তিন দিনের সরকারি সফরে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। স্থানীয় সময় আজ সোমবার (১১ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টা ৫০ মিনিটে তিনি দেশটিতে পৌঁছান।

আগামীকাল মঙ্গলবার সকালে পুত্রজায়া কমপ্লেক্সে একটি আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন অধ্যাপক ইউনূস। এরপর মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে ব্যক্তিগত ও প্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

এ বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন খাতে অগ্রগতি পর্যালোচনা ও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নেওয়ার পদক্ষেপ নির্ধারণ করা হবে।

এর আগে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম প্রধান উপদেষ্টাকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানাবেন। জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে গার্ড অব অনার পরিদর্শন করবেন অধ্যাপক ইউনূস।

ব্যক্তিগত ও প্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠকে মালয়েশিয়ায় নতুন বাংলাদেশি কর্মীদের নিয়োগ, আরও পেশাজীবী নিয়োগ, কর্মীদের সুবিধা ও অধিকার নিশ্চিতকরণের বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা হবে বলে জানানো হয়েছে।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম গতিশীল অর্থনীতি মালয়েশিয়া প্রধান উপদেষ্টাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছে। এর আগে প্রধান উপদেষ্টা ও তাঁর সফরসঙ্গীরা বাংলাদেশ বিমানের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে আজ বেলা দুইটায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রওনা হন।

কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রধান উপদেষ্টাকে বুংগা রায় ভিভিআইপি কমপ্লেক্সে মালয়েশিয়ার চিফ অব প্রোটোকল স্বাগত জানান। পরে মালয়েশিয়ার গৃহমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসিউশান বিন ইসমাইল তাঁকে গার্ড অব অনার প্রদান করেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউন স

এছাড়াও পড়ুন:

এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর

বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!

কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।

এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)

সম্পর্কিত নিবন্ধ