স্মার্টফোনে ডিএসএলআর ক্যামেরার মতো ছবি তোলার ৫ কৌশল
Published: 1st, July 2025 GMT
স্মার্টফোন এখন শুধু যোগাযোগের মাধ্যম নয়, ছবি তোলার ক্ষেত্রেও হয়ে উঠেছে অন্যতম প্রধান যন্ত্র। আধুনিক স্মার্টফোনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তিসহ উন্নত সেন্সর ও ম্যানুয়াল নিয়ন্ত্রণ সুবিধা যুক্ত থাকায় সহজেই ডিএসএলআর ক্যামেরার মতো ভালো মানের ছবি তোলা যায়। স্মার্টফোনে ভালো ছবি তুলতে এআই প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের পাশাপাশি ক্যামেরার সক্ষমতা বাড়ানোর কৌশলগুলো দেখে নেওয়া যাক।
প্রো মোড ব্যবহারস্মার্টফোনে থাকা ‘প্রো’ বা ‘ম্যানুয়াল’ মোড ব্যবহার করে আলোর পরিমাণ, গতি ও রঙের ভারসাম্য সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করা যায়। আর তাই ছবি তোলার আগে আইএসও, শাটার স্পিড, হোয়াইট ব্যালান্স ও ম্যানুয়াল ফোকাস ব্যবহার করে কাঙ্ক্ষিত আবহ তৈরি করতে হবে।
পোর্ট্রেট মোড ব্যবহারডিএসএলআর ক্যামেরার বোকেহ ইফেক্টের কথা অনেকেই জানেন। বোকেহ ইফেক্টে বিষয়বস্তু স্পষ্ট থাকলেও পটভূমি ঝাপসা হয়ে যায়। স্মার্টফোনের পোর্ট্রেট মোড ব্যবহার করেও এই অভিজ্ঞতা পাওয়া সম্ভব। এআই প্রযুক্তি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিষয় ও পটভূমি শনাক্ত করে এবং প্রয়োজনীয় গভীরতা তৈরি করে, ফলে ছবির বিষয়বস্তু আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
আরও পড়ুনস্মার্টফোনের তথ্য নিরাপদ রাখতে এই পাঁচ পদ্ধতি ব্যবহার করছেন তো১০ মে ২০২৫সিন ডিটেকশন সুবিধা ব্যবহারস্মার্টফোনের ক্যামেরায় যুক্ত ‘সিন ডিটেকশন’ বা দৃশ্য শনাক্তকরণ প্রযুক্তি ছবির ধরন নিজে থেকেই বুঝে নেয়। খাবার, প্রকৃতি, প্রাণী, সূর্যাস্ত কিংবা রাতের দৃশ্য যেটাই হোক না কেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ছবির রং, উজ্জ্বলতা ও কনট্রাস্ট অনুযায়ী তাৎক্ষণিকভাবে সামঞ্জস্য আনে। এতে আলাদাভাবে ক্যামেরা সেটিংস নিয়ে ভাবতে হয় না। আর তাই ছবি তোলার সময় অবশ্যই সিন ডিটেকশন সুবিধা ব্যবহার করতে হবে।
সঠিক আলোর ব্যবহারছবি তোলার ক্ষেত্রে আলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। দিনের শুরুতে বা সূর্যাস্তের ঠিক আগে যখন আলো থাকে নরম ও উষ্ণ, তখন ভালো ছবি তোলা যায়। আর তাই যতটা সম্ভব প্রাকৃতিক আলোতে ছবি তোলার চেষ্টা করতে হবে। কারণ, বেশি ফ্ল্যাশ ব্যবহার করলে ছবির স্বাভাবিক রং বিকৃত হতে পারে এবং ত্বকের টোন কৃত্রিম লাগতে পারে।
আরও পড়ুনস্মার্টফোনের জায়গা খালি করার ৪ কৌশল২০ এপ্রিল ২০২৫ফোকাস ও পরিষ্কার লেন্সছবির গুণগত মান নির্ভর করে ফোকাসের ওপর। স্মার্টফোনে স্ক্রিনে যেখানে ট্যাপ করা হয়, ক্যামেরা সেখানেই ফোকাস করে। তাই সঠিক জায়গায় ট্যাপ করে ফোকাস ঠিক করা গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি অনেক সময় লেন্সে আঙুলের ছাপ, ধুলা কিংবা তেলতেলে আবরণ পড়ে থাকে, যার ফলে ছবি ঝাপসা হয়। এ জন্য ছবি তোলার আগে ক্যামেরার লেন্স একটি মসৃণ কাপড় দিয়ে মুছে নিতে হবে।
সূত্র: টেকলুসিভ
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম ড ব যবহ র ব যবহ র কর
এছাড়াও পড়ুন:
এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর
বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!
কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।
চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।
এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)