১৯ শতকের আধুনিক জীবন যাপনের গুরুত্বপূর্ণ অনুসঙ্গ হয়ে উঠেছিলো স্যুটকেস। আজকের দিনে যেমন— কোথাও বেড়াতে যাওয়ার সঙ্গী হয় ট্রলি ব্যাগ। সে সময় সঙ্গী হতো স্যুটকেস। বর্তমানে ট্রলি ব্যাগে কফির কাপ রাখার জায়গা থেকে শুরু করে মোবাইল চার্জিংয়ের ব্যবস্থাও থাকে। এতোটা সুযোগ সুবিধা আবার স্যুটকেসে ছিলো না। 

এখনও অনেক বাড়িতে পুরনো স্যুটকেস রয়ে গেছে। শক্ত কভারের স্যুটকেসে থাকত তালাচাবি দেওয়ার ব্যবস্থা। এতে সহজেই  নিজের  জিনিস পত্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যেত।  কোনো কোনো স্যুটকেসের সঙ্গেই তালা থাকত।  

১৯ শতকের দিকে কোথায় ঘুরবে বা বেড়াতে গেলে সাধারণত ফর্মাল বা আনুষ্ঠানিক পোশাক পরার চল ছিলো। সে সব পোশাক এমন যত্নে রাখতে হতো, যাতে কুঁচকে না যায়। লোকসমাজে কুঁচকানো পোশাক পরাকে মানসম্মত উপায় মনে করা হতো না। পোশাক যত্ন সহকারে সংরক্ষণ ও বহন করার জন্য জনপ্রিয় হয়ে ওঠে ট্রাঙ্কের মতো আয়তাকার স্যুটকেস। মূলত তরুণেরাই এই অনুসঙ্গটিকে জনপ্রিয় করে তুলেছিলো। 

আরো পড়ুন:

ভারতের যে গ্রামের পুরুষরা দুই বিয়ে করেন

আধা ঘণ্টার বেশি মোবাইল দেখার সুযোগ নেই, ক্ষুব্ধ সন্ন্যাসীরা

ঢাকা/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স য টক স

এছাড়াও পড়ুন:

এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর

বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!

কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।

এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)

সম্পর্কিত নিবন্ধ