হৃদ্‌রোগ চিকিৎসায় ব্যবহৃত সব ধরনের করোনারি স্টেন্টের মূল্য কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এই সিদ্ধান্ত ১ অক্টোবর থেকে কার্যকর হবে।

আজ মঙ্গলবার সকালে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানায়।

সংবাদ সম্মেলনে অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আকতার হোসেন বলেন, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ৩ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি কোম্পানির ১১টি করোনারি স্টেন্টের মূল্য নির্ধারণ করে। এতে দেখা যাচ্ছে, কোনো ক্ষেত্রে মূল্য ৩ হাজার টাকা কমেছে, কোনোটির মূল্য ৮৮ হাজার টাকা কমেছে। তবে এই মূল্য এখনই কার্যকর হবে না। কারণ, আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের কাছে করোনারি স্টেন্ট মজুত আছে। ব্যবসায়ীরা মজুতকৃত করোনারি স্টেন্ট আগের দামে বিক্রির করার অনুমতি চেয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ৩১টি প্রতিষ্ঠান বিদেশ থেকে করোনারি স্টেন্ট আমদানি করে। সরকার যুক্তরাষ্ট্র থেকে আনা তিনটি কোম্পানির স্টেন্টের মূল্য কমিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে বাকি সব কোম্পানির স্টেন্টের মূল্যও খুব শিগগির কমানো হবে। আর নতুন মূল্য ১ অক্টোবর থেকে কার্যকর হবে।

দেশে বছরে ৪৫ থেকে ৫০ হাজার করোনারি স্টেন্টের দরকার হয় বলে জানান ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।

অধিদপ্তরের পরিচালক আকতার হোসেন বলেন, দেশের কোনো প্রতিষ্ঠান স্টেন্ট তৈরি করে না। কেউ তৈরি করতে চাইলে সহায়তা করবে অধিদপ্তর।

এক প্রশ্নের উত্তরে অধিদপ্তরের অন্য পরিচালক মোহাম্মদ নাঈম গোলদার বলেন, ভারতও যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে স্টেন্ট আমদানি করে। তা ছাড়া ভারতের আটটি কোম্পানি স্টেন্ট তৈরি করে। ভারতে ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা বেশি। তাই ভারতে স্টেন্টের মূল্য বাংলাদেশের চেয়ে অনেক কম।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন অধিদপ্তরের পরিচালক আসফার হোসেন ও মো.

শফিকুল ইসলাম।

আরও পড়ুনভারতের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে স্টেন্টের নতুন দাম০৪ আগস্ট ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক র যকর কর ন র

এছাড়াও পড়ুন:

এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর

বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!

কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।

এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)

সম্পর্কিত নিবন্ধ