Prothomalo:
2025-08-13@10:33:18 GMT

পানামা রোজ ও কনকসুধার কথা 

Published: 13th, August 2025 GMT

চলতি বছরের ১২ জুলাই দুপুরে গিয়েছিলাম পুষ্প, বৃক্ষ, লতা, গুল্মে সমৃদ্ধ ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেনে। দিনটি ছিল শনিবার। গার্ডেন খোলা সকাল সাড়ে ১০টা থেকে। আষাঢ় মাস হলেও বৃষ্টির দেখা নেই। খুব গরম পড়েছিল সেই দিন। তারপরও সরকারি ছুটির দিন বলে এই দিনেই যাওয়া। উদ্ভিদ ও ফুল দেখার ইচ্ছাটা তো ছিলই। যদি নতুন কোনো ফুল পাই দারুণ হবে। সেদিনই প্রথমবার দেখা পেয়েছিলাম পানামা রোজ ও কনকসুধা ফুলের। এর আগে এই দুই গাছে ফুলের দেখা পাইনি।

নজরকাড়া সুগন্ধির পানামা রোজ

বোটানিক্যাল গার্ডেনের গেট দিয়ে সোজা প্রবেশ করে নগ্নবীজী উদ্ভিদের বাগানকে বাঁ পাশে রেখে এগিয়ে গেলাম। তারপর পুকুর পেরিয়ে সামনে যেতেই ছোট একটা গুল্মজাতীয় গাছ চোখে পড়ল। দেখলাম তাতে থোকায় থোকায় নজরকাড়া সুন্দর ফুল ফুটে আছে। হঠাৎ দেখলে রঙ্গন এবং পুটুস বা ল্যান্টানার কথা মনে হয়। এটিই পানামা রোজ। এই উদ্ভিদের বৈজ্ঞানিক নাম Rondeletia odorata, এটি Rubiaceae পরিবারের গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ। কফি আর রঙ্গনও কিন্তু একই পরিবারের। এই গুল্ম ইংরেজিতে পানামা রোজ, ক্লিভল্যান্ড সানরাইজ ইত্যাদি নামে পরিচিত। এই গুল্ম খরাসহিষ্ণু। এর আদি নিবাস পানামা ও কিউবা। এই জন্যই এই ফুলের নাম পানামা রোজ হয়েছে।

পানামা রোজ সাধারণত এক থেকে দেড় মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। পাতা আয়তাকার, দৈর্ঘ্যে ৪ থেকে ৬ সেন্টিমিটার হয়। পাতার ওপরের পিঠ রোমযুক্ত, কিনারা ঢেউখেলানো। পাতা পুরু, চামড়ার মতো। পত্রবিন্যাস বিপরীত। সাত থেকে আট মাস পর্যন্ত ফুল ফোটে। পাপড়ির আগা ভোঁতা ও মাঝখানে একটি হলুদ রঙের ফোঁটা থাকে।

ফুল ফোটার সময় গ্রীষ্ম থেকে শরৎকাল। ফুল সুগন্ধি, লালচে কমলা, হলুদ গলাসহ নলাকার। একেকটি থোকায় ১৫-২০টি ফুল থাকে। দিনের বেলায় ফুলের একটা হালকা ঘ্রাণ থাকে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে এই ঘ্রাণ আরও শক্তিশালী হয়। পানামা রোজ ফুলে মধু থাকে, যা প্রজাপতি ও মৌমাছিকে আকর্ষণ করে। ফুল ঝরে গেলেও তাদের বৃত্যংশগুলো থেকে যায়। বৃত্যংশগুলোকে দেখলে মনে হয় যেন এরাও ফুল। এর ফল ছোট, শুষ্ক। ফলে অনেক বীজ থাকে। বীজগুলো সাদা এবং নরম রোমে আবৃত থাকে। ফ্রান্সের মঁপেলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাকৃতিক ইতিহাসবিদ, চিকিৎসক এবং উদ্ভিদবিদ্যার প্রশিক্ষক গুইলাম রন্ডেলেটের সম্মানে এই উদ্ভিদের গণের নাম Rondeletia রাখা হয়েছে।

চিরসবুজ এই গাছ প্রচণ্ড গরমেও ঝলমলে হয়ে বাঁচে। আবার একটানা ভারী বৃষ্টির মধ্যেও সজীব থাকে। উদ্ভিদের বংশবৃদ্ধি হয় দাবা কলমে। 

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গার্ডেনে কনকসুধা.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

পানামা রোজ ও কনকসুধার কথা 

চলতি বছরের ১২ জুলাই দুপুরে গিয়েছিলাম পুষ্প, বৃক্ষ, লতা, গুল্মে সমৃদ্ধ ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেনে। দিনটি ছিল শনিবার। গার্ডেন খোলা সকাল সাড়ে ১০টা থেকে। আষাঢ় মাস হলেও বৃষ্টির দেখা নেই। খুব গরম পড়েছিল সেই দিন। তারপরও সরকারি ছুটির দিন বলে এই দিনেই যাওয়া। উদ্ভিদ ও ফুল দেখার ইচ্ছাটা তো ছিলই। যদি নতুন কোনো ফুল পাই দারুণ হবে। সেদিনই প্রথমবার দেখা পেয়েছিলাম পানামা রোজ ও কনকসুধা ফুলের। এর আগে এই দুই গাছে ফুলের দেখা পাইনি।

নজরকাড়া সুগন্ধির পানামা রোজ

বোটানিক্যাল গার্ডেনের গেট দিয়ে সোজা প্রবেশ করে নগ্নবীজী উদ্ভিদের বাগানকে বাঁ পাশে রেখে এগিয়ে গেলাম। তারপর পুকুর পেরিয়ে সামনে যেতেই ছোট একটা গুল্মজাতীয় গাছ চোখে পড়ল। দেখলাম তাতে থোকায় থোকায় নজরকাড়া সুন্দর ফুল ফুটে আছে। হঠাৎ দেখলে রঙ্গন এবং পুটুস বা ল্যান্টানার কথা মনে হয়। এটিই পানামা রোজ। এই উদ্ভিদের বৈজ্ঞানিক নাম Rondeletia odorata, এটি Rubiaceae পরিবারের গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ। কফি আর রঙ্গনও কিন্তু একই পরিবারের। এই গুল্ম ইংরেজিতে পানামা রোজ, ক্লিভল্যান্ড সানরাইজ ইত্যাদি নামে পরিচিত। এই গুল্ম খরাসহিষ্ণু। এর আদি নিবাস পানামা ও কিউবা। এই জন্যই এই ফুলের নাম পানামা রোজ হয়েছে।

পানামা রোজ সাধারণত এক থেকে দেড় মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। পাতা আয়তাকার, দৈর্ঘ্যে ৪ থেকে ৬ সেন্টিমিটার হয়। পাতার ওপরের পিঠ রোমযুক্ত, কিনারা ঢেউখেলানো। পাতা পুরু, চামড়ার মতো। পত্রবিন্যাস বিপরীত। সাত থেকে আট মাস পর্যন্ত ফুল ফোটে। পাপড়ির আগা ভোঁতা ও মাঝখানে একটি হলুদ রঙের ফোঁটা থাকে।

ফুল ফোটার সময় গ্রীষ্ম থেকে শরৎকাল। ফুল সুগন্ধি, লালচে কমলা, হলুদ গলাসহ নলাকার। একেকটি থোকায় ১৫-২০টি ফুল থাকে। দিনের বেলায় ফুলের একটা হালকা ঘ্রাণ থাকে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে এই ঘ্রাণ আরও শক্তিশালী হয়। পানামা রোজ ফুলে মধু থাকে, যা প্রজাপতি ও মৌমাছিকে আকর্ষণ করে। ফুল ঝরে গেলেও তাদের বৃত্যংশগুলো থেকে যায়। বৃত্যংশগুলোকে দেখলে মনে হয় যেন এরাও ফুল। এর ফল ছোট, শুষ্ক। ফলে অনেক বীজ থাকে। বীজগুলো সাদা এবং নরম রোমে আবৃত থাকে। ফ্রান্সের মঁপেলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাকৃতিক ইতিহাসবিদ, চিকিৎসক এবং উদ্ভিদবিদ্যার প্রশিক্ষক গুইলাম রন্ডেলেটের সম্মানে এই উদ্ভিদের গণের নাম Rondeletia রাখা হয়েছে।

চিরসবুজ এই গাছ প্রচণ্ড গরমেও ঝলমলে হয়ে বাঁচে। আবার একটানা ভারী বৃষ্টির মধ্যেও সজীব থাকে। উদ্ভিদের বংশবৃদ্ধি হয় দাবা কলমে। 

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গার্ডেনে কনকসুধা

সম্পর্কিত নিবন্ধ