সাতক্ষীরা প্রেস ক্লাবের সাংবাদিকদের ওপর হামলা হয়েছে। সোমবার (৩০ জুন) দুপুরের এ ঘটনায় প্রেস ক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেমসহ ৩০ সাংবাদিক আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে তিনজন সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি। 

হামলার ঘটনায় বিকেলে প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাদী হয়ে ১৮ জনের নাম উল্লেখসহ নাম না জানা আরো ৩০-৪০ জনের বিরুদ্ধে থানায় এজাহার জমা দিয়েছেন। 

আহতরা হলেন- ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সাংবাদিক ও প্রেস ক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম, ভোরের আকাশের সাংবাদিক আমিনুর রহমান, ডিবিসি নিউজের সাংবাদিক এম বেলাল হোসাইন, অনির্বানের সোহরাব হোসেনসহ ৩০ জন।

আরো পড়ুন:

পাবনায় কনটেন্ট ক্রিয়েটর সাইমুমের বাড়িতে আ.

লীগ সমর্থকদের হামলা

কুড়িগ্রামে দুর্বৃত্তদের হামলায় ফার্মাসিস্ট আহত

আহত সাতক্ষীরা প্রেস ক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, ‍“আমরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রেসক্লাবে একটি সভা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। সেই মুহূর্তে আবু সাঈদ ও আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আলিপুর থেকে আনা ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা আমাদের ওপর হামলা করে। তাদের হামলায় আমাদের অন্তত ৩০ জন সাংবাদিক ও সদস্য আহত হয়েছেন।”

তিনি আরও অভিযোগ করেন, “আবু সাঈদ ও আব্দুল বারী কিছু অসাংবাদিকদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে প্রেস ক্লাব দখল করে রেখেছেন। তাদের মতের বিরুদ্ধে গেলেই হামলা ও নির্যাতন চালানো হয়।”

বাংলাভিশন ও বাসসের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি এবং প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, “আবু সাঈদ ও আব্দুল বারী দীর্ঘদিন ধরে অগঠনতান্ত্রিক ও অবৈধ উপায়ে প্রেস ক্লাব দখল করে রেখেছেন। তারা ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীদের দিয়ে আজ সাংবাদিকদের ওপর যে নগ্ন হামলা চালিয়েছে আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এ ঘটনায় জড়িতদের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করছি।”

ঘটনার পর থেকে প্রেস ক্লাব এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। 

ঢাকা/শাহীন/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ দ র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর

বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!

কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।

এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)

সম্পর্কিত নিবন্ধ