নাটোরের লালপুরে প্রাইভেট কারের পাশ থেকে চালকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন যাত্রী তাওহিদুল ইসলাম (২০)। গতকাল শনিবার নাটোরের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন তিনি।

ওই জবানবন্দির বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার আসামি তাওহিদুল পারিবারিক টানাপোড়েনে মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন এবং উগ্রবাদী হয়ে উঠেছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, সমাজ থেকে খারাপ লোক সরিয়ে ফেলার উদ্দেশ্যে তিনি ওই চালককে গলা কেটে হত্যা করেছেন।

গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে গোপালপুর নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস হাইস্কুলের পাশের লালপুর-বনপাড়া সড়ক থেকে প্রাইভেট কারের চালক সাইদুর রহমানের (৩৫) গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় ওই গাড়ির যাত্রী তাওহিদুল ইসলামকে রক্তমাখা ছুরিসহ গ্রেপ্তার করা হয়। এই ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার করে গতকাল বিকেলে তাঁকে আদালতে হাজির করা হয়।

নিহত সাইদুর কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার ভেড়ামারা দক্ষিণ রেলগেট এলাকার বামনপাড়া গ্রামের আলতাফ হোসেনের ছেলে। গ্রেপ্তার তাওহিদুল দৌলতপুর উপজেলার বহিরমালি গ্রামের মহিদুল ইসলামের ছেলে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা লালপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সেলিম রেজা জানান, তাওহিদুল ইসলাম অবিবাহিত ভবঘুরে। পারিবারিক নানা টানাপোড়েনে তিনি মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। তিনি ধর্মীয় গোঁড়ামির বশবর্তী হয়ে সমাজের খারাপ লোকদের হত্যার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। কুমিল্লা ও চট্টগ্রামে দুটি ঘটনায় ব্যর্থ হয়েছিলেন। এরপর অসামাজিক কাজে লিপ্ত থাকার অভিযোগে তিনি চালক সাইদুল ইসলামকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

জবানবন্দিতে তাওহিদুল জানিয়েছেন, কাজের সন্ধানে তিনি একসময় কুমিল্লায় যান। সেখানে এক ব্যক্তি তাঁকে দিয়ে মাদক সরবরাহ করাতেন। এর প্রতিবাদে তিনি মাদকে আগুন ধরিয়ে দেন। কিন্তু কেউ মারা যায়নি। পরে সমাজের অন্য দুষ্ট লোকদের তিনি খুঁজতে থাকেন। তিনি যৌনপল্লির সামনে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় চালক সাইদুরকে দেখতে পান। তখন তিনি তাঁকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেন। ৭০ টাকা দিয়ে একটি ছুরি কেনেন এবং বনপাড়ায় যাওয়ার কথা বলে আড়াই হাজার টাকা দিয়ে সাইদুরের গাড়ি ভাড়া করেন। ৭ আগস্ট সন্ধ্যার পর তিনি সাইদুরের গাড়িতে বনপাড়ার দিকে যাচ্ছিলেন। গোপালপুরে সুগার মিলস স্কুলের পাশে পৌঁছালে তিনি চালককে গাড়ি থামাতে বলেন। এ সময় তিনি পেছন থেকে চালকের গলার ডান পাশে টান দেন এবং গলা কেটে ফেলেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। তাঁর শরীরেও (তাওহিদুল) রক্ত মেখে যায়। চালক বাঁচার জন্য গাড়ি থেকে বের হলেও রাস্তায় পড়ে যান। তখন তিনি রক্তমাখা পাঞ্জাবি খুলে পালানোর চেষ্টা করেন। তবে স্থানীয় লোকজন তাঁকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ ল ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

তুমি কে, সে কে

প্রতিদিন যার মুক্তির জন্য যুদ্ধ

তার পিঠে চাপায়ে দিচ্ছ

                     ইতিহাসের পিরামিড

তাকে শোনাচ্ছ স্বাধীনতার গান!

তাহলে তুমি কে আর সে কে?

প্রতিদিন যার ঘামেই গোসল হয়

প্রতিদিনই যার রক্তাক্ত শ্রাবণ—

তাকেও শোনাবে তুমি অভ্যুত্থানের মহিমা!

তাহলে তুমি কে আর সে কে?

প্রতিদিন যে মরতে মরতে বেঁচে থাকে

তার ভাঙাচোরা ছোট্ট ঘরটিকে তুমি

                     শহীদের কবর বলে স্বীকৃতি দেবে না?

তাহলে তুমি কে আর সে কে?

সম্পর্কিত নিবন্ধ