রোনালদোর বাগ্দানের আংটির দাম কত
Published: 13th, August 2025 GMT
দীর্ঘদিনের প্রেমিকা জর্জিনা রদ্রিগেজকে গত পরশু বিয়ের প্রস্তাব দেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। ইনস্টাগ্রামে জর্জিনা একটি ছবি পোস্ট করে বিষয়টি সবাইকে জানান। ছবিতে দেখা যায়, নিজের আংটি পরা হাতটি রোনালদোর হাতের ওপর রেখেছেন জর্জিনা। আংটিটি ইতিমধ্যেই সবার নজর কেড়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা চলছে, এই আংটির দাম কত হতে পারে?
বিশ্বের অন্যতম বড় ফ্যাশন ও লাইফস্টাইল প্রকাশনা ‘এল’ এই প্রশ্নের উত্তর জেনেছে। মূল উৎপত্তিস্থল ফ্রান্সে হলেও তাদের ৪৫টি আন্তর্জাতিক সংস্করণের মধ্যে ‘এল’ অস্ট্রেলিয়া সংস্করণ এক গয়নার বিশেষজ্ঞের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলেছে। সেই বিশেষজ্ঞের মতে, জর্জিনার হাতে শোভা পাওয়া এই আংটির দাম ১ কোটি ডলারের (প্রায় ১২১ কোটি ৮২ লাখ টাকা) বেশি হতে পারে।
জর্জিনার পোস্ট করা সেই ছবির ক্যাপশনেই পরিষ্কার, রোনালদোর বিয়ের প্রস্তাবে তাঁর সম্মতি আছে, ‘হ্যাঁ, আমি রাজি। এই জীবনে এবং আমার অন্য সব জন্মেও।’ অর্থাৎ পরিচয়ের ৯ বছর পর তাঁদের প্রেমের সম্পর্ক এখন চূড়ান্ত পরিণতি পাওয়ার অপেক্ষায়।
আরও পড়ুনঅবশেষে জর্জিনাকে বিয়ের প্রস্তাব রোনালদোর ২১ ঘণ্টা আগেআংটি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতঝলমলে আংটিটি গয়নার বিশেষজ্ঞরা বিশ্লেষণের চেষ্টা করেছেন। এক বিশেষজ্ঞের মতে, আংটির মাঝে ওভাল আকৃতি করে কাটা হীরকখণ্ডটির অন্তত ২২ ক্যারেটের বেশি। আবার কারও মতে, ২৫ থেকে ৩০ ক্যারেট হতে পারে, তাহলে শুধু হীরকখণ্ডের দামই হবে আনুমানিক ২০ থেকে ৪০ লাখ মার্কিন ডলার। এই দাম নির্ভর করছে হীরকখণ্ডটির গুণগত মান, কাটিং ও রঙের ওপর।
নিউইয়র্ক পোস্টের গসিপ কলাম ‘পেজ সিক্স’ জানিয়েছে, আংটির মাঝের পাথরটি যদি ৩০ ক্যারেটের নিখুঁত ডি-কালারের হয় এবং তার আশপাশে বড় আকারের হীরা ও প্লাটিনাম সেটিং থাকে, তাহলে এর দাম ২০ থেকে ৫০ লাখ ডলার পর্যন্ত হতে পারে।
অস্ট্রেলিয়ার গয়নার ব্র্যান্ড কুশলা হুইটিংয়ের জেনারেল ম্যানেজার আন্না হুইটিং ‘এল অস্ট্রেলিয়া’কে এ বিষয়ে বলেন, ‘ওভাল-কাট করা মাঝের হীরকখণ্ড ২৫ ক্যারেটের বেশি অনুমান করছি। এর লম্বাটে আকার পাথর আঙুলে দেয় দারুণ এক শৈল্পিক ছোঁয়া।’
হুইটিং ব্যাখ্যা করেন, ‘মূল পাথরের দুই পাশে রয়েছে দুটি ছোট হীরকখণ্ড, প্রতিটি প্রায় এক ক্যারেট, যা মিলিয়ে তৈরি হয়েছে একটি ভারসাম্যপূর্ণ থ্রি-স্টোন ডিজাইন। আংটিটি প্লাটিনাম বা হোয়াইট গোল্ড দিয়ে বানানো, যেখানে ডাবল-ক্ল সেটিং ব্যবহার করা হয়েছে, যা মাঝের পাথরটিকে উঁচুতে ধরে রাখে, ফলে আলো সেখানে সহজে প্রবেশ করে উজ্জ্বলতা বাড়ায় ও নিরাপদ রাখে।’
আর দাম? হুইটিং বলেন, ‘পাথরের আকার, গুণমান ও কারিগরি বিবেচনায়, আগের অনুমানের চেয়েও এর দাম বেশি হতে পারে। আমার মতে, এটি কয়েক কোটি মার্কিন ডলার হবে।’
গয়নার আরেক বিশেষজ্ঞ মনিকা রুগেরিনো বলেন, ‘আমি মনে করি মাঝের হীরকখণ্ডটি ১৫ ক্যারেটের বেশি, পাশে রয়েছে দুটি ছোট ওভাল বা পেয়ার-শেপড পাথর। বর্তমানে ওভাল, পেয়ার ও মারকুইজ কাটের মতো ফ্যান্সি কাট জনপ্রিয়তা পাচ্ছে, আর ফ্যাশন কিছুটা পুরোনো যুগের নকশায় ফিরে যাচ্ছে। এখানে আমি বুলগারির (ইতালিয়ান ফ্যাশন হাউস) ‘গ্রিফি’ ডিজাইনের ছোঁয়া দেখি, যা একসময় এলিজাবেথ টেলর ও সোফিয়া লরেন পরিধান করতেন।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কোটিপতি হলেও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করেন তিনি
পর্যাপ্ত অর্থ সঞ্চয় করতে পারলেই আমাদের অনেকে কায়িক পরিশ্রম ছেড়ে দেন। আরাম-আয়েশে জীবন কাটান। কিন্তু সবাই তা করেন না। এমন একজন জাপানের কোইচি মাতসুবারা। ৫৬ বছর বয়সী এই জাপানি নাগরিকের বার্ষিক আয় প্রায় ৩ কোটি ইয়েন (প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা) হওয়া সত্ত্বেও তিনি এখনো নিয়মিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করেন।
মাতসুবারা সপ্তাহে তিন দিন, প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে কাজ করেন। তিনি সরকারি পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। এ কাজের অংশ হিসেবে তাঁকে ছোটখাটো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করতে হয়।
এ কাজ থেকে মাতসুবারা মাসে ১ লাখ ইয়েন (প্রায় ৮২ হাজার ৬৪ টাকা) আয় করেন, যা টোকিওর গড় বেতনের তুলনায় অনেক কম। তারপরও তিনি এ কাজ করেন। কারণ, তিনি এটাকে শারীরিক সক্রিয়তা ও মানসিক প্রশান্তির উপায় হিসেবে দেখেন।
মাতসুবারা ছোটবেলা থেকেই সঞ্চয়ী ছিলেন। মাধ্যমিকের পর তিনি একটি কারখানায় মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন (প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা) বেতনে কাজ শুরু করেন। খরচ বাঁচিয়ে কয়েক বছরে প্রায় ৩০ লাখ ইয়েন (২৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা) সঞ্চয় করে তিনি প্রথম স্টুডিও ফ্ল্যাট কিনেছিলেন।
পরে বাড়ি কেনার ঋণ আগেভাগে পরিশোধ করে ধীরে ধীরে আরও ফ্ল্যাট কেনেন এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেন মাতসুবারা। এখন টোকিও ও এর শহরতলিতে তাঁর সাতটি ফ্ল্যাট রয়েছে, যার সবই ভাড়া দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেছেন।
ধনবান হলেও মাতসুবারা সাদাসিধে জীবন যাপন করেন। এখনো তিনি সস্তা ফ্ল্যাটে থাকেন, নিজের খাবার নিজে বানান, নতুন জামাকাপড় কেনেন না, সাধারণ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন এবং প্রধানত সাইকেলে চলাচল করেন। তাঁর জীবনদর্শন—‘প্রতিদিন কিছু না কিছু করার আশা করি, সুস্থ থাকতে চাই এবং নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে চাই।’
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে মাতসুবারাকে ‘অদৃশ্য কোটিপতি’ বলে উল্লেখ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর গল্প ছড়িয়ে পড়েছে। জাপানে ধনীদের এমন সাধারণ জীবনধারা অস্বাভাবিক নয়। দেশটিতে সাদাসিধে জীবনযাপন অনেকের মধ্যে দেখা যায়।