Samakal:
2025-07-02@00:29:31 GMT

চুল ঝরা কমাতে কী করবেন

Published: 1st, July 2025 GMT

চুল ঝরা কমাতে কী করবেন

বর্ষা ঋতুতে সতেজ এবং মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্যের দেখা মিললেও, এটি আমাদের চুলের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করে। বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে এ সময় চুল বেশি ঝরে। কিছু সহজ নিয়ম মেনে চললে বর্ষাকালে চুল পড়া অনেকাংশে কমানো সম্ভব।
অতিরিক্ত চুল পড়ার কারণ
বাতাসের আর্দ্রতা চুলের স্বাভাবিক গঠন নষ্ট করে। অতিরিক্ত আর্দ্রতার ফলে মাথার ত্বক তৈলাক্ত হয়ে যায়। ফলে ধুলাবালি ও জীবাণু জমে গিয়ে চুল পড়ার সমস্যা আরও বেড়ে যায়। প্রায়ই স্ক্যাল্পে বেশি ঘাম হয়। ফলে চুলের গোড়ার ছিদ্র বন্ধ হয়ে গোড়া দুর্বল হয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া ফাঙ্গাল ইনফেকশন ও খুশকির কারণে চুল পড়া তীব্র আকার নিতে পারে। 
বর্ষাকালে চুল পড়া কমাতে যা করতে পারেন–
বৃষ্টি ভেজা চুলের বিশেষ যত্ন 
বৃষ্টির পানি যতটা বিশুদ্ধ মনে হয়, ততটা পরিষ্কার নয়। এতে প্রায়ই দূষণকারী এবং অ্যাসিডিক উপাদান থাকে, যা আপনার চুলকে ভঙ্গুর করে তুলতে পারে এবং ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকিতে ফেলতে পারে। সঠিক যত্ন ছাড়াই বৃষ্টির পানির সংস্পর্শে আসার ফলে চুলের গোড়া ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। বাইরে বেরোনোর ​​সময় স্কার্ফ বা ছাতা ব্যবহার করুন। বৃষ্টির পানিতে চুল ভিজে গেলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মৃদু শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
মাথার ত্বকের যত্ন
এ সময় পরিষ্কার এবং শুষ্ক মাথার ত্বক বজায় রাখুন। সপ্তাহে একবার বা দু’বার চুলে তেল লাগান। এতে চুল পুষ্টি পাবে এবং শুষ্কতা রোধ হবে। হালকা গরম তেল দিয়ে মাথার ত্বকে হালকা ম্যাসাজ করলে রক্ত ​​সঞ্চালন বাড়ে, যা আপনার চুলের গোড়ার পুষ্টি বাড়ায়। চুল ধোয়ার পর ভাঙা এড়াতে মাইক্রোফাইবার তোয়ালে দিয়ে চুল শুকিয়ে নিন। চুলের স্বাভাবিক স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য এ সময় হিট স্টাইলিং সরঞ্জামের ব্যবহার কমিয়ে আনাও বুদ্ধিমানের কাজ। প্রতিদিন মোটা দাঁতের চিরুনি দিয়ে আলতো করে চুল আঁচড়ান। চেষ্টা করবেন কাঠের চিরুনি ব্যবহার করার।
শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার
এমন ফর্মুলেশনের শ্যাম্পু খুঁজুন যাতে ছত্রাকবিরোধী এবং খুশকিবিরোধী বৈশিষ্ট্য থাকে। অত্যধিক রাসায়নিক পদার্থ মেশানো শ্যাম্পু এড়িয়ে চলুন। এটি আপনার চুলের প্রাকৃতিক তেল নষ্ট করে দিতে পারে। হাইড্রেটিং কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। এটি আর্দ্রতার কারণে সৃষ্ট কুঁচকে যাওয়া নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে।
পুষ্টিকর খাবার
চুলের স্বাস্থ্য সরাসরি আমাদের খাদ্যাভ্যাসের সঙ্গে যুক্ত। তাই প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন (ডাল, মাছ, ডিম), ভিটামিন এ, সি, ই এবং দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। পাশাপাশি প্রচুর পানি পান করুন।
হেয়ার মাস্ক
বর্ষায় চুল পড়া রোধে ঘরে তৈরি হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন।
নারকেল ও লেবুর রস
এক কাপ নারকেল তেলে দুই চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে হালকা গরম করুন। তারপর স্ক্যাল্পে ভালো করে ম্যাসাজ করুন। ৩০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করুন। এটি খুশকি কমায়, চুল পড়া রোধ করে এবং স্ক্যাল্প পরিষ্কার রাখে।
মেথির পেস্ট
রাতে দুই টেবিল চামচ মেথি ভিজিয়ে রাখুন। সকালে পেস্ট বানিয়ে স্ক্যাল্পে লাগান। ৩০-৪০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। মেথি চুল পড়া ও চুলের রুক্ষতা কমায়, চুলের গ্রোথ বাড়ায়।
অ্যালোভেরা জেল
পরিষ্কার অ্যালোভেরা পাতা থেকে জেল বের করে নিন। স্ক্যাল্প ও চুলে মেখে নিন। ৩০ মিনিট পর হালকা শ্যাম্পু করুন। অ্যালোভেরা মাথার ত্বক ঠান্ডা রাখে, ফাঙ্গাল সমস্যা কমায় এবং চুল মসৃণ করে।
দই ও মধু
তিন টেবিল চামচ টক দইয়ের সঙ্গে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে নিন। চুলে ও স্ক্যাল্পে লাগিয়ে ২০-৩০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করুন। এটি চুলে প্রোটিন জোগায় ও ন্যাচারাল কন্ডিশনারের মতো কাজ করে।
পেঁয়াজের রস
একটি পেঁয়াজ ব্লেন্ড করে রস বের করুন। তুলা দিয়ে স্ক্যাল্পে লাগান, হালকা ম্যাসাজ করুন। ১৫-২০ মিনিট পর শ্যাম্পু করুন। পেঁয়াজের সালফার চুলের গোড়া শক্ত করে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। v
মডেল: মার্শিয়া; ছবি: আর্কাইভ

তথ্যসূত্র: স্মিটেন, গ্ল্যামভেডা

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর ম থ র ত বক পর ষ ক র

এছাড়াও পড়ুন:

বর্ণিল আয়োজনে ঢাবির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা, দৃষ্টিনন্দন আলোকসজ্জাসহ বর্ণিল আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হল, হোস্টেল ও প্রশাসনিক ভবন থেকে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মচারীদের নিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের নেতৃত্বে ক্যাম্পাসে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়।

সকাল ১০টায় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) সম্মুখের পায়রা চত্বরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাতীয় পতাকা, বিশ্ববিদ্যালয় ও হলগুলোর পতাকা উত্তোলন এবং কেক কাটা হয়। টিএসসি মিলনায়তনে ‘বৈষম্যহীন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ বিনির্মাণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’ শিরোনামে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ। অনুষ্ঠানে একটি স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করা হয়।  

১৯২১ সালের ১ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হয়। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে উপাচার্য ভবন, কার্জন হল, কলা ভবন, টিএসসিসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও সড়কে আলোকসজ্জা করা হয়। 

সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শুধু একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়, এটি জাতির আত্মপরিচয়ের প্রতীক, সভ্যতা গঠনের শিকড় ও স্বাধীনতার জাগরণ গাথা।

অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেষ্ঠ অর্জন হচ্ছে এটির অন্তর্ভুক্তিমূলক বৈশিষ্ট্য। এখানে ধনী-গরিব, শহর-গ্রাম, নারী-পুরুষ ও সংখ্যাগরিষ্ঠ-সংখ্যালঘু– সবাই পেয়েছেন সমান মর্যাদা। এখানে প্রতিটি কণ্ঠের রয়েছে মূল্য, প্রতিটি স্বপ্নের রয়েছে ছুঁয়ে দেখার অধিকার। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্মই হয়েছিল বৈষম্য দূরীকরণের তাগিদে।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয় মাত্র ৬০ জন শিক্ষক ও ৮৭৭ শিক্ষার্থী নিয়ে। আজ সেই প্রতিষ্ঠান পরিণত হয়েছে দেশের সর্ববৃহৎ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার এবং শিক্ষক আছেন প্রায় দুই হাজার। এর বাইরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে ২০০টি প্রতিষ্ঠান। এতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় দেড় লাখ। এটি আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। 

তিনি বলেন, রাজনৈতিক ভূমিকা পালনের পাশাপাশি শিক্ষার মানোন্নয়নেও আমরা দায়বদ্ধ। যারা গণঅভ্যুত্থানে রক্ত দিয়েছে, প্রাণ দিয়েছে, তারা আমাদের কাঁধে কিছু দায়িত্ব রেখে গেছেন। সেই দায়িত্ব হচ্ছে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পরিবেশ নিশ্চিত করা, শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মধ্যে বিশ্বাস ও সহযোগিতার বন্ধন অটুট রাখা।

উপাচার্য বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পথচলা কখনও শুধু একাডেমিক পরিসরে সীমাবদ্ধ ছিল না। ১৯৫২, ১৯৬৯, ১৯৭১ এবং ১৯৯০-এর প্রতিটি আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান ইতিহাসে গর্বের সঙ্গে উচ্চারিত হয়। ২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থান আমাদের সংগ্রামের নতুন অধ্যায়। দেশের মানুষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর ভরসা রেখেছে বলেই প্রতিটি ক্রান্তিকালে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকে সাড়া দিয়েছে।

অনুষ্ঠানে সংগীত বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে জাতীয় সংগীত ও উদ্দীপনামূলক দেশাত্মবোধক গান পরিবেশিত হয়। এ ছাড়া বিদেশি শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সংগীত পরিবেশিত হয়। আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ