মিটফোর্ডের চিকিৎসকেরা আমার ছেলের লাশ বুড়িগঙ্গায় ফেলে দিতে চেয়েছিলেন
Published: 12th, August 2025 GMT
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় শহীদ শেখ মেহেদী হাসান জুনায়েদের (মোস্তাকিম) মরদেহ বুড়িগঙ্গা নদীতে ফেলে দিতে চেয়েছিলেন মিটফোর্ড হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। আজ মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ জবানবন্দি ও আসামিপক্ষের জেরায় এ কথা বলেছেন শেখ মেহেদী হাসানের বাবা শেখ জামাল হাসান।
গণ-অভ্যুত্থানের সময় চানখাঁরপুল এলাকায় ছয়জনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আজ শেখ জামাল হাসানসহ দুজন সাক্ষী জবানবন্দি দেন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত তিনজন সাক্ষী জবানবন্দি দিলেন।
জবানবন্দিতে শেখ জামাল হাসান বলেন, ৫ আগস্ট সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটের দিকে ১৪ বছর বয়সী তাঁর একমাত্র ছেলে শেখ মেহেদী হাসান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে যোগ দিতে বেরিয়ে যায়। সেদিন বেলা ১টা ৪৫ মিনিটের দিকে তাঁর শ্যালক ফোন করে ছেলে গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে জানান।
গুলিবিদ্ধ মেহেদীকে তার বন্ধু সিয়ানসহ কয়েকজন মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যায় বলেও উল্লেখ করেন শেখ জামাল হাসান। জবানবন্দিতে তিনি বলেন, শেখ মেহেদী হাসানকে মিটফোর্ডে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা বলেন, মরদেহ নিয়ে যান। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ আছে লাশ হাসপাতালে রাখা যাবে না। তাড়াতাড়ি নিয়ে না গেলে মরদেহ বেওয়ারিশ হিসেবে আঞ্জুমানে দিয়ে দেব। বুড়িগঙ্গায় লাশ ফেলে দেওয়ার কথাও বলেন চিকিৎসকেরা।
ছেলের হত্যার জন্য শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান প্রমুখকে দায়ী করেন শেখ জামাল হাসান। তিনি বলেন, তাঁর ছেলেকে সাবেক কনস্টেবল মো.
জবানবন্দি দেওয়ার এক পর্যায়ে কাঁদতে থাকেন শেখ জামাল হাসান। তিনি বলেন, তাঁর এক মেয়ে আছে। আর একমাত্র ছেলেকে মেরে ফেলা হয়েছে। ছেলেকে হারিয়ে তিনি ও তাঁর স্ত্রী পাগলের মতো জীবন যাপন করছেন। তাঁর সব শূন্য করে দেওয়া হয়েছে। তিনি অপরাধীদের শাস্তি চান।
এই মামলায় আটজন আসামি। তাঁদের মধ্যে সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রমনা অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহ্ আলম মো. আখতারুল ইসলাম ও রমনা অঞ্চলের সাবেক সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ইমরুল পলাতক। আর গ্রেপ্তার আছেন শাহবাগ থানার সাবেক পরিদর্শক মো. আরশাদ হোসেন, সাবেক কনস্টেবল মো. সুজন হোসেন, ইমাজ হোসেন ও মো. নাসিরুল ইসলাম। আজ তাঁদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চ ক ৎসক র
এছাড়াও পড়ুন:
মোহাম্মদপুরে বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার ২৯
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কয়েকটি অপরাধপ্রবণ এলাকায় বুধবার দিনভর বিশেষ অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত অভিযোগে ২৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে তিনটি ছুরি, দুটি ধারালো চাকু, দুটি লোহার রড, একটি সাইকেল ও ৩০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করা হয়।
বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে নিয়মিত মামলা, মাদক মামলা, পরোয়ানাভুক্ত আসামি ও বিভিন্ন অপরাধে জড়িত অপরাধী রয়েছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন হীরা (১৯), রফিক (২১), আবদুর রহমান (৩৯), নাবিদ হাসান ওরফে চয়ন (২৬), খোকন (৩১), মনসুর (৩৫), জুয়েল (৩২), সানজু (২২), মিলন (৪২), শাওন (৩৬), নোয়াজ শরীফ (২৮), সেলিম (৩৪), আসাদুজ্জামান ওরফে ইমন (২৩), আনোয়ার হোসেন (৩৬), সজল (৩০), বরকত গাজী (২৮), জুয়েল (৩৮), আরমান (৩০), বাদল (৩৮), কোরবান (২৮), নয়ন (২৭), মাসরুফ (২৩), আল আমিন (২৭), রাকিব (১৮), মিলন (২৫), ওয়াজিদ (৩৬), এরশাদ (২৫), ছালাম ওরফে সামাদ (৩৭) ও দিলসার (৩০)।