‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের ওপর আদেশ এক দিন পেছাল
Published: 6th, August 2025 GMT
রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের (রিভিউ) ওপর আদেশের দিন পিছিয়েছে। এক দিন পিছিয়ে আগামীকাল বৃহস্পতিবার আদেশের জন্য দিন রেখেছেন আপিল বিভাগ।
আজ বুধবার আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের বেঞ্চ আদেশের এই দিন ধার্য করেন। আদালত বলেছেন, আদেশ প্রদান ৭ আগস্ট পর্যন্ত মুলতবি করা হলো। বিষয়টি আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) কার্যতালিকার ১ নম্বর ক্রমিকে থাকবে।
এর আগে রিভিউ আবেদনের ওপর গত ৩০ জুলাই শুনানি শেষে আপিল বিভাগ আদেশের জন্য ৬ আগস্ট তারিখ ধার্য করেছিলেন। সে অনুসারে আজ বিষয়টি আদালতের কার্যতালিকায় ১ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।
আজ আদালতে রিভিউ আবেদনকারী মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন এবং রিট আবেদনকারী পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী ও নিহাদ কবির উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া ইন্টারভেনার (ব্যাখ্যাকারী) হিসেবে শুনানিতে অংশ নেওয়া জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো.
আজ আদালত থেকে বেরিয়ে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন প্রথম আলোকে বলেন, আদালত রিভিউ আবেদনে একটি অ্যাডিশনাল গ্রাউন্ড (বাড়তি যুক্তি) দিতে বলেছেন। আগামীকাল আদেশের জন্য দিন রেখেছেন।
ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স সংশোধন করে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। পরে ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। রায়ে রাষ্ট্রের সাংবিধানিক পদধারীদের পদক্রম ওপরের দিকে রাখা ও অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়। পাশাপাশি জেলা জজদের পদক্রম আট ধাপ উন্নীত করে সচিবদের সমান করা হয়।
আপিল বিভাগের রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতির পদক্রম এক ধাপ উন্নীত করে জাতীয় সংসদের স্পিকারের সমান এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের (স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদক ও মহান স্বাধীনতাসংগ্রামে অংশগ্রহণ করে যে মুক্তিযোদ্ধারা বীর উত্তম খেতাব পেয়েছেন) পদক্রমে যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত বলে উল্লেখ করা হয়।
রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) তৎকালীন চেয়ারম্যান ২০১৭ সালে পৃথক আবেদন করেন। রিভিউ আবেদনে রাষ্ট্রের ৯০ জন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পক্ষভুক্ত হন। পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের ওপর গত ২৭ এপ্রিল শুনানি শুরু হয়, ৩০ জুলাই শেষ হয়।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী, ১৯৮৬ সালে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরি করে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর একই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর তা জারি করা হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে তা সংশোধন করা হয়।
সবশেষ সংশোধন করা হয় ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে। সংশোধিত এই ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরির ক্ষেত্রে সাংবিধানিক পদ, সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত ও সংজ্ঞায়িত পদগুলো প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিচের ক্রমিকে রাখা হয়েছে—এমন উল্লেখ করে এর বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন মহাসচিব মো. আতাউর রহমান ২০০৬ সালে রিট করেন।
রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট আট দফা নির্দেশনাসহ ১৯৮৬ সালের ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স (সংশোধিত) অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ২০১১ সালে আপিল করে। এ আপিলের ওপর শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০১৭ সালে করা আবেদনের ওপর আগামীকাল আদেশ হতে যাচ্ছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ য ষ ঠ আইনজ ব আপ ল ব ভ গ র আগ ম ক ল
এছাড়াও পড়ুন:
জাবির সহকারী অধ্যাপক ড. নাহরিনের বিরুদ্ধে জামায়াত নেতার মামলা
টিভি অনুষ্ঠানে মানহানিকর ও মিথ্যা বক্তব্য উপস্থাপন করায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. নাহরিন ইসলাম খানের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা হয়েছে। সিরাজগঞ্জ জেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি ও সিরাজগঞ্জ-২ সংসদীয় আসনে দলটির মনোনীত প্রার্থী অধ্যাপক জাহিদুল ইসলাম জাহিদ বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের সদর থানা আমলী আদালতে মামলাটি হয়। আদালতের বিচারক জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কে এম শাহরিয়ার শহিদ বাপ্পি মামলাটি গ্রহণ করেছেন বলে জানিয়েছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী।
আরো পড়ুন:
দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার ৩
গাইবান্ধায় ৩ জনকে পিটিয়ে হত্যা: মামলা দায়ের
আইনজীবী অ্যাডভোকেট তরিকুল ইসলাম বলেন, “আদালতে আমরা ভিডিও ক্লিপসহ সব প্রমাণাদি উপস্থাপন করেছি। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি প্রাথমিক যাচাই-বাছাই শেষে পরবর্তী আইনগত প্রক্রিয়ার জন্য বিবেচনায় নিয়েছেন।”
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ২৫ অক্টোবর গাজি টেলিভিশনের টকশো টাইম লাইন বাংলাদেশে কাজি জেসিনের উপস্থাপনায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ড. নাহরিন ইসলাম খান বলেন, সিরাজগঞ্জ জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি একটি গণমাধ্যমে দেওয়া বক্তব্যে দাবি করেছেন, ৫ আগস্টে পলাতক আওয়ামী লীগ নেতাদের স্ত্রীদের ওপর জামায়াত নেতাকর্মীদের হক রয়েছে। মুহূর্তেই নাহরিন খানের টকশো বক্তব্যটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
এ বিষয়ে অধ্যাপক জাহিদুল ইসলাম জাহিদ বলেন, “গত (২৫ অক্টোবর) গাজি টেলিভিশনের টকশোতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ড. নাহরিন ইসলাম খান মানহানিকর বক্তব্য দিয়েছে এবং জামায়াতকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করায় সিরাজগঞ্জ আমলী আদালতে মানহানির মামলা করেছি।
ঢাকা/অদিত্য/মাসুদ