জুলাই গণঅভ্যুত্থান হঠাৎ করে গড়ে ওঠেনি, বরং দীর্ঘ সাড়ে পনেরো বছরের দুঃশাসনের প্রতিক্রিয়া। গুম-খুন, ভোটাধিকার হরণ, বিচারহীনতা, দলীয় দমননীতি, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, দুর্নীতি ও সামাজিক বৈষম্য—সব মিলিয়ে এক চরম নিষ্পেষণমূলক বাস্তবতা এই আন্দোলনের ভিত্তি তৈরি করেছে।
এই আন্দোলনের পেছনে ছিল বিএনপি ও বামপন্থী রাজনৈতিক শক্তি, সাংস্কৃতিক সংগঠন, ইসলামি দলসমূহ, পেশাজীবী সংগঠন, মানবাধিকার ও নারী সংগঠন, পরিবেশবাদী ও প্রবাসী সমাজ, এমনকি সরকারি চাকরিজীবীদের একটি অংশ। এই বহুমাত্রিক অংশগ্রহণই ছিল আন্দোলনের মূল শক্তি— ‘সবার আন্দোলন’।
কিন্তু দুঃখজনকভাবে ৫ আগস্ট অভ্যুত্থানের পর অবস্থার পরিবর্তন খুব একটা হয়নি। দমনপীড়ন, হামলা-মামলা, সন্ত্রাস, খুন, নির্যাতনের ধারা এখনও চলমান। গুম হওয়া মানুষ ফেরে না, দুর্নীতিবাজ ধরা পড়ে না, অর্থ পাচারকারী ফেরে না, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয় না। সাধারণ মানুষের মৌলিক চাহিদা—খাদ্য, চিকিৎসা, নিরাপত্তা, শিক্ষা, বাসস্থান— সব কিছুতেই ব্যর্থতার ছাপ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। প্রশাসনিক সংস্কারের নামে র্যাব-পুলিশ-আনসারের পোশাক বদলানো হলেও, তাদের চরিত্রের কি কোনো পরিবর্তন হয়েছে? প্রতিহিংসার রাজনীতি, দলীয়করণ, সিন্ডিকেট ও দুর্নীতির শিকলে প্রশাসন এখনো বন্দি।
অথচ এই অভ্যুত্থানের মূল চেতনা ছিল—একটি বৈষম্যহীন, গণতান্ত্রিক, মানবিক বাংলাদেশ গঠন। কিন্তু আজ, সেই চেতনার পরিবর্তে আমরা দেখতে পাচ্ছি—ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত হয়েছে একদল ছাত্রনেতা, এনজিও প্রতিনিধি ও আমলাভিত্তিক তথাকথিত ‘সুশীল’ শ্রেণির হাতে। ফলে গণআকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত না হয়ে বরং আমরা ব্যর্থতার এক ঘূর্ণিতে আটকে গেছি।
আরো পড়ুন:
‘আমার ছেলেকে হত্যা করা এসআই এখনো কীভাবে চাকরি করে?’
খুলনায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতিচারণ ও উন্মুক্ত আলোচনা
জনগণের এই আত্মত্যাগ, প্রতিবাদ, আশা ও স্বপ্ন যেন বিফলে না যায়—সেই আহ্বানেই আজ এই লেখা। কারণ আমরা জানি, ইতিহাস কখনো নীরব থাকে না।
আমার জুলাই সনদ জনগণের রক্তে লেখা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের নতুন চুক্তিপত্র। কোনো একক রাজনৈতিক দল বা সংগঠনের দলিল নয়—এটি আমার, আপনার, আমাদের সবার। এটি একটি স্বপ্নের মানচিত্র, যা ছাত্রদের রক্তে, শ্রমিকের ঘামে, কৃষকের মাটিতে আর সাধারণ মানুষের আকাঙ্ক্ষায় আঁকা। এই সনদ শুধু দাবির তালিকা নয়, এটি আমাদের অধিকার ও কর্তব্যের একটি নৈতিক চুক্তি।
এই সনদে আকাঙ্ক্ষা—শিক্ষা হোক সবার জন্য, স্বাস্থ্যসেবা হোক নাগালের মধ্যে, শ্রমিকের মজুরি হোক ন্যায্য, কৃষকের ফসলের দাম হোক নিশ্চিত। নাগরিক হিসেবে সবাই থাকুক সমান মর্যাদায়; ধর্ম, জাতি বা অঞ্চলের বিভাজন ছাড়া।
আমার জুলাই সনদ গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা, নির্দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্রগঠন, নাগরিকদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থার রূপায়ণ। এটি সেই প্রতিচ্ছবি আঁকে, যেখানে গুম-খুন থাকবে না, যেখানে সংবাদপত্র স্বাধীনভাবে সত্য প্রকাশ করতে পারবে, যেখানে ভোটের দিন মানুষ ভয় নয়, আশা নিয়ে কেন্দ্রে যাবে এবং যেখানে রাষ্ট্রের প্রতিটি স্তম্ভ জনগণের অধিকার ও মর্যাদাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে কাজ করবে। এটি কারো দয়ার দান নয়—এটি জনগণের অর্জিত রাষ্ট্র, আর এই রাষ্ট্র চলবে জনগণের ইচ্ছায়, ভোটে এবং জবাবদিহিতে। এটি ক্ষমতা নয়, ন্যায়ের ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনার দাবি তোলে। এটি শুধু সরকারের পরিবর্তন নয়, রাষ্ট্রব্যবস্থা ও চিন্তার আমূল সংস্কার চায়—যেখানে মানুষ থাকবে কেন্দ্রে, দল নয়; অধিকার থাকবে অগ্রভাগে, শোষণ নয়, দমন নয়; সম্মান থাকবে সকলের জন্য। জনগণের রক্তে লেখা দলিল, যা ভবিষ্যতের প্রজন্মকে জানিয়ে দেবে, একদিন এই মাটিতে একদল মানুষ বেঁচে থাকার মর্যাদা, স্বাধীন চিন্তা ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজব্যবস্থার জন্য সংগ্রাম করেছিল, জীবন দিয়েছিল।
আমার জুলাই সনদ সবাইকে নিয়ে গড়া একটি নতুন সামাজিক চুক্তি, যেখানে কারো অধিকার হরণ করা যাবে না, কেউ আন্দোলনের রক্তের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারবে না। এটি একটি অঙ্গীকার—গণতন্ত্র, সমতা ও ন্যায়বিচারের পথে অবিচল থাকার।
জুলাই অভ্যুত্থান ছিল কেবল সরকারের বিরুদ্ধে নয়, পুরো শোষণভিত্তিক রাষ্ট্রকাঠামোর বিরুদ্ধে এক গণজাগরণ। এই অভ্যুত্থান রাষ্ট্রের চেতনাকে পাল্টে দেওয়ার ডাক দিয়েছিল—দেয়ালজুড়ে, রাস্তায়, ক্যাম্পাসে এবং মঞ্চে। সেই সময় সারাদেশের ছাত্র সমাজ ও জনগণ লিখে দিয়েছিল, তারা কেমন বাংলাদেশ চায়: ‘বাংলাদেশ কারো বাপের নয়, সবার। স্বৈরশাসন মানি না। ধর্ম যার যার, দেশ সবার। আমরা চাই অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ, যেখানে মানুষের চিন্তা ও বিশ্বাস থাকবে নিরাপদ। আমরা চাই মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হোক, যেন কেউ ক্ষুধায়, বেকারত্বে, অনিশ্চয়তায় হারিয়ে না যায়। শিক্ষা শেষে চাকরি চাই, বেকারমুক্ত বাংলাদেশ চাই। এই দেশ হবে বৈষম্যহীন, দুর্নীতিমুক্ত—যেখানে রাষ্ট্রের সম্পদ লুটেরাদের পকেটে যাবে না, বরং জনগণের কল্যাণে ব্যয় হবে। তারা বলেছে: খুন-ধর্ষণের বিচার চাই, সমান অধিকারের বাংলাদেশ চাই, ন্যায়বিচারের বাংলাদেশ চাই, মানুষের মতো বাঁচতে চাই। কৃষক যেন তার ফসলের ন্যায্য দাম পায়, শ্রমিক যেন ন্যায্য মজুরি পায়, আর সকলের জন্য গুণগত শিক্ষা ও নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত হোক—এই ছিল তাদের স্বপ্ন।
তারা দাবি করেছে: স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই, আমার ভোট আমি দিতে চাই, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ চাই, ফ্যাসিবাদের অবসান চাই। এইসব শ্লোগান ছিল জনগণের রক্তে লেখা রাজনৈতিক ইশতেহার।
গণঅভ্যুত্থানের বছর পেরিয়ে আজ যারা জুলাই সনদের দাবি তুলছেন, প্রশ্ন ওঠে গত এক বছরে নিজেরাই কি সেই সনদের বিপরীত পথে হাঁটেননি? তাদের ভাষা, আচরণ ও রাজনৈতিক কৌশল কি ঠিক সেই রূপ নেয়নি, যার বিরুদ্ধে একসময় তারা শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে কথা বলেছিল? ‘জনগণের রাষ্ট্র, জনতার অধিকার, নির্বাচনই একমাত্র বিকল্প’—এই কথাগুলো যারা উচ্চারণ করেছেন, তারাই পরে দলীয় সংকীর্ণতা, কেন্দ্রীয় কর্তৃত্ববাদ, ষড়যন্ত্রমূলক কৌশল ও আন্দোলন বিভক্ত করার খেলায় মেতেছিলেন!
এই এক বছরে অনেকেই আন্দোলনের মধ্যে দাঁড়িয়ে ডানে-বাঁয়ে দুলেছেন, নেতৃত্বের স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠার বদলে ব্যক্তিকেন্দ্রিক আধিপত্যে লিপ্ত হয়েছেন! এই আত্মঘাতী দ্বিচারিতা আন্দোলনের চেতনায় শুধু চিড় ধরায়নি, জনগণের মধ্যেও আস্থার সংকট তৈরি করেছে। শিক্ষার্থীদের আত্মত্যাগ, শহীদের রক্ত আর সাধারণ মানুষের ত্যাগকে তারা রাজনৈতিক সুবিধার বাণিজ্যে পরিণত করেছে।
আজ যারা জুলাই সনদ বাস্তবায়নের ডাক দিচ্ছেন, তাদের প্রতি জনগণের প্রশ্ন—আপনারা কি সত্যিই নেতৃত্বে জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা করেছেন? শিক্ষার্থীদের প্রতি দেখিয়েছেন যথাযথ শ্রদ্ধা? আন্দোলনের পথকে স্পষ্ট রেখেছেন? নাকি নিজেরাই বিভ্রান্তি, বিভাজন এবং দমনমূলক কৌশলের পুনরাবৃত্তি ঘটিয়েছেন? যখন সেই একই ভাষা ও মনোভাব ফিরে আসে, যা একসময় স্বৈরাচারী শাসনের প্রতিচ্ছবি ছিল, তখন জনগণ বিভ্রান্ত হয় না—তারা বুঝে নেয়, কারা আন্দোলনের সাথী, আর কারা ছদ্মবেশী।
জুলাই সনদ কোনো রাজনৈতিক দলের একক মালিকানা নয়। এটি জনগণের সংগ্রাম, ত্যাগ ও স্বপ্নে লেখা এক নৈতিক ঘোষণা। ছাত্রদের রক্ত, শ্রমিকের ঘাম, মায়ের কান্না আর সাধারণ মানুষের দীর্ঘশ্বাসে গড়া এই সনদ কোনো দলের দলিল হতে পারে না। যারা নিজেদের সুবিধা পেতে এই সনদের নাম ব্যবহার করছে, তারা এই দেশের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছে।
শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নেবে জনগণ—কে এই সনদের যোগ্য উত্তরাধিকারী। এখানে কোনো দলের নাম, অতীত জনপ্রিয়তা বা কথার ফুলঝুরি কাজে আসবে না। কেবল নেতৃত্বের জবাবদিহি, আদর্শের প্রতি নিষ্ঠা এবং আন্দোলনের প্রতি সম্মানই নির্ধারণ করবে কে থাকবে জনগণের পাশে, আর কে হারিয়ে যাবে ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে।
‘জুলাই সনদ’ এখন এক রকমের নৈতিক ও মানবিক মানদণ্ড, একটি জবাবদিহির রেফারেন্স। যারা শুধু মুখে এর কথা বলেন, কিন্তু নিজের রাজনীতিতে এর প্রতিফলন ঘটাতে ব্যর্থ হন, তারা জনগণের পক্ষ থেকে কথা বলার ন্যূনতম অধিকার হারান। কারণ এই জাতি আর আগের মতো না—এখন তারা দেখছে, বিচার করছে এবং চিহ্নিত করছে—কারা কেবল স্লোগান তুলে নিজেদের আড়াল করতে চায়, আর কারা সত্যিকারের রাষ্ট্র পুনর্গঠনের সহযাত্রী।
‘জুলাই সনদ’ কেবল অতীতের দলিল নয়, এটি ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের রূপরেখা। এটি রাজনৈতিক ঘোষণার চেয়েও বেশি—একটি নৈতিক চুক্তি, যার ব্যত্যয় মানে জনগণের সাথে প্রতারণা। তাই যারা এই সনদের দাবিদার, তাদের আগে নিজের আয়নায় মুখোমুখি হওয়া প্রয়োজন—তাদের রাজনীতি, দৃষ্টিভঙ্গি এবং আচরণ কি সত্যিই এই সনদের মূল দর্শনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ? নাকি তারা শুধু ইতিহাসের মোড়ে দাঁড়িয়ে নাটকের মুখ্য চরিত্র হওয়ার চেষ্টা করছে?
জাতি ভুলে যায় না—কে মুক্তিযুদ্ধের নাম নিয়ে ব্যবসা করেছে, কে গণঅভ্যুত্থানকে ক্ষমতার সিঁড়ি বানিয়েছে, আর কে জনগণের আত্মত্যাগকে বেচে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করেছে। ইতিহাস তাদের বিচার করবেই। কারণ জনগণ কখনো নিরব বিচারক নয়।
আমি ‘জুলাই সনদ’কে আমার হৃদয়ের শপথ মনে করি। আমি অঙ্গীকার করছি—আমার প্রত্যেক কাজ, আমার রাজনীতি, আমার ভাষা ও কর্মকাণ্ড হবে এই সনদের প্রতি দায়বদ্ধ। আমরা একসঙ্গে, ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমাদের বাংলাদেশকে সত্যিকার অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতন্ত্রের মডেলে রূপান্তর করব। ‘জুলাই সনদ’ আমাদের collective প্রতিজ্ঞা, জনগণের রক্তে লেখা গণতন্ত্রের চুক্তিপত্র। বিভাজন নয়, ঐক্য চাই। আমাদেরকে ধর্ম, ভাষা, বর্ণ বা শ্রেণি নির্বিশেষে মিলেমিশে চলতে হবে। সকলের অংশগ্রহণে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র ও সমাজ গড়তে হবে। আমার ‘জুলাই সনদ’ হলো আমার সংগ্রাম ও অশিংদারিত্বের গর্ব, আমার পরিচয়, অহংকার, আমার অঙ্গীকার।
লেখক : গবেষক ও রাজনৈতিক কলাম লেখক
তারা//
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ ল ই গণঅভ য ত থ ন গণঅভ য ত থ ন গণতন ত র জনগণ র র র জন ত ক র র জন ত ই সনদ র র জন য আম দ র স গঠন সরক র ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপি উড়ে এসে জুড়ে বসেনি: মির্জা ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এ দেশে যা কিছু ভালো, সবকিছু দিয়েছে বিএনপি। তাই নানা নির্যাতন-নিপীড়ন করেও দলটিকে কেউ বিলীন করতে পারেনি। এই দল ফিনিক্স পাখির মতো। একে ভেঙে ফেলার ষড়যন্ত্র হয়েছে, কিন্তু সফল হয়নি। বরং ষড়যন্ত্রকারীরাই পালিয়ে গেছে। বিএনপি সেই দল, যারা উড়ে এসে জুড়ে বসেনি।
আজ শনিবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের পুরোনো স্টেডিয়ামে জেলা বিএনপির ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে এ কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে জানিয়ে এই নেতা বলেন, বর্তমানে দেশে অনেক ষড়যন্ত্র চলছে এবং মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হচ্ছে বিএনপিকে। যাদের কাল জন্ম হয়েছে এবং যারা একাত্তর সালে ভিন্ন অবস্থানে কিংবা ভিন্ন জায়গায় ছিল—তারাও বিএনপিকে নিয়ে নানা কথা বলে। যা কিছু ভালো, তার সবকিছু বাংলাদেশে দিয়েছে এই বিএনপি। দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বিএনপি এই পর্যায়ে এসেছে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে যে সুযোগ এসেছে এবং নির্বাচনের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার যে সুযোগ তৈরি হয়েছে—তা কাজে লাগাতে হবে। বিএনপি এ জন্য প্রস্তুত।
দেশ গঠনে বিএনপির অবদান তুলে ধরে দলটির মহাসচিব বলেন, শহীদ জিয়া ছিলেন বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছিলেন। এর আগে শেখ মুজিবুর রহমান মাত্র চারটি পত্রিকা চালু রেখে সব পত্রপত্রিকা বন্ধ করে দেন। তরুণদের এ কথাটা জানা দরকার। শহীদ জিয়ার স্বপ্ন ছিল একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নির্মাণের, আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার। সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার জন্য তিনি বিএনপিকে প্রতিষ্ঠা করেন। বাকশাল থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র নিয়ে আসেন।
কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলমের সভাপতিত্বে ও মাজহারুল ইসলামের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম। বক্তব্য দেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ, কোষাধ্যক্ষ এম রাশিদুজ্জামান মিল্লাত, সহসাংগঠনিক সম্পাদক শাহ মোহাম্মদ ওয়ারেছ আলী ও আরেক সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ।