতো দেশে তৈরি এই সিরিজের চার ধরনের গাড়ি বাজারে আনা হয়েছে। গত শনিবার রাতে গাড়ি চারটির বাজারজাতকরণের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এত দিন র‌্যানকনের কারখানায় বিদেশ থেকে আনা গাড়ির যন্ত্রাংশ সংযোজন করা হতো। এখন সেখানে গাড়ির মূল কাঠামো ও অন্যান্য অংশ রং করা, সংযোজন ও বাজারে ছাড়ার আগে বিভিন্ন ধরনের নিরীক্ষা সম্পন্ন হচ্ছে। এসব কাজের জন্য এক বছর ধরে কারখানাটিকে আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণ করা হয়েছে। এ জন্য বিনিয়োগ করা হয়েছে প্রায় সাড়ে ৩০০ কোটি টাকা।

গাজীপুরের কাশিমপুরের ভবানীপুর গ্রামে র‌্যানকন ইন্ডাস্ট্রিয়াল বা শিল্প পার্কে অবস্থিত র‌্যানকন অটো ইন্ডাস্ট্রিজের কারখানায় তৈরি করা হয় এসব গাড়ি। ৫২ একর জায়গার ওপর গড়ে তোলা র‍্যানকন ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে মিতসুবিশি মোটরস, মার্সিডিজ বেঞ্জ বাসের চেসিস, সুজুকি মোটরসাইকেল, প্রোটন, জ্যাক, এলজি, তোশিবার বিভিন্ন পণ্য উৎপাদিত হচ্ছে।

শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) এক জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মিতসুবিশির ‘এক্সপ্যান্ডার’ মডেলের চার ধরনের গাড়ির আনুষ্ঠানিক বাজারজাতকরণের উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনচি। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন র‍্যানকন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রোমো রউফ চৌধুরী, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারহানা করিম ও মিতসুবিশি মোটরস করপোরেশনের বিভাগীয় মহাব্যবস্থাপক (ডিভিশন জেনারেল ম্যানেজার) ইউতাকা ইয়ানো।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এক ভিডিও বার্তায় মিতসুবিশি মোটরস করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তাকাও কাতো বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে এটি আমাদের সুন্দর পথচলার সূচনা। এক্সপ্যান্ডার ব্র্যান্ডের গাড়িটি মূলত আসিয়ান অঞ্চলের জন্য নির্মিত। পারিবারিক গাড়ি হিসেবে বাংলাদেশে এই গাড়ির বেশ চাহিদা রয়েছে। র‍্যানকনের সঙ্গে আমাদের অংশীদারত্ব ভবিষ্যতে আরও উন্নত ও নির্ভরযোগ্য গাড়ি তৈরির পথ সুগম করবে।’

মিতসুবিশি মোটরস করপোরেশনের বিভাগীয় মহাব্যবস্থাপক ইউতাকা ইয়ানো বলেন, ‘বাংলাদেশে আমাদের উৎপাদনকেন্দ্রে বিশ্বমানের প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। তাই আমরা গর্বের সঙ্গে বলতে পারি যে বাংলাদেশ এখন মিতসুবিশি মোটরসের মানসম্পন্ন গাড়ি তৈরি করতে প্রস্তুত।’

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে র‍্যানকন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রোমো রউফ চৌধুরী বলেন, ‘র‍্যানকন গ্রুপ দেশে ইলেকট্রনিকস, মোটরবাইক ও অটোমোবাইক—এই তিনটি খাতে উৎপাদনে মনোযোগ দিয়েছে। দেশের ক্রেতাদের জন্য আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের পণ্য স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করে সাশ্রয়ী দামে পৌঁছে দেওয়া আমাদের লক্ষ্য।’

রোমো রউফ চৌধুরী আরও বলেন, ‘কারখানায় নতুন বিনিয়োগের ফলে আমাদের বিভিন্ন কারখানায় দেড় হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। স্থানীয় উৎপাদন ও মূল্য সংযোজন এবং সরকারের নীতিসহায়তার ফলে আমরা এই মডেলের গাড়ির দাম প্রায় ১১ লাখ টাকা পর্যন্ত কমাতে পেরেছি।’

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জাপানের রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনইচি বলেন, এই প্রকল্প শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালে, যখন বাংলাদেশ সরকার দেশের অটোমোবাইল শিল্পকে এগিয়ে নিতে অনুরোধ করেছিল। বাংলাদেশ সরকার যখন আমদানি করা গাড়ির ওপর কাস্টমস শুল্ক কমিয়ে দেয়, তখন মিতসুবিশি ও র‍্যানকন দেশে গাড়ি উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নেয়। বাংলাদেশ এখন এলডিসি থেকে উত্তরণের পথে রয়েছে। তাই শিল্প খাতের বৈচিত্র্য আনয়ন এখন জরুরি। দেশে গাড়ি উৎপাদন সেই উদ্দেশ্য পূরণে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মিতসুবিশি মোটরসের পণ্যদূত ও অভিনেতা সিয়াম আহমেদ।

দাম কত

অনুষ্ঠানে জানানো হয়.

দেড় হাজার সিসির ইঞ্জিনক্ষমতার এক্সপ্যান্ডার ৭ জন মানুষ নিয়েও উঁচু পাহাড়ে অনায়াস উঠতে পারে। গাড়িটি ঘণ্টায় ১৭০ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারে। গাড়িটির ওজন ১ হাজার ২৬০ কেজি। ‘এক্সপ্যান্ডার’ মডেলের গাড়িটি ডিপ ব্রোঞ্জ মেটালিক, গ্রাফাইট গ্রে মেটালিক, কোয়ার্টজ হোয়াইট পার্ল, রেড মেটালিক, ব্লেড সিলভার মেটালিক, গ্রিন ব্রোঞ্জ মেটালিক, জেট ব্ল্যাক মাইকাসহ মোট ৭টি রঙে বাজারে পাওয়া যাবে। ‘এক্সপ্যান্ডার’ মডেলের গাড়িটি স্পোর্টস, প্রিমিয়াম, ক্ল্যাসিক ও ইকো—এই চারটি আলাদা সংস্করণে পাওয়া যাচ্ছে। গাড়িটির ক্ল্যাসিক সংস্করণের দাম ৩৫ লাখ টাকা। প্রিমিয়াম সংস্করণের দাম ৩৬ লাখ টাকা। স্পোর্টস সংস্করণের দাম ৩৮ লাখ টাকা এবং এলপিজি ইঞ্জিনচালিত এক্সপ্যান্ডার ইকো সংস্করণের দাম ৩৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স স করণ র দ ম অন ষ ঠ ন ব যবস থ আম দ র উৎপ দ য নকন ম টরস

এছাড়াও পড়ুন:

উঠোনে ঝলসে ওঠে রোদজ্বলা খাঁচা

মরুরাত্রির ঝড়

উটের গ্রীবার নিচে মরুরাত্রির ঝড়
বয়ে যায়, আর কাঁপে থত্থর।
                      কাঁপতেছ তুমি
                      সমতল ভূমি
পেরিয়ে এসেছ বলে
পৃথিবীর আদি
বাদী ও বিবাদী
           বাস করে স্থলে।

তোমার গ্রীবার নিচে শীতের দৃশ্য
মুগ্ধতা হয়ে বধু মুছে দেয় বিশ্ব।
                       ভাবো তো এবার

                       দৃশ্যে কে আর

         দৃশ্যায়িত থাকে!
ইথারে ইথারে
ভেসে থাকা ছবি
           ভ্যান গঘ কেন আঁকে?

মেঘের চিহ্ন

মেঘের চিহ্ন এঁকে মুখ তার কালো
আমায় দেখতে পেয়ে কিছু চমকাল!

পাতার আড়াল থেকে রোদ নেমে এলে
সোনার মোহর কিছু হাতে হাতে মেলে।

তবু তো ঘোরের ধ্যান ভাঙেনি আমার
দরকার ছিল নাকি এভাবে নামার?

নেমে যাব? এই মন করেনি বারণ
পাহাড় পেরিয়ে এলে, এই কী কারণ!

উঠোনে ঝলসে ওঠে রোদজ্বলা খাঁচা
ভিটেমাটি ঘাসবন—এ–ই হলো বাঁচা।

সুন্দর থাকে অন্ধকোঠরে

সুন্দর থাকে অন্ধকোঠরে উপরিভাগে লাল
যৌবন নাচে যেন আরবীয় ঘোড়ার প্রতিটি ফাল।
কেশর ফুলিয়ে ছুটে যায় সে কাঁপিয়ে মরুর চূড়া
কোনো বেদুইন কাফেলার ছুট পাওয়া একটি ঘোড়া।
              দ্রুত হাঁটে বেদুইন
              ফুরিয়ে আসছে দিন
আশা-নিরাশার এই তো নিয়ম চলছে জগৎজোড়া।

সুন্দর থাকে অন্ধকোঠরে সবকিছুরই গর্ভে
ভূমিষ্ট হয় দিনযাপনের প্রতিদিনের পর্বে।

মুখোমুখি আয়নায়

ছায়া ছায়া একনিমেষের ঘুমে
ঘুমিয়ে ছিলাম যেন!
জেগে উঠে দেখি, পৃথিবীর মুখ
ভাঙে আয়নার ধ্যানও।

জাগরণ ঘটে বাস্তবতায়
নাকি পরাবাস্তবে!
যতবার ভাবি, ভাবতেই থাকি
হিসাব মেলে না ভবে।

পারদের নিচে কাতরতা থাকে
আয়নায় থাকে দেহ
কাতর হৃদয় মুছে দিলে থাকে
দেহজাত সন্দেহ।

মুখোমুখি আয়নায়
চেয়ে দেখি, কেউ নাই!

নীলিমা

বেদনার ডাকনাম
                নীলিমা
অতি দূর তারাদের
                দ্রাঘিমা।

মহাকাশ নিঃসীম
তারও ওই পাড়ে
কার যেন ছায়া পড়ে
দেখি বারে বারে।

বারবার একই ভুল
করি আর ভাবি,
সুন্দর জগতের
মরমের চাবি।

চাবি তুমি নাকছাবি
নীলিমার নাকে
তার যেন হুঁশ হয়
আমার এই ডাকে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ