শ্রীদেবী মানেই নস্টালজিয়া ব্যাপার। ভারতের সীমানা ছাড়িয়ে তা বাংলাদেশের দর্শকদের কাছেও তাই। ১৯৬৩ সালের ১৩ আগস্ট ভারতের তামিলনাড়ুতে জন্মগ্রহণ করেন শ্রীদেবী।
জানিয়ে রাখা ভালো, শ্রীদেবীর মায়ের নাম রাজেশ্বরী ইয়াংগার ও বাবার নাম আয়াপ্পাঁ ইয়াংগার। শ্রীদেবীর বাবা পেশায় ছিলেন আইনজীবী। ননদের ছেলে মোহিত মারওয়ারের বিয়েতে অংশ নিতে পরিবারসহ দুবাই গিয়ে মারা যান শ্রীদেবী। চলুন নিই, শ্রীদেবীর অজানা পাঁচ অধ্যায়—
এক.
হিন্দি সিনেমার নায়িকা হিসেবে শ্রীদেবীকে প্রথম দেখা যায় ‘সোলওয়া সাওন’ সিনেমায়। কিন্তু মুক্তির পর এটি ফ্লপ করে। তার হিন্দি উচ্চারণ নিয়েও কথা ওঠেছিল। অবশ্য শুরুটা মাত্র চার বছর বয়সে, তখন থেকে ক্যামেরার সামনেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য শ্রীদেবী। সত্তরের দশকের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত শিশুশিল্পী হিসেবে পরপর সিনেমায় অভিনয় করেন।
আরো পড়ুন:
রজনীকান্তের ‘কুলি’: এক পয়সাও পারিশ্রমিক নেননি আমির!
‘দেবদাস’ অভিনেত্রী নাজিমা মারা গেছেন
দুই. ১৯৮৯ সালে মুক্তি পায় শ্রীদেবী অভিনীত জনপ্রিয় সিনেমা ‘চালবাজ’। ১০৩ ডিগ্রি জ্বর নিয়ে এ সিনেমার ‘না জানে কাহা সে আয়ি হ্যায়’ গানের শুটিং করেন তিনি।
তিন. অভিনয়ের পাশাপাশি নিজের কয়েকটি সিনেমায় প্লেব্যাক করেছেন শ্রীদেবী। ‘সাদমা’ (১৯৮৩), ‘চাঁদনি’ (১৯৮৯) ও ‘গারাজনা’ (১৯৯১) সিনেমার গানে কণ্ঠ দেন শ্রীদেবী।
চার. আশির দশকে নায়ক মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে গভীর প্রেম ছিল শ্রীদেবীর। কথিত আছে, তারা মন্দিরে গিয়ে গোপনে বিয়েও করেছিলেন। তবে তাদের সেই সম্পর্ক শেষ পর্যন্ত টেকেনি।
পাঁচ. হলিউডের প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক স্টিভেন স্পিলবার্গের জনপ্রিয় ‘জুরাসিক পার্ক’ (১৯৯৩) সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়েছিলেন শ্রীদেবী। কিন্তু বলিউডের কয়েকটি সিনেমার কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকার কারণে ইংরেজি ভাষার সিনেমাটিতে আর অভিনয় করা হয়নি তার।
ঢাকা/শান্ত
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র
এছাড়াও পড়ুন:
এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর
বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!
কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।
চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।
এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)