‘বিদায় দেওয়ার সময় গাড়ির ভেতর ঘুমানোর কথা বলেছিল’
Published: 12th, August 2025 GMT
রাজধানীর মৌচাকে ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পার্কিংয়ে থাকা একটি প্রাইভেটকারের ভেতর থেকে উদ্ধার হওয়া দুই মরদেহের পরিচয় মিলেছে। তারা নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার বাসিন্দা। তারা হাসপাতালটিতে গিয়েছিলেন এক রোগীকে আনতে। প্রাইভেটকারটির মালিক জোবায়ের আল মাহমুদ সৌরভ এ তথ্য জনান।
মারা যাওয়া ব্যক্তিরা হলেন- উপজেলার রামনারায়ণপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ গোমাতলি দৌলতার বাড়ির মৃত আব্দুল হাকিমের ছেলে মো.
আরো পড়ুন: মৌচাকে হাসপাতালের পার্কিংয়ে প্রাইভেটকারে ২ মরদেহ
আরো পড়ুন:
পিয়াইন নদীতে নিখোঁজ বিজিবি সদস্যের মরদেহ উদ্ধার
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় টিনশেড ঘর থেকে নারীর মরদেহ উদ্ধার
জাকির ও মিজান বন্ধু বলে জানান প্রাইভেটকারের মালিক জোবায়ের আল মাহমুদ সৌরভ। মোবাইলে জোবায়ের জানান, তিনি তার স্ত্রীর বড় ভাইকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছে দিতে গত শনিবার রাতে ঢাকায় যান। এ সময় গাড়িতে জাকিরের সঙ্গে তার বন্ধু মিজানও ওঠেন। স্ত্রীর বড় ভাইকে বিমানবন্দরে নামিয়ে দেওয়ার পর গত রবিবার ভোরে বিমানবন্দর থেকে তারা গাড়ি নিয়ে মালিবাগ এলাকায় পৌঁছান।
এরপর জাকির তাকে মালিবাগ থেকে নোয়াখালীগামী একটি বাসে তুলে দেন। তারা হাসপাতালে যান রোগী আনতে। রোগী নিয়ে তাদের নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলায় যাওয়ার কথা ছিল।
জোবায়ের আল মাহমুদ বলেন, “বিদায় দেওয়ার সময় জাকির বলেছিলেন, বেলা ১১টার দিকে রোগীকে ছাড়পত্র দেবে, ততক্ষণ তারা দুইজন গাড়িতেই ঘুমাবেন। আমি পৌনে ১১টার দিকে জাকিরকে ফোন দিয়েও পাইনি। পরে রাত ৮টা পর্যন্ত আরো কয়েকবার ফোনে কথা বলার চেষ্টা করেছি, তিনি কল ধরেননি।”
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) রামনারায়ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য মোবারক উল্লাহ বলেন, “মিজান আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তার কোনো শত্রু নেই। প্রায় ১০ বছর আগে তিনি মাটি ও বালুর ব্যবসা করতেন। অবিবাহিত ছিলেন। দুলাভাই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ায় ৩০টি ডাব নিয়ে মিজান প্রাইভেটকারে করে তাকে দেখতে গিয়েছিলেন। কীভাবে এই ঘটনা ঘটল, তা আমরা বুঝতে পারছি না।”
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, রবিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে গাড়িটি পার্কিংয়ে প্রবেশ করে। গেটে নিরাপত্তাকর্মীদের জিজ্ঞাসায় বলা হয়, গাড়িতে রোগী আছে। গাড়িটি বের না হওয়ায় গতকাল সোমবার নিরাপত্তাকর্মীরা গাড়ির কাছে গিয়ে ভেতরে দুইজনকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান। পরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে।
রমনা জোনের ডিসি মাসুদ আলম জানান, নিহতদের একজন জাকির, যিনি গাড়ির চালক ছিলেন। তিনি ড্রাইভারের সিটে মৃত অবস্থায় ছিলেন, আরেকজন মিজান তার পাশে ছিলেন। তারা একই এলাকার বাসিন্দা এবং এক স্বজনকে দেখতে হাসপাতালে এসেছিলেন।
তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে হত্যার আশঙ্কা খুব কম, তবে কোনো কিছু উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। সঠিক কারণ জানতে বিশেষজ্ঞ মতামতের অপেক্ষা করা হচ্ছে।
ডিসি মাসুদ আলম জানান, বেজমেন্টে সাফোকেশন ও প্রচণ্ড গরমের কারণে মরদেহে পচন ধরে। গাড়িটি টয়োটা ফিল্ডার-এক্স মডেলের, মালিক জোবায়ের আহমেদ সৌরভ। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
চাটখিল থানার ওসি মোহাম্মদ ফিরোজ আহমেদ চৌধুরী জানান, নিহত দুইজনের বাড়ি চাটখিল উপজেলায়। গাড়ির মালিক সৌরভের বাড়িও চাটখিল। আমরা তথ্যসহ সব বিবরণ রমনা থানায় পাঠানো হয়েছে, তারা আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে।
ঢাকা/সুজন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর মরদ হ উদ ধ র মরদ হ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ফ্লোটিলা বহরে ভেসে চলা একমাত্র জাহাজ ম্যারিনেট কোথায়
ফিলিস্তিনের গাজা অভিমুখে যাত্রা করা ত্রাণবাহী নৌবহর ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’-এর একটি মাত্র নৌযান এখনো আটক করতে পারেনি ইসরায়েলি বাহিনী। এই নৌযানটি হলো দ্য ম্যারিনেট।
পোল্যান্ডের পতাকাবাহী এই নৌযানে ছয়জন আরোহী রয়েছেন ।
ফ্লোটিলার লাইভ ট্র্যাকার অনুযায়ী, ম্যারিনেট আন্তর্জাতিক জলসীমায় ভেসে চলেছে। এর গতি ঘণ্টায় প্রায় ২.১৬ নট (ঘণ্টায় প্রায় ৪ কিলোমিটার) , গাজার আঞ্চলিক জলসীমা থেকে ম্যারিনেটের দূরত্ব প্রায় ১০০ কিলোমিটার।
বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওতে জাহাজটির ক্যাপ্টেন বলেন, ম্যারিনেটের ইঞ্জিনে সমস্যা হচ্ছিল। এটি এখন সারানো হয়েছে।
ফ্লোটিলা আয়োজকেরা বলছেন, ম্যারিনেট নৌযান এখনো স্টারলিঙ্কের মাধ্যমে সংযুক্ত। এটি যোগাযোগের আওতার মধ্যেই রয়েছে। লাইভস্ট্রিমও সক্রিয় আছে।
ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা জানিয়েছে, অন্য জাহাজগুলো আটক করলেও ম্যারিনেট এখনো ভেসে চলছে।
ম্যারিনেট ফিরে যাবে না বলেও ওই পোস্টে জানানো হয়েছে। পোস্টে বলা হয়েছে, ‘ম্যারিনেট শুধু একটি জাহাজ নয়। ম্যারিনেট হলো ভয়, অবরোধ ও সহিংসতার বিরুদ্ধে দৃঢ়তা।’
ফ্লোটিলা আয়োজকরা আরও লিখেছেন, ‘গাজা একা নয়।’ ‘ফিলিস্তিনকে কেউ ভুলে যায়নি। আমরা কোথাও যাচ্ছি না।’
ফ্লোটিলা বহরের প্রায় সব নৌযানে থাকা অধিকারকর্মীদের আটক করেছে ইসরায়েল। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সুইডিশ অধিকারকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ। ইসরায়েলের এমন পদক্ষেপকে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ উল্লেখ করে নিন্দা জানিয়েছে অনেক দেশ। বিভিন্ন দেশে বিক্ষোভও হয়েছে।
আরও পড়ুনগাজা অভিমুখী নৌবহরে ইসরায়েলি সেনাদের আক্রমণ, ধরে নেওয়া হলো অধিকারকর্মীদের৬ ঘণ্টা আগে