বিধ্বস্ত অঞ্চলজুড়ে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী রোগ ছড়িয়ে পড়ায় গাজা একটি নতুন হুমকির মুখোমুখি হচ্ছে। নতুন একটি গবেষণা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বুধবার দ্য গার্ডিয়ান এ তথ্য জানিয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ২২ মাসের যুদ্ধে চিকিৎসা সরবরাহের অভাব রয়েছে এবং হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছে, অন্যদিকে অপুষ্টির কারণে অনেকে দুর্বল হয়ে পড়েছে, তাই ওষুধ প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়ার উচ্চ মাত্রার অর্থ দীর্ঘ এবং আরো গুরুতর অসুস্থতা, সংক্রামক রোগের দ্রুত সংক্রমণ ও আরো মৃত্যুর কারণ হবে।

মঙ্গলবার ল্যানসেট সাময়িকীতে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে প্রকাশিত ফলাফলগুলো ২০২৩ সালের অক্টোবরে সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় ওষুধপ্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়ার প্রাদুর্ভাবের ইঙ্গিত দিয়েছে।

মেডিসিনস স্যান্স ফ্রন্টিয়ার্সের মহামারীবিদ্যা উপদেষ্টা এবং গাজা ও মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে ওষুধ-প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া নিয়ে গবেষণার সহ-লেখক ক্রিস্টেল মুসালি বলেছেন, “এর অর্থ হবে দীর্ঘস্থায়ী এবং আরো গুরুতর অসুস্থতা ও অন্যদের মধ্যে সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকি। এর অর্থ হল সাধারণ সংক্রমণ থেকে মৃত্যুর ঝুঁকি বৃদ্ধি। এর অর্থ হল আরো অঙ্গচ্ছেদ। এটি একটি ভয়াবহ চিত্র।”

গবেষণাটি আল-আহলি হাসপাতালের এক হাজার ৩০০ এর বেশি নমুনার উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। সেখানে গত বছরের ১০ মাস ধরে রোগীদের কাছ থেকে নেওয়া নমুনার দুই-তৃতীয়াংশে বহু ওষুধ প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি দেখা গেছে।

গবেষণার অন্যতম লেখক বিলাল ইরফান ফলাফলগুলোকে ‘বিশেষভাবে উদ্বেগজনক’ বলে বর্ণনা করেছেন।

হার্ভার্ডের ব্রিগহাম ও নারী হাসপাতাল এবং মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা পরিচালনাকারী জৈব নীতিবিদ ইরফান বলেন, “প্রায় সব ল্যাবরেটরি ধ্বংস এবং বিপুল সংখ্যক চিকিৎসা কর্মী নিহত হওয়ার কারণে আমরা প্রকৃত মাত্রাও জানি না, তাই গাজায় কী ঘটছে সে সম্পর্কে একটি ছোট অন্তর্দৃষ্টি পাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

২০০৭ সালে হামাস যখন নিয়ন্ত্রণ দখল করে, তখন থেকে বারবার সংঘাত এবং ইসরায়েলি অবরোধের ফলে গাজা কয়েক দশক ধরে উচ্চ মাত্রার বহু ওষুধ প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়ার শিকার হচ্ছে।

কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমান প্রেক্ষাপট নজিরবিহীন। গাজার স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা কেবল ধ্বংস হয়ে যায়নি, স্যানিটেশন ব্যবস্থাও ধ্বংস হয়ে গেছে, আবর্জনা ও কঠিন বর্জ্য নিষ্কাশন প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে এবং ২৩ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে ক্ষুধা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে, যার ফলে আরো অনেকে সংক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছে।
 

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ক রমণ র অর থ

এছাড়াও পড়ুন:

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বর-সংলগ্ন মিরপুর সড়কে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

আজ সোমবার বিকেলে সাড়ে তিনটার দিকে এই চিত্র দেখা যায়। এই ঘটনায় উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

দুপুরের দিকে দুটি এক্সকাভেটর নিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভাঙতে গিয়েছিলেন বিক্ষোভকারীরা। পরে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় সেনাবাহিনী ও পুলিশ। এরপর বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে দফায় দফায় ৩২ নম্বর সড়কে যাওয়ার চেষ্টা করে আসছেন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর সদস্যসংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি ঘটনাস্থলে আছেন র‍্যাব ও বিজিবির সদস্যরা। তাঁরা শক্ত অবস্থানে আছেন।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আজ দুপুরের দিকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের সামনের মিরপুর সড়কে দুটি এক্সকাভেটর দেখা যায়।

পরে বিক্ষোভকারীরা ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে এক্সকাভেটর ঢোকানোর চেষ্টা করেন। তাঁদের বাধা দেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী লাঠিপেটা করে।

কিছুটা ছত্রভঙ্গ হয়ে বিক্ষোভকারীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ করে ইটপাটকেল ছোড়ে। এ সময় পুলিশের অন্তত এক সদস্য আহত হন।

আরও পড়ুনএক্সকাভেটর নিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে যাওয়া বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ৪ ঘণ্টা আগে

পরে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড মেরে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গের চেষ্টা করে। এ সময় দফায় দফায় সাউন্ড গ্রেনেডের বিকট শব্দ শোনা যায়। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।

বেলা পৌনে ২টার দিকে দুই ভাগে ভাগ হয়ে বিক্ষোভকারীরা আবার ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে তাঁদের আবার ছত্রভঙ্গ করে দেয় সেনাবাহিনী ও পুলিশ।

বিক্ষোভকারীদের ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে যাওয়ার জন্য দফায় দফায় চেষ্টা এবং তাঁদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুরো এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। নিউমার্কেট থেকে মিরপুরমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

আরও পড়ুনরায়কে কেন্দ্র করে ঢাকায় নিরাপত্তা জোরদার, ১৫ হাজার পুলিশ মোতায়েন৫ ঘণ্টা আগে

বিক্ষোভকারীরা পুরোপুরি সরে না যাওয়ায়, বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে দফায় দফায় ৩২ নম্বর সড়কে আসার চেষ্টা করায় এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসংখ্যা বাড়ানো হয়। এখন এলাকায় সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‍্যাব ও বিজিবির বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন রয়েছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ধানমন্ডি অঞ্চলের অতিরিক্ত উপকমিশনার জিসানুল হক দুপুরে প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘আমরা কোনোমতে কাউকে আইন হাতে তুলে নিতে দেব না।’

গত ফেব্রুয়ারিতে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িটির অর্ধেকের বেশি অংশ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ৩২ নম্বরের বাড়িটি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।

আরও পড়ুনআড়াই ঘণ্টা ধরে পড়া হলো রায়, এরপর এল মৃত্যুদণ্ডের আদেশ২ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ