ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা হাইওয়ে ও ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ভাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড ও এক্সপ্রেসওয়ের ভাঙ্গা ইন্টারচেঞ্জ এলাকায় ফুটপাত ও যাত্রীছাউনীর দখলমুক্ত করতে ভাঙ্গা উপজেলা প্রশাসন উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে।

সোমবার দুপুর ১২টা থেকে প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী পরিচালিত এই অভিযানে শতাধিক অবৈধ দোকান ও বাস কাউন্টার উচ্ছেদ করা হয়।

ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও অভিযান পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মিজানুর রহমান জানান, মহাসড়কে সুষ্ঠু যান চলাচল এবং দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ফুটপাত ও যাত্রীছাউনীর নিচে থাকা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। প্রায় ৩০০টি অবৈধ দোকান এবং ১০০টির বেশি বাস কাউন্টার অপসারণ করা হয়।

তিনি আরও বলেন, থ্রি-হুইলার, অটো, নছিমন, মাহিন্দ্রার মত যানবাহন মহাসড়কে চলাচল ও অবাধে স্টপেজ তৈরি করায় ভাঙ্গা দক্ষিণপাড়া বাসস্ট্যান্ড ও কুমারনদ জোড়া ব্রীজ এলাকায় যানজট ও দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ছে। এ কারণে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে বিশেষ নজর দিয়ে অভিযান পরিচালিত হয়েছে।

ইউএনও জানান, ঈদের আগেই দখলদারদের সতর্ক করতে নোটিশ ও মাইকিং করা হয়েছিল। কিন্তু নির্দেশনা অমান্য করে এক শ্রেণির স্বার্থান্বেষী মহল মহাসড়কের পাশে দোকান ও কাউন্টার চালু রাখে। মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভবিষ্যতেও এই ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রোকিবুজ্জামান জানান, দুর্ঘটনা রোধে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় পুলিশের টহল ও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। অভিযানে কয়েকটি থ্রি-হুইলার ও পরিবহন জব্দসহ ৫টি মামলা করা হয়েছে।

উচ্ছেদ অভিযানে আরও উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেশকাতুল জান্নাত রাবেয়া, ভাঙ্গা পৌরসভার হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা কাওসার মাতুব্বর, সড়ক ও জনপদের কর্মকর্তারা, স্থানীয় থানা ও ট্রাফিক পুলিশ সদস্য এবং সাংবাদিকবৃন্দ।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর

বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!

কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।

এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)

সম্পর্কিত নিবন্ধ