ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ব্যবসায়ীর ৩০ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় তিন ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। তাদের কাছ থেকে ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত মাইক্রোবাস ও নগদ ৮৯ হাজার টাকা জব্দ করা হয়েছে।

গত ২৭ থেকে ২৯ জুন ঢাকা ও ঝালকাঠিতে পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে মতিঝিল থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন— শামিম রহমান, মিজান রহমান ও রবিউল ইসলাম জুয়েল।

সোমবার মতিঝিল থানার ওসি মেজবাহ উদ্দিন বলেন, গত ২৬ জুন রাজধানীর ওয়ারীর নবাবপুর থেকে মোটারসাইকেল যোগে নগদ ৩০ লাখ টাকা নিয়ে মতিঝিল সিটি ব্যাংকে জমা দিতে যাচ্ছিলেন খলিল মিয়া ও ইব্রাহীম হোসেন রিফাত। বেলা পৌনে ১টার দিকে তারা মতিঝিলের ঘরোয়া হোটেলের সামনে পৌঁছালে ৬-৭ ব্যক্তি নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে একটি মাইক্রোবাসে জোর করে তুলে নেয়। 

তিনি বলেন, ডাকাত চক্রটি ভুক্তভোগী খলিল ও রিফাতকে মারধর করে অস্ত্রের মুখে টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে তাদের হাত-পা বেঁধে সাইনবোর্ড এলাকায় ময়লার ডাস্টবিনে ফেলে পালিয়ে যায়। হাত–পা বাঁধা অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে আসেন।

ওসি মেজবাহ উদ্দিন বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী সাইদুল ইসলাম মতিঝিল থানায় একটি মামলা করেন। মামলার তদন্তে নেমে পুলিশ তিন ডাকাতকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় গ্রেপ্তার শামিমের কাছ থেকে মাইক্রোবাস, মিজানের কাছ থেকে ৮০ হাজার এবং জুয়েলের কাছ থেকে ৯ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তার মিজানের বিরুদ্ধে ঝালকাঠির রাজাপুর ও নারায়ণগঞ্জের আড়াই হাজার থানায় আরও দুটি ডাকাতির মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার তিনজনকে সোমবার আদালতে তোলা হয়। শুনানি শেষে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় আদালত। তবে পরে তাদের রিমান্ডের জন্য আবেদন করা হয়। এছাড়া লুণ্ঠিত বাকি টাকা ও পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: মত ঝ ল

এছাড়াও পড়ুন:

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বর-সংলগ্ন মিরপুর সড়কে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

আজ সোমবার বিকেলে সাড়ে তিনটার দিকে এই চিত্র দেখা যায়। এই ঘটনায় উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

দুপুরের দিকে দুটি এক্সকাভেটর নিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভাঙতে গিয়েছিলেন বিক্ষোভকারীরা। পরে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় সেনাবাহিনী ও পুলিশ। এরপর বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে দফায় দফায় ৩২ নম্বর সড়কে যাওয়ার চেষ্টা করে আসছেন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর সদস্যসংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি ঘটনাস্থলে আছেন র‍্যাব ও বিজিবির সদস্যরা। তাঁরা শক্ত অবস্থানে আছেন।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আজ দুপুরের দিকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের সামনের মিরপুর সড়কে দুটি এক্সকাভেটর দেখা যায়।

পরে বিক্ষোভকারীরা ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে এক্সকাভেটর ঢোকানোর চেষ্টা করেন। তাঁদের বাধা দেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী লাঠিপেটা করে।

কিছুটা ছত্রভঙ্গ হয়ে বিক্ষোভকারীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ করে ইটপাটকেল ছোড়ে। এ সময় পুলিশের অন্তত এক সদস্য আহত হন।

আরও পড়ুনএক্সকাভেটর নিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে যাওয়া বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ৪ ঘণ্টা আগে

পরে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড মেরে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গের চেষ্টা করে। এ সময় দফায় দফায় সাউন্ড গ্রেনেডের বিকট শব্দ শোনা যায়। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।

বেলা পৌনে ২টার দিকে দুই ভাগে ভাগ হয়ে বিক্ষোভকারীরা আবার ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে তাঁদের আবার ছত্রভঙ্গ করে দেয় সেনাবাহিনী ও পুলিশ।

বিক্ষোভকারীদের ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে যাওয়ার জন্য দফায় দফায় চেষ্টা এবং তাঁদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুরো এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। নিউমার্কেট থেকে মিরপুরমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

আরও পড়ুনরায়কে কেন্দ্র করে ঢাকায় নিরাপত্তা জোরদার, ১৫ হাজার পুলিশ মোতায়েন৫ ঘণ্টা আগে

বিক্ষোভকারীরা পুরোপুরি সরে না যাওয়ায়, বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে দফায় দফায় ৩২ নম্বর সড়কে আসার চেষ্টা করায় এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসংখ্যা বাড়ানো হয়। এখন এলাকায় সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‍্যাব ও বিজিবির বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন রয়েছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ধানমন্ডি অঞ্চলের অতিরিক্ত উপকমিশনার জিসানুল হক দুপুরে প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘আমরা কোনোমতে কাউকে আইন হাতে তুলে নিতে দেব না।’

গত ফেব্রুয়ারিতে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িটির অর্ধেকের বেশি অংশ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ৩২ নম্বরের বাড়িটি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।

আরও পড়ুনআড়াই ঘণ্টা ধরে পড়া হলো রায়, এরপর এল মৃত্যুদণ্ডের আদেশ২ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ